ভবন তদারকির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর প্রয়োজনীয় জনবল নেই বলে জানিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার। বুধবার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউটে ‘পরিকল্পিত আবাসন’ বিষয়ক রিপোটিং প্রশিক্ষণে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব বলেন, নিয়ম অনুযায়ী রাজউক রাজধানী এলাকার ভবনের নকশা অনুমোদন দেয়। সে নকশা অনুযায়ী ভবন নির্মাণ করছে কি না সেটা তদারকি করার দায়িত্ব রাজউকের। কিন্তু এত বড় বিশাল এলাকায় তদারকি করার মতো প্রয়োজনীয় জনবল নেই সংস্থাটির।
তিনি বলেন, আইন প্রয়োগের পাশাপাশি আইন মানার জন্য সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে। কারণ নকশা পাশ করে একরকম, আর ভবন নির্মাণ করে অন্যরকম। যদি মানুষ সচেতন হয়, তাহলে নির্মাণকারীরা অবৈধভাবে ভবন তৈরি করতে পারবে না।
মো. শহীদ উল্লা খন্দকার বলেন, গণপূর্ত অধিদফতর বিভিন্ন ভবন নির্মাণ করছে। সংস্থাটি পরিকল্পিত ভবন নির্মাণে পরিকল্পনাবিদ, স্থাপতি, প্রকৌশলীসহ সবধরনের হাতিয়ার রয়েছে। তবে সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও ভবন নির্মাণ করছে। যাদের এ ধরনের জনবল নেই। পরিকল্পিত ও টেকসই নির্মাণ নিশ্চিত করতে সেসব প্রতিষ্ঠানকেও সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। তাহলে আন্তঃসংস্থাগুলোর মধ্যে এ ধরনের প্রতিযোগীতা হবে।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরের বাসযোগ্যতা দিন দিন আরও দূরহ হয়ে পড়ছে। যেভাবে ঢাকা শহর গড়ে উঠছে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জন্য সুন্দর নগরী রেখে যাওয়া কঠিন হয়ে দাড়াবে। তবে বাসযোগ্য নগর গড়তে সরকারী সংস্থাসহ রিহ্যাব, নাগরিক, সাংবাদিকসহ সবার অংশগ্রহন প্রয়োজন।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় রিয়েল এস্টেট এন্ড হাউজিং এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) সভাপতি আলমগীর সামছুল আলামিন বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে মেগাপ্রকল্প নেয়া হয়েছে। কিন্ত তদারকি না করার কারণে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের কিছুদিন পর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। হাতিরঝিলের মতো প্রজেক্ট তদারকির অভাবে নষ্ট হচ্ছে। পানির দূর্গন্ধের কারণে হাতিরঝিলের পাশদিয়ে চলা দায় হয়ে দাড়ায়। সরকারের উচিত বড় প্রকল্প নেওয়ার পাশাপাশি সঠিক তদারকির ব্যবস্থা করা।
সভাপ্রধানের বক্তৃতায় প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআইবি) মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ বলেন, পরিকল্পিত আবাসন খুবই দরকার। কারণ নগর বড় হয়েছে। একইসঙ্গে জনসংখ্যাও বাড়ছে। নগরের পরিধি নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর পর্যন্ত বেড়েছে। কিন্তু পরিকল্পিত নগরী গড়ে উঠেনি। ইট-পাথরের কঙ্কাল শহর গড়ে উঠেছে। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নির্বাচনী ইশতেহারে আমার গ্রাম; আমার শহর বাস্তবায়নের কথা বলেছেন। ইতিমধ্যে কাজ চলছে। সেখানে পরিকল্পিতভাবে শহরের সুবিধা গ্রামে পৌছে দেয়া হবে।
এ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন, রিহ্যাবের ভাইস-প্রেসিডেন্ট কামাল মাহমুদ, নগর উন্নয় সাংবাদিক ফোরাম, বাংলাদেশের সভাপতি মতিন আব্দুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক সোহেল মামুন। প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময়ে করেন ডেইলি স্টারের রিপোর্টার ম্যাথিউচ চিরান ও ডেইলি সানের রিপোর্টার রাশেদুল হাসান। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক গণমুক্তির সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি রিপন তরফদার নিয়াম, নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সাংগাঠনিক সম্পাদক ফয়সাল খান, অর্থ সম্পাদক জাহাঙ্গীর খান বাবু, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক ছাইদুল ইসলাম প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন