মুখে চওড়া হাসি, উইকেটের পাশে দাঁড়িয়ে ‘থামস আপ’ দেখিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুশফিকুর রহিমের ছবি। সঙ্গে ছোট্ট একটি ক্যাপশন। লেখা- ‘৮ দিন কোয়ারেন্টিনের পর দারুণ একটি সেশন হলো।’ মাঠ থেকে দূরে রাখার চেয়ে বড় শাস্তি মুশফিকের জন্য আর নেই। তার খুশির কারণও তাই বোধগম্য। তবে এবার এই উচ্ছ্বাস দলের সবারই। মুক্তির আনন্দ বলে কথা! নিউজিল্যান্ডে সাত দিনের কড়া কোয়ারেন্টিনে বাইরে যাওয়ার সুযোগ ছিল না বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের। দ্বিতীয় দফা কোভিড-১৯ পরীক্ষায় নেগেটিভ আসার পর অষ্টম দিন থেকে মিলল মাঠের অনুশীলনের সুযোগ।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি নিউজিল্যান্ডে পা রাখার পর গতকালই প্রথম অনুশীলন করল বাংলাদেশ দল। লিঙ্কন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষায়িত মাঠে চারটি গ্রুপে ভাগ হয়ে আলাদা সময়ে অনুশীলন করেছেন ক্রিকেটাররা। প্রতি গ্রুপে ছিলেন ৫ জন ক্রিকেটার ও সাপোর্ট স্টাফের ২ জন সদস্য। ২ ঘণ্টা করে সময় বরাদ্দ ছিল প্রতি গ্রুপের জন্য। ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে প্রথম সেশনে ফিল্ডিংকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। অনুশীলনে মাথায় রাখা হয়েছে নিউজিল্যান্ডের তীব্র বাতাসের চিন্তা। এই পেস অলরাউন্ডারের সঙ্গে এক গ্রুপে ছিলেন সৌম্য সরকার, নাজমুল হোসেন শান্ত, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, শেখ মেহেদী হাসানরা। লিঙ্কন ইউনিভার্সিটির মাঠে চলে তাদের মুক্ত বাতাসে প্রস্তুতি। অন্য গ্রুপে অনুশীলনে দেখা যায় মুশফিকদের।
নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে ব্যাটিং, বোলিংয়ের মতো ফিল্ডিংও বেশ চ্যালেঞ্জের। এর আগে সেখানে গুরুত্বপ‚র্ণ অনেক ক্যাচ হাত ফসকে যাওয়ায় ভুগেছে বাংলাদেশ। তীব্র বাতাসের কারণে অনেক সময়ই বলের ফ্লাইট বোঝা হয়ে যায় দুষ্কর। অনুশীলন শেষে বিসিবির পাঠানো ভিডিও বার্তায় সাইফুদ্দিন জানান, ওই চিন্তা থেকেই প্রথম দিন অনুশীলনে গুরুত্ব পেয়েছে ক্যাচিং, ‘আজ (গতকাল) অনুশীলনে আমরা ফিল্ডিং নিয়ে বেশি কাজ করেছি। হাই ক্যাচিং নিয়ে। কারণ এখানে আবহাওয়া এবং বাতাসের একটা ব্যাপার থাকে। এটা মানিয়ে নেওয়ার জন্যই (বিশেষ ফিল্ডিং সেশন)। এরপর আমরা ছোট ছোট সেশনে ব্যাটিং-বোলিং করেছি। পরে ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছি, যেহেতু গত ৭ দিন ফিটনেসের কাজ খুব বেশি করতে পারিনি। ট্রেনারের নিদের্শা অনুযায়ী রানিং করেছি। সামনে যতদিন সময় আছে, ছোট ছোট প্র্যাকটিস করে নিজেদের মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করব।’
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাঠে সব সংস্করণ মিলিয়ে ২৬ ম্যাচ খেলেও জয়শ‚ন্য বাংলাদেশ। সাইফুদ্দিন জানালেন এবার অন্তত সেই খরা কাটাতে মরিয়া তারা। বিশেষ করে ওয়ানডে নিয়ে বেশ আশাবাদি শোনালো এই অলরাউন্ডারের কন্ঠ, ‘প্রত্যাশা অবশ্যই থাকবে কারণ ওয়ানডেতে আমরা অনেক ভাল দল। যদি আমরা সবাই ভাল খেলতে পারি তাহলে ফলাফল আমাদের পক্ষে আসবে। পাশাপাশি টি-টোয়েন্টিও আছে। যেহেতু আমাদের প্রাপ্তির খাতা নিউজিল্যান্ডে একদম শ‚ন্য, কাজেই চেষ্টা থাকবে এই সিরিজ থেকে যেন কিছু নিয়ে দেশে নিয়ে যেতে পারি।’
ফিল্ডিং অনুশীলনের আগে রানিং করেছেন ক্রিকেটাররা। পরে হালকা ব্যাটিং বোলিং সেরে ইতি টানেন প্রথম দিনের। অনুশীলন শুরু হলেও কোয়ারেন্টিন থেকে এখনও পুরো মুক্তি মেলেনি ক্রিকেটারদের। জৈব-সুরক্ষা বলয়ে গ্রুপ ধরে এভাবে অনুশীলন চলবে ৭ দিন। এরপর পুরোপুরি মুক্তি। কুইন্সটাউনে ৫ দিনের ক্যাম্পে নিবিড় অনুশীলনে প্রস্তুতি নেবেন ক্রিকেটাররা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন