বিভিন্ন উপায়ে স্মৃতিশক্তি যেমন বৃদ্ধি করা যায়, তেমনি নানা কারণে মানুষের স্মৃতিশক্তি কমেও যায়। স্মৃতি শক্তি কমে যাওয়াকে বিস্মৃতি বলা হয়। আর বিস্মৃতি হচ্ছে শিক্ষা ও স্মৃতি-এর বিয়োগফল। মনোবিজ্ঞানী ক্রিডার বলেন, ‘কোন নির্দিষ্ট তথ্য স্মরণ করার অক্ষমতাকে বিস্মৃত বলে’। স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার কারণগুলো নিম্নরূপ-
* পঠিত বিষয়ে পর্যালোচনার অভাবে- মানুষ যখন কোন কিছু পাঠ করে বা দেখে তখনই তা মানুষের স্মৃতিতে গেঁথে যায়। কিন্তু সেই পঠিত বিষয় আবার পুনরায় পাঠ না করলে সেটা মানুষের স্মৃতি থেকে মুছে যেতে থাকে, ফলে বিস্মৃতি ঘটে।
* মনোযোগের অভাবে- প্রত্যেকেরই উচিত যখন কোন কিছু করবে, দেখবে বা পড়বে তা মনোযোগ সহকারে দেখা, করা বা পাঠ করা। অন্যথায় মানুষ তা ভুলে যেতে পারে। আর মনোযোগহীনতা মানুষের স্মৃতিশক্তি নষ্ট করে দেয়।
* প্রকারগত পরিবর্তনের কারণে- মানুষের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন ধরনের প্রকারগত পরিবর্তনের কারণেও স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
* শারীরিক অসুস্থতার কারণে- মানুষের বিভিন্ন বড় ধরনের শারীরিক অসুস্থতার জন্যেও অনেক সময় স্মৃতিশক্তি কমে যায়। এটা হরহামেশাই চোখে পড়ে।
* সৃজনশীলতার অভাবে- সৃজনশীলতা বা কোন কিছু উদ্ভাবনের ক্ষমতা মানুষকে অনেক বেশি চিন্তা করতে ও পাঠ করতে বাধ্য করে, যা মানুষের স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে দেয়। আর এর অভাবে স্মৃতিশক্তি কমে যায়।
* নিয়মিত অধ্যয়ন না করলে- নিয়মিত অধ্যনয় করলে মানুষে ব্রেন অনেক বেশি সচল ও উর্বর হয়ে উঠে। আর নিয়মিত অধ্যয়ন না করলে মানুষের মস্তিস্ক তার কার্যক্ষম হারিয়ে ফেলে। ফলে স্মৃতিশক্তিও কমে যায়।
* অবদমন- নিজস্ব ইচ্ছা, আবেগ, অনুভূতিগুলো মানুষের মস্তিষ্ক থেকেই আসে। মানুষ যখন এই ইচ্ছা, আবেগ, অনুভূতিগুলো রোধ করে রাখে, তখন মস্তিষ্কও তার কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। ফলে দেখা দেয় বিস্মৃতি।
* মস্তিষ্কে আঘাত লাগলে- মানুষের স্মৃতি তার মস্তিষ্ক অর্থাৎ ব্রেনে থাকে। আর এটা অত্যন্ত নাজুক একটি স্থান। অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা থেকে মস্তিষ্কে আঘাত লেগে স্মৃতিশক্তি কমে যেতে বা স্মৃতি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
* পুষ্টিকর খাবারের অভাবে- খাবার মানুষের জীবনের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। খাবার ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না। আবার খাবার শুধু খেলেই হবে না। তাতে থাকতে হবে সঠিক পুষ্টিগুণ। কারণ সঠিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবারের অভাবে কমে যেতে পারে স্মৃতিশক্তি। তাই সুস্থ সবল জীবন চান সুষম খাবার রোজই খান।
* অতিসম্প্রতি যুক্তরাজ্য মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন এবং হেলথ রিসার্চ প্রোগ্রামের উদ্যোগে ছয় বছর ব্যাপী এক সমীক্ষায় উপসংহারে বলা হয়, মোবাইল ফোন ব্যবহারে ব্রেনের স্বল্পকালীন সমস্যা হয় না। কিন্তু গবেষকগণ স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া সহ দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। এমনকি ক্যান্সারও হতে পারে বলে ধারনা করছেন।
ডা: মাও: লোকমান হেকিম
চিকিৎসক- কলামিস্ট, মোবা: ০১৭১৬-২৭০১২০
E-mail: hrahmansyl76@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন