সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবসা বাণিজ্য

ইসরাইলের প্রতি ইরানের পাওনা পরিশোধের নির্দেশ

প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : তেলের মূল্য বাবদ ইরানকে বকেয়া ১২০ কোটি ডলার পরিশোধের জন্য ইসরাইলকে নির্দেশ দিয়েছেন সুইজারল্যান্ডের সুপ্রিম কোর্ট। পৃথক আরেকটি রায়ে আদালত ইসরাইলকে ইরানের পাওনা ও মামলার ব্যয় বাবদ আরো সাড়ে ৪ লাখ ডলার পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছেন। ৩৭ বছর ধরে মামলা চলার পর সুইস আদালত এ রায় দিলেন। খবর টাইমস অব ইসরাইল।
পাওনা অর্থ আদায়ে ইসরাইলের সঙ্গে ইরানের বিরোধ শুরু ১৯৭৯ সালে ইরানি বিপ্লবের পর। তার আগে পর্যন্ত ইরানই ছিল ইসরাইলের জ্বালানির প্রধান উৎস। ইসরাইল রাষ্ট্র ঘোষণার পর আরব প্রতিবেশীদের অজ্ঞাতে তেল আবিবকে তেল সরবরাহ করে তেহরান। ইসরাইলের সীমান্তবর্তী আইলাত শহরে তেল পাঠাত ইরান। সেখান থেকে ইসরাইলের সিংহভাগ জায়গায় ওই তেল সরবরাহ হতো। শুধু নিজেদের জ্বালানি চাহিদা মিটিয়েই ক্ষান্ত হয়নি ইসরাইল। তারা চেয়েছিল তেল শিল্পের বড় খেলুড়ে হতে। ইরানের তেল আইলাত থেকে ইসরাইলের বন্দরনগরী আশকেলন পর্যন্ত পৌঁছাতে পাইপলাইন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। উদ্দেশ্য ছিল, এ তেল আশকেলন থেকে জাহাজে করে ইউরোপে বিক্রি করা।
রাজনৈতিক ও আর্থিক কারণেই ইসরাইলের উচ্চাভিলাষের সঙ্গী হতে চায়নি ইরান। কিন্তু ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধ ও সুয়েজ খাল বন্ধ হওয়ায় ইরান-ইসরাইল বর্ধিত সহযোগিতার পথ খুলে যায়। দুই দেশ তখন ইউরোপে তেল বিক্রির বিষয়ে গোপন চুক্তি স্বাক্ষর করে। দুই দেশ যৌথ উদ্যোগে ট্রান্স-এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি গঠন করে, যা পানামায় নিবন্ধিত হয়। ইউরোপে তেল বিক্রির জন্য আইলাত-আশকেলন পাইপলাইন নেটওয়ার্ক নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়, যাতে হাইফা উপকূল পর্যন্ত ইরানের তেল নেয়া সম্ভব হয়। ১৯৬৮ সালে স্বাক্ষরিত ইরান-ইসরাইল চুক্তিটি ১১ বছর পর ভেস্তে যায়। ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর দুই দেশ সম্পর্ক ছিন্ন করে। কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও তেল বাবদ পাওনা অর্থ আদায়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করে ইরান।
ওয়ার্ল্ড আরবিট্রেশন রিভিউতে প্রকাশিত রায়ে জানা যায়, সুইস সুপ্রিম কোর্ট তেলের ৫০টি চালানের মূল্য হিসাবে ইরানকে ১২০ কোটি ডলার পরিশোধের জন্য ইসরাইলের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। ইসরাইলের ট্রান্স-আটলান্টিক অয়েল কোম্পানির কাছে ইরানের ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানির এ অর্থ পাওনা রয়েছে। আদালত বলেছেন, ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি যেহেতু এখন কোনো নিষেধাজ্ঞার আওতায় নেই, তাই ইসরাইলের পাওনা পরিশোধে বাধা নেই।
ইসরাইল এ রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করে। এতে উল্টো ১৯৭৯ সালের পর চুক্তি অনুযায়ী, তেল সরবরাহে ব্যর্থ হওয়ায় ইরানের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়।
সর্বোচ্চ সুইস আদালত ইসরাইলের এ আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন। একই সঙ্গে আদালত আবেদনের সঙ্গে জমা দেয়া ২ লাখ ৬০ হাজার ডলার ইরানকে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এর সঙ্গে মামলার ব্যয় বাবদ ইরানকে আরো ২ লাখ ডলার পরিশোধ করতে ইসরাইলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যৌথ মালিকানার ট্রান্স-আটলান্টিক অয়েল কোম্পানিতে নিজেদের সম্পদ ফিরে পাওয়ার দাবিতে ইরান একটি মামলা করেছে। ওই মামলায় দাবির পরিমাণ ৭০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ইরানি সূত্রগুলো জানিয়েছে। ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ মামলাকে রাষ্ট্রীয় গোপনীয় বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে। তাই কর্মকর্তারা কোনো মন্তব্য করেননি। ইসরাইলের অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, ইরান যেহেতু শত্রæরাষ্ট্র, তাই তাদের কোনো বিল পরিশোধ করা হবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন