যে লিখতে পারে ও কথা বলতে জানে সরকার তাকেই ভয় করে এবং জেলে ঢুকিয়ে দেয় বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। লেখক মুশতাক আহমেদকেও সরকার ভয় পেয়ে জেলে ঢুকিয়েছিলো। গতকাল শনিবার কারাগারে লেখক মুশতাকের মৃত্যুর প্রেক্ষিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। সমাবেশটির আয়োজন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। এতে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, ঢাবি শিক্ষক প্রফেসর নুরুল আলম বেপারী, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব নঈম জাহাঙ্গীর, রাষ্ট্রচিন্তার রাখাল রাহা, সাবেক রাষ্ট্রদূত সাকিব আলী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকার সবাইকে ভয় করে, তাই জেলে ঢুকিয়ে দেয়। আমরা চুরির খবরটা জানি, বলতে পারি তাই সরকার আমাদেরও ভয় করে। জেল কর্তৃপক্ষ বলার চেষ্টা করছে অসুস্থ মুশতাককে আমরা নিয়ে এসেছি। আর তাজউদ্দীন মেডিকেলের ডাক্তার বলছে আমরা মৃত মুশতাককে পেয়েছি। তাহলে মুশতাক কখন, কোথায় মারা গেছে? আলজাজিরা খবর ছাপায় সেটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানেন না, তথ্যমন্ত্রী জানেন না। তাহলে মুশতাক যে কারাগারে মারা গেল সেটা কী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রী জানেন? যদি না জেনে থাকেন তাহলে কেন আপনাদের চাকরি এখনো আছে? বলা হয়েছে মুশতাক হার্টঅ্যাটাকে মারা গেছে। অথচ তার পরিবারের কেউই জানতো না, তার আগে হার্টের সমস্যা ছিল। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টকে ‘জুলুম’ মন্তব্য করে মান্না বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের কোনো জবাব নেই। এটা একটা জুলুম। এটি মানুষের কথা বন্ধ করা, মুখ বন্ধ করা ও লেখা বন্ধ করার আইন। আমরা ওই আইন মানি না।
নুরুল হক নুর বলেন, আমরা এখানে সমবেত হয়েছি মুশতাক হত্যার বিচারের দাবিতে এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা নামে কালো আইন বাতিলের দাবিতে। ২৫ ফেব্রুয়ারি যেদিন মুশতাক মারা গিয়েছে সেদিন স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি জঘন্যতম দিন। এ ২৫ ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনীর ৫৭ জন কর্মকর্তাকে বিডিআর বিদ্রোহের নামে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। রমনা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন অর রশীদকে উদ্দেশ্য করে নূর বলেন, আমরা জানি আপনি ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ ক্যাডার ছিলেন। কিন্তু আপনি যে গায়ে পোশাকটা জড়িয়েছেন, হাতে বন্দুক নিয়েছেন তা মেহনতী মানুষের ট্যাক্সের টাকায় কেনা হয়েছে। যদি জনগণের টাকায় কেনা বন্দুক নিয়ে ছাত্রলীগের ক্যাডারগীরি জণগণকে দেখাতে চান, তবে কিন্তু আমরা সেই ক্যাডারকে শিক্ষা দিতে পারি।
সমাবেশে নেতাকর্মীদের হাতে বিভিন্ন স্লোগান লেখা পোস্টার দেখা যায়। পোস্টারগুলোতে লেখা ছিল বিতর্কিত ডিজিটাল আইন বাতিল চাই; তারা আমার মুখের কথা কাইড়া নিতে চায়; আমরা আছি থাকব, যুগে যুগে লড়ব; গুম খুনের সরকার আর নাই দরকার; স্বৈরাচার নিপাত যাক গণতন্ত্র মুক্তি পাক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন