গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের বন্দীকে নারীসঙ্গের ব্যবস্থা করিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় চলছে। অভিযোগ ওঠে কারাবন্দী হলমার্ক গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমদকে কারা কর্মকর্তাদের কক্ষেই নারীসঙ্গের ব্যবস্থা করা হয়। এই ঘটনা ফেসবুকে ভাইরাল হতেই নিন্দা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ার ঝড় ওঠে। দোষী কর্মকর্তাদের কঠিন শাস্তির দাবি তুলেছেন নেটিজেনরা।
জানা যায়, কারা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠার পর জেলা প্রশাসন প্রাথমিকভাবে এ ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। এ ঘটনায় ডেপুটি জেলার গোলাম সাকলায়েনসহ ৩ জনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। অন্য দুজন হলেন সার্জেন্ট আ. বারী ও সহকারী প্রধান কারারক্ষী খলিলুর রহমান। তুষার হলমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদের ভায়রা।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, গত ৬ জানুয়ারি কারাগারে প্রবেশ পথে কর্মকর্তাদের কার্যালয় সংলগ্ন এলাকায় কালো রঙের জামা পরে স্বাচ্ছন্দ্যে ঘোরাফেরা করছেন ঋণ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত হলমার্কের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তুষার আহমেদ। সেখানে আসার কিছু সময় পর বাইরে থেকে বেগুনি রঙের সালোয়ার কামিজ পরা এক নারী সেখানে প্রবেশ করেন। কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায় ও ডেপুটি জেলার সাকলাইনের উপস্থিতিতেই এ ঘটনা ঘটে।
সিসিটিভি ফুটেজে তাদের সহযোগিতার বিষয়টিও দেখা গেছে। দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে কারাগারের দুই যুবকের সঙ্গে ওই নারী কারা কর্মকর্তাদের কক্ষ এলাকায় প্রবেশ করেন। তাকে সেখানে অভ্যর্থনা জানান খোদ ডেপুটি জেলার সাকলায়েন। ওই নারী সেখানে প্রবেশ করার পর অফিস থেকে বেরিয়ে যান ডেপুটি জেলার সাকলায়েন। আনুমানিক ১০ মিনিট পর কারাগারে বন্দী তুষার আহমদকে সেখানে আনা হয়।
ফেসবুকে এই ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে মোঃ শাহজালাল লিখেছেন, ‘‘হ্যাঁ, এটাই বাংলাদেশ, যে দেশে আইন শুধু সাধারণ জনগন জন্য, আর প্রভাবশালীদের কোনো আইন নেই এইটাই প্রমাণিত হল। কারণ চোর পালানোর পরে বুদ্ধি আসে বাংলাদেশের আইন বিভাগের।‘’
ফঢসাল হোসাইন লিখেছেন, ‘‘তদন্ত করার কোনো কারণ নেই সেখানে। ওই জেলখানায় যারা আছে তারা সবাই সব কিছু জানে। অতএব কারাগারে থাকা যেই সকল কারারক্ষী আছেন তাদেরকে চাকরিচ্যুত করেন এবং জেলে প্রেরণ করেন। ওখানে সব কয়টা জানোয়ার।’’
মোছাঃ নাজমা সুলতানা লিখেছেন, ‘‘কাশিমপুর কারাগারে কি হচ্ছে? শুনেছি টাকা থাকলেই নাকি বাঘের চোখ মিলে। কারাগারে চলছে মেয়ে নিয়ে ফুর্তি। প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’’
সেলিম হোসেন লিখেছেন, ‘‘এই ঘটনায় প্রমাণ করে সরকারের ব্যর্থতা। প্রত্যাহার আর শোকজ এক ধরনের চাতুরতা। কয়েক দিন পর এই কর্মকর্তারা সহাবস্থানে ফিরে প্রমোশন পারে। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক হচ্ছে রাজাকারের বংশধর। সব মিলিয়ে হযবরল অবস্থা। আমলা আর সরকার দলীয় নেতারা আছে অর্থের পাহাড় গড়ায় ব্যস্ত। সরকার ব্যর্থ।’’
মোঃ এদাদুল হাওলাদার লিখেছেন, ‘‘একটা আসামি সেক্স করার জন্য একটা নারীর চাইল জেল পুলিশের কাছে জেল পুলিশ একটি নারীকে নিয়ে আসলো সেক্স করা সম্পূর্ণ হলো। তাহলে এই জেল পুলিশ দিয়ে আমাদের কি ভরসা আছে। টাকা দিয়ে আসামিকে যেকোনো মুহূর্তে রাতে বের করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।’’
রবিউল ইসলাম রুবেল লিখেছেন, ‘‘আমি কাশিম কারাগার-১ এ ছিলাম। সেখানে তুষারের রুমে ল্যাপটপ, আইফোন সহ বিভিন্ন ধরনের বিনোদন আছে ২৪ঘন্টা ভিডিও কল দিয়া ব্যাবসা পরিচালনা করে। আর প্রতি শুক্রবারে নারী লাগে যেটা জেলসুপার ব্যবস্থা করে।’’
কামাল হোসেনের মন্তব্য, ‘‘এটা হয়তো নিত্যদিনের বিষয়, একটা ক্যামেরায় আসাতে মানুষ দেখেছে। খুবই দুঃখজনক বিষয়, কাশিমপুরের মত জায়গায়, আফসোস ছাড়া কিছুই করার নাই।’’
হৃদয় চৌধুরী লিখেছেন, স্ত্রীর সঙ্গে যৌনতা একটি মানবিক চাহিদা, কারাগারে বন্দিদের যদি বিবাহিত স্ত্রী বাইরে থেকে থাকে তাদেরকে নির্দিষ্ট সময় পরপর যৌন মিলনের সুযোগ দানের আইন করার আবেদন জানাচ্ছি, কারণ বন্দি ব্যক্তি যদিও অপরাধী তাদের স্ত্রীদের তো কোন অপরাধ নেই, তাছাড়া অপরাধী বলে তাদের খাবার প্রেশাব পায়খানা ঘুম চিকিৎসা ইত্যাদির কোন কিছুই তো বন্ধ নেই, স্ত্রী মিলনে সমস্যা কি?’’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন