শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সর্প দংশন অবহেলিত রোগের তালিকায়

বছরে মৃত্যু হয় ৬ হাজারের বেশি হাসপাতালে এন্টিভেনম থাকলেও প্রয়োগ কম সাতটি এনটিডি নির্মূলে যৌথভাবে কাজ করার আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০২১, ১২:০০ এএম

দেশে প্রতি বছর প্রায় ৫ লাখ ৮৯ হাজার ৯১৯ জন সাপের কামড়ের (সর্প দংশন) শিকার হন। এদের মধ্যে প্রায় ৬ হাজার ৪১ জনের মৃত্যু হয়। জনস্বাস্থ্যর জন্য এটি বিশাল সমস্যা হলেও এক্ষেত্রে খুব একটা মনযোগ নেই কারো। আর তাই এই সমস্যার ঠাঁই হয়েছে ক্রান্তীয় অবহেলিত রোগের (এনটিডি) তালিকায়। দেশের উপজেলা হাসপাতালে বিনামূল্যে সাপের কামড়ের ওষুধ (এন্টিভেনম) পাওয়া যায়। তবে এ নিয়ে অবৈজ্ঞানিক ভ্রান্ত ধারণা ও ওষুধ প্রয়োগের পর পাশর্^প্রতিক্রিয়ার ফলের সৃষ্ট জটিলতা এড়াতে সেই এন্টিভেনমের ব্যবহার হচ্ছে না। এন্টিভেনমের সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি তা প্রয়োগের বিষয়টিও নিশ্চিত করার উপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

গতকাল শনিবার সকালে বিশ্ব ক্রান্তীয় অবহেলিত রোগ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা এক্সেলেরেটিং দ্য সাসটেইনেবল কন্ট্রোল এন্ড এলিমেনেশন অব নেগলেক্টটেড ট্রপিক্যাল ডিজিস (এসেন্ড) যৌথভাবে রাজধানীর গুলশানের একটি অভিজাত হোটেলে এই বৈঠকের আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) প্রফেসর ডা. নাসিমা সুলতানা ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) প্রফেসর ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, এসেন্ডের কান্ট্রি লিড অধ্যাপক ডা বে-নজীর আহমেদ। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক ও সিডিসি লাইন ডাইরেক্টর প্রফেসর ডা মো. নাজমুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অধিদপ্তরের পরিচালক (এমবিডিসি) ও লাইন ডাইরেক্টর (টিবি-এল এন্ড এএসপি) প্রফেসর ডা. মো. সামিউল ইসলাম। অনুষ্ঠানে দেশের সাতটি এনটিডি’র উপর উপস্থাপন করা হয়।

বক্তারা বলেন, এনটিডি বলা হলেও সরকার এই রোগগুলোতে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। এসব রোগ নির্মূল করা স্বাস্থ্য বিভাগের একার কাজ নয়। কারণ এসব রোগের বিস্তারে রয়েছে একটি ‘বাহক’। যা নিয়ন্ত্রণে অনান্য মন্ত্রণালয় বা দফতরের কাজ রয়েছে। তাই এসব রোগ নির্মূলে স্বাস্থ্য বিভাগের গুরুত্ব যতটা ততটা গুরুত্ব অনান্য বিভাগকেও দিতে হবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিশ্বের ১৪৯ টি দেশের প্রায় ১৭০ কোটি প্রান্তিক মানুষের জন্য এনটিডি মারাত্মক হুমকি। এই রোগগুলো আক্রান্তদের অন্ধতা, বিকলাঙ্গ সৃষ্টি ও প্রত্যঙ্গ বিকৃতির মাধ্যমে শুধু স্বাস্থ্যহানি ঘটায় না। বরং তাদের স্বাভাবিক বেঁচে থাকার সুযোগ কেড়ে নেয়। এমনকি পরিবার বা সমাজে বসবাস করা ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তালিকাভুক্ত এনটিডিভুক্ত রোগের সংখ্যা ২০। বাংলাদেশে গোদরোগ বা ফাইলেরিয়া, কালাজ্বর, কুষ্ঠ, কৃমি, জলাতঙ্ক, সর্পদংশন এবং ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া এই সাতটি রোগ প্রধান এনটিডি হিসেবে বিরাজমান। এর মধ্যে বেশ কালাজ্বর ও কুষ্ঠ রোগ নির্মূল লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে। ফাইলেরিয়া ও জলাতঙ্ক রোগ নির্মূলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে। তবে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া এবং সাপে কাটা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশকে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে

প্রসঙ্গত; অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সারা বিশ্বে গত বছর থেকে ৩০ জানুয়ারি বিশ্ব এনটিডি দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়ে আসছে। এ বছর দিবসটি উদযাপিত হবে ২ ফেব্রুয়ারি। এবারের প্রতিপাদ্য ‘অবহেলা শেষ করো, এনটিডিকে পরাজিত করো’।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন