ঘুষ না দেয়ায় সর্বনিম্ন দরদাতাকে বাদ দিয়ে অন্য ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়ায় ঠিকাদারে দায়ের করা মামলায় রংপুরে দুই প্রকৌশলীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তারা হলেন এলজিইডি রংপুর এর সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন ও সহকারী প্রকৌশলী কাওছার আলম।
আজ বুধবার বিকেলে আদালতে আত্মসমর্পণ করে ওই দুই প্রকৌশলী রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, রংপুর এলজিইডির অধীনে প্রায় ৭ কোটি টাকা প্রাক্কলিত মূল্যের দুটি টেন্ডারে রংপুরের ঠিকাদার রবিউল আলম বুলবুল সর্বনিম্ন দর দাতা হিসেবে বিবেচিত হন। দরপত্র দু’টি গ্রহণ ও অনুমোদন করার পরেও নোটিফিকেশন অফ অ্যাওয়ার্ড (এনওএ) না দিয়ে রবিউল আলম বুলবুলের কাছে মোট কাজের (৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা) দুই শতাংশ হারে ঘুষ দাবি করেন তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন এবং সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির চেয়ারম্যান কাওছার আলম। তাদের দাবীকৃত শতকরা দুই ভাগ হারে ঘুষ দেয়ায় তাকে নিষ্ক্রিয় হিসেবে তালিকাভুক্ত করে অন্য ঠিকাদারকে কার্যাদেশ প্রদান করেন নির্বাহী প্রকৌশলী।
এতে করে সরকারেরও ক্ষতি হয় ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা। এ ঘটনায় ঠিকাদার রবিউল ইসলাম আদালতে অভিযোগ দায়ের করলে বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি দুদককে তদন্ত করার নির্দেশ দেন। দুদক তদন্ত শেষে রংপুর এলজিইডির সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী আকতার হোসেন সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী কাওছার আলমসহ ৪ আসামীর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের ১৬১/১৬৬/৪০৯ ধারা ও দুদক আইনের ৫(২) ধারায় আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। ইতিমধ্যে নির্বাহী প্রকৌশলী আখতার হোসেন ও সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী কাওছার আলম ঢাকায় বদলি নিয়ে চলে যান এবং উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন।
বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) জামিনের মেয়াদ শেষ হলে তারা রংপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবদেন জানালে শুনানি শেষে বিজ্ঞ বিচারক তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
দুদুকের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) একেএম হারুন-উর রশীদ জানান, ‘জালিয়াতির মাধ্যমে সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ না দিয়ে অন্য একজনকে কাজ দেয়ায় সরকার ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে ওই দুই প্রকৌশলীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন