মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

পুঁজিবাজারে নতুন কোম্পানির শেয়ারে চাহিদা কম

প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : পুঁজিবাজারে ভালো শেয়ারের জোগান দিতে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) একের পর এক নতুন কোম্পানির তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিচ্ছে। কিন্তু তারপরও গতি ফিরছে না বাজারের। বরং বাজারে আসার পরই নতুন এসব শেয়ারের চাহিদা কমে যাচ্ছে। মৌলভিত্তি বিবেচনায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ ধরে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান।
জানা যায়, চলতি বছর পুঁজিবাজারে এসেছে ৫টি কোম্পানি। এগুলো হচ্ছে- ড্রাগন সোয়েটার, ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেম লিমিটেড, বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইস্যুরেন্স কোম্পানি, ইভেন্স টেক্সটাইল ও একমি ল্যাবরেটরিজ। নতুন শেয়ার আসলেও বাজারে তারল্য প্রবাহ বাড়েনি। বরং গত আট মাসে ডিএসইর সার্বিক সূচকটি কমেছে ছয় পয়েন্ট। গত ১ জানুয়ারি ডিএসইর সার্বিক সূচক ছিল চার হাজার ৫৬০ পয়েন্ট। বুধবারে তা কমে দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৫৫৪ পয়েন্ট। বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে চাহিদা না থাকলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা শেয়ারের জোগান বাড়াতে ক্রমান্বয়ে নতুন নতুন আইপিও অনুমোদন দিচ্ছে।
এ বছর নতুন তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের ড্রাগন সোয়েটার নামের কোম্পানিটির আইপিও অনুমোদনের জন্য জমা দেওয়া তথ্য কণিকায় ইপিএস গণনায় ভুলের অভিযোগ থাকলেও কোম্পানিটির অনুমোদন দেয় বিএসইসি। কোম্পানিটি অভিহিত মূল্যে মোট চার কোটি শেয়ার ছেড়ে বাজার থেকে ৪০ কোটি টাকা তুলে নেয়। তালিকাভুক্তির পরপরই এ কোম্পানির শেয়ারের চাহিদা কমতে শুরু করে। গতকাল এ শেয়ারের দর নেমে এসেছে অভিহিত মূল্য বা ১০ টাকায়। যা ছিল বছরের সর্বনিম্ন দর।
এছাড়া টাকা উত্তোলনে সব কোম্পানিকে পেছনে ফেলেছে একমি ল্যাবরেটরিজ। বুকবিল্ডিং আইনে কোম্পানিটি বাজার থেকে ৪০৯ কোটি টাকা তুলে নেয়। প্রথম দিনে কোম্পানিটির নিজেরই লেনদেন ১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। কিন্তু পরদিন থেকেই কোম্পানিটির শেয়ারের চাহিদা কমতে থাকে। এখন প্রতিদিনই দর কমছে কোম্পানিটির। কারণ তখন আড়াই থেকে তিনশ’ কোটি টাকার মধ্যে লেনদেন আবর্তিত হচ্ছিল। যার ধাক্কা গিয়ে পড়েছিল সেকেন্ডারি বাজারে। লেনদেনের শুরুতে এ কোম্পানির শেয়ার ১৩৫ টাকায় কেনাবেচা হলেও এখন তা নেমে এসেছে ১০৬ টাকায়।
২০১৬ সালে জ্বালানি এবং শক্তি খাতের ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেম নামের কোম্পানি বাজার থেকে ৫৮ কোটি টাকা উত্তোলন করে। কোম্পানিটি বাজার থেকে প্রিমিয়াম বাবদ ৩৮ কোটি টাকা উত্তোলন করে। বাজারে আসার পর কোম্পানিটির শেয়ারের চাহিদায় ভাটা পড়লেও বর্তমানে ঢাকা স্টক একচেঞ্জে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দর দাঁড়িয়েছে ৫৯ টাকা ৪০ পয়সা।
চলতি বছরে বীমা খাতের বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন না নিয়ে আইপিওতে আবেদন করে। মূলধন বাড়ানো নিয়েও কিছুটা জটিলতা দেখা দেয়। পরবর্তীতে ব্যবস্থাপনা পরিচালককে জরিমানা করে কোম্পানিকে টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হয়। কোম্পানিটি বাজার থেকে অভিহিত মূল্যে ১৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা তুলে নেয়। এখন কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দর দাঁড়িয়েছে ১২ টাকা ৫০ পয়সা। এছাড়া ইভিন্স গ্রæপের ইভিন্স টেক্সটাইলের কোম্পানিটি বাজার আসার পর থেকে টানা নি¤œমূখী ধারায় নামাতে থাকে। এর মধ্যে আর কোম্পানিটি ১৭ কোটি টাকা উত্তোলন করে।
এই বিষয়ে পুঁজিাবাজার বিশ্লেষকরা বলেছেন, কোন কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বিনিয়োগকারীদের জন্য ভালো খবর। তবে অবশ্যই এসব কোম্পানির অর্থনৈতিক ভিত্তি শক্ত হতে হবে। তাছাড়া কোম্পানিতে কোনো অনিয়ম রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা উচিত। কারণ কোম্পানির ভিত্তি ভালো হোক, আর খারাপ হোক, সব দায়ভার শেষ পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের কাঁধে গিয়ে পড়ে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন