কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের ফুলছড়ি বনবিটের ২০১৭-১৮ সালে সৃজিত দেড় কোটি টাকার বনায়ন সাবাড় করে প্লট আকারে বিক্রির ধুম পড়েছে। বনভূমি প্লট আকারে বিক্রির করে কয়েক কোটি টাকা অবৈধ আয় করেছে দখলবাজ চক্র। রাজনৈতিক পরিচয়ে কথিত দখলদার চক্র ২০১৭-১৮ সালের ১০ হেক্টর বনায়নের অন্তত দেড় কোটি টাকার চারা গাছ নির্বিচারে কেটে সেখানে স্থায়ী মাটির ঘর তৈরি করছে অন্তত ২০টি। বেশ কয়েকটি নবনির্মিত মাটির ঘরে টিনের ছাউনীও দেয়া হয়েছে। তবে ইতোপূর্বে বনবিভাগ কয়েকবার উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে দায় সেরেছেন। দখলদারদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি বন আইনে মামলাও করে বনবিভাগ এখন রহস্যজনক ভাবে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।
জানা গেছে, ফুলছড়ি রেজ্ঞাধীন চকরিয়া ফুলছড়ি বনবিটের অধীনে হাজার হাজার একর বন ভূমির মালিক ছিল বনবিভাগ। বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় শত একরে। দখলবাজ চক্র বনায়নের চারা গাছ কেটে উজাড় করে দখল নিয়েছে। তা চড়া দামে বিভিন্ন ব্যক্তিকে বিক্রিও করেছে।
তবে ফুলছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, বনায়ন ধ্বংস করে বনভূমি দখল ও বিক্রিতে জড়িত রয়েছে ইসলামপুরের ওসমান আলী মুরশেদ, আবছার কামাল শাহীন, এহেসান, দেলোয়ার হোসেন মুনিয়া, আবুল কালাম কালা সোনা, ইউনুচ প্রকাশ পুরাইয়া, জয়নাল উদ্দীন, কামরুল ইসলাম সবুজ, ওমর ফারক ভুট্টো, মনজুর আলম প্রকাশ কালা মনজুর, আনোয়ার হোসেনসহ অন্তত ২০/৩০ জনের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বন আইনে ৭টি মামলা করা হয়েছে। তিনি বলেন, যেখানে সরকারি গাছ কাটাই নিষেধ সেখানে বনায়নের ভেতর প্রকাশ্যে তারা কাটছে তাজা চারা গাছ ও অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুললেও তা উচ্ছেদ অব্যাহত আছে।
স্থানীয়রা বলছেন, ফুলছড়ি বিট কর্মকর্তা আকরাম হোসেন বদলী হওয়ার পর নতুন যোগদান করেন মো. ফারুক। নবনিযুক্ত ফুলছড়ি বনবিট কর্মকর্তা ফারুক ও কর্মচারীরা দখলদারদের তালিকা করে চাঁদা তুলে স্থায়ী ভাবে মাটির ঘর তৈরিতে সুযোগ করে দিচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, ১৫/২০ হাজার টাকা করে আদায় করছে প্রতিটি অবৈধ ঘর থেকে। গত কয়েক মাসের ব্যবধানে ফুলছড়ির ২০১৭-১৮ সালে সৃজিত বনায়নের দেড় কোটি টাকার চারাগাছ কেটে ন্যাড়া পাহাড় বানিয়েছে। ফুলছড়ি বিট কর্মকর্তা দাবি করেন, দখলদারদের উচ্ছেদ করে ৭টি বন মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাদের হুমকির মুখে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক জনপ্রতিনিধি বলেন, ফুলছড়ির বনভূমি সংরক্ষণ করতে হলে শক্ত হতে হবে বনবিভাগ এবং সরকারের সর্বোচ্চ মহলকে। তা না হলে সরকারি এবং বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সৃজিত বনায়ন অচিরপ্রভা নিচিহ্ন হবে।বেহাত হয়ে যাবে কোটি কোটি টাকা মূল্যের বনভূমি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন