সিদ্ধিরগঞ্জ মিজমিজি পাইনাদী কবরস্থান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদকের উপর হামলা চালিয়ে মারধর করেছে ওই মসজিদ কমিটির সভাপতি ও থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব মজিবুর রহমানের ছেলে মাহফুজুর রহমান পাপ্পু, মাহবুব, মাহমুদ ভাতিজা জাহাঙ্গীর, বাদল মেম্বার, নাতি মুন্না ও টাইগার ফারুকের পালিত সন্ত্রাসী বাহিনীরা। এ সময় মুজিবুর রহমান মসজিদের ভেতরেই উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার (৮ জানুয়ারী) জুম্মা নামাজ চলাকালীন সময়ে মসজিদের ভিতরেই এ ঘটনাটি ঘটে।
ওই সময় মসজিদের ভিতর মুসল্লিদের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। তখন মুসল্লিদের অনেকেই আত্মরক্ষা করতে দৌড়ে মসজিদ থেকে বের হয়ে যান। তবে মসজিদের ইমাম অত্যন্ত দক্ষতার সহিত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ ঘটনায় মুসল্লিরাসহ এলাকাবাসী মসজিদের ইমামকে সাধুবাদ জানালেও ধিক্কার জানান থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমান ও তার সব ছেলেদের। এবং সন্ত্রাসী টাইগার ফারুকের সন্ত্রাসী কর্মকার্ন্ড মসজিদের ভিতরেও চলে আসায় এ ঘটনার প্রকৃত বিচার দাবী করে এলাকাবাসী।
মুসল্লিরা জানান, খুতবার আগে মসজিদের উন্নয়ণ কর্মকান্ড নিয়ে বক্তব্য রাখেন মসজিদ কমিটির সভাপতি আলহাজ¦ মজিবুর রহমান। এসময় তিনি মসজিদের উন্নয়ণ নিয়ে কথা বলার একপর্যায়ে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মফিজ হোসেন (মজু) সভাপতির বক্তব্য শেষে বক্তব্য দিবেন বলে জানান।
এসময় মসজিদের পিছনের কাতারে থাকা সভাপতির ছেলে পাপ্পু সাধারণ সম্পাদক মজুকে হুমকি দিয়ে বলে এখানে তোর কোন কথা চলবে না। এ কথা বলেই দৌড়ে এসে তাকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে মজিবুর রহমানের অপর দুই ছেলে মাহবুব, মাহমুদ ভাতিজা জাহাঙ্গীর, বাদল মেম্বার, নাতি মুন্না ও টাইগার ফারুকের সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যরাও যোগ দিয়ে মজুকে মারধর করে।
বিষয়টি অত্যন্ত বিচক্ষনতার সহিত মসজিদের ইমাম নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ভুক্তভোগী ও হামলাকারীদের প্রতি অনুরোধ করেন যেন এটি নিয়ে মসজিদের বাইরে গিয়ে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটায়।
এ বিষয়ে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মফিজ হোসেন মজু বলেন, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি মজিবুর রহমান পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে তার ছেলে, ভাতিজা ও মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ে আমার উপরে হামলা চালায়। মসজিদ কমপ্লেক্সে একটি জেনারেটর ক্রয়ের জন্য মুসল্লিদের কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা তোলা হয়।
কিন্তু মসজিদ কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান অনুমতি না দেয়ায় কেনা সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া আরো সভাপতি অনুমতি না দেয়ার কারণে আরো কয়েকটি উন্নয়ণ মূলক কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। অথচ বার বার উনাকে জানানোর পরেও তিনি মুসল্লিদের বলেন, এসব বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। এই বিষয়গুলো নিয়ে মুসল্লিদের সাথে বিভিন্ন সময় কমিটির লোকজনদের ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হচ্ছে।
আমি প্রকৃত ঘটনাটি সভাপতির বক্তব্যের পর বলতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমাকে কথা বলতে সুযোগ না দিয়ে উল্টো মসজিদের ভিতরেই হামলা চালিয়ে মজিবুর রহমানের তিন ছেলে, ভাতিজা ও মাদক ব্যবসায়ীরা আমাকে মারধর করে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মসজিদ কমিটির সভাপতি মজিবুর রহমান মসজিদের ভিতরে মারামারির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমাকে মজু ও তার পরিবারের লোকজন চোর বলায় এ বিষয়টি আমি মসজিদে উপস্থাপন করলে এই অপ্রীতিকর ঘটনাটি ঘটে। মজু তার লোকজন নিয়ে এ হামলার ঘটনাটি ঘটায়।
এ বিষয়ে আইনগত কোন ব্যবস্থা নিবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাতে থানায় যাবেন। আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
এ দিকে একাধিক সূত্র জানায়, ২০১৫ সালের মে মাসে মসজিদ কমপ্লেক্স পরিচালনার ত্রি-বার্ষিক কমিটি গঠন করার ৫ বছর অতিবাহিত হলেও রহস্যজনক কারণে এ কমিটি পূর্নগঠিত হয়নি।
থানা আওয়ামীলীগ সভাপতির একক আধিপত্যে এই প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হচ্ছে। জররী ভিত্তিতে বিভিন্ন উন্নয়ণে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কাজগুলো সম্পন্ন করা হলে রোষানলে পড়তে হয় মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক, ক্যাশিয়ার ও মোতওয়াল্লীকে।
সভাপতির অনুমতি ছাড়া কোন কাজ করা হলে সভাপতি তাদের সাথে অশালিন আচরণ করে থাকেন। তাদের এই মতভেদের কারণে মসজিদ কমপ্লেক্সে উন্নয়ণে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে।
মুসল্লিদের দাবী, ধর্মীয় এই উপাসনালয় নিয়ে মতভেদ সৃষ্টি ও দলাদলী বন্ধ করে নি:স্বার্থভাবে এর সকল উন্নয়ণ কাজ সম্পন্ন করতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন