গাজীপুরের কোনাবাড়িতে বন বিভাগের প্রায় ১২ একর জমি একটি প্রভাবশালী মহলের দখলে চলে যাচ্ছে। এই জমির মূল্য প্রায় আড়াই শ’ কোটি টাকা। দীর্ঘদিন থেকে দখল হয়ে যাওয়া এই জমি উদ্ধারে বন বিভাগের কোন উদ্যোগ নেই বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসি।
স্থানীয়দের অভিযোগ বন বিভাগ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে প্রভাবশালী মহল ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশের মূল্যবান সম্পত্তি দখল করে নিচ্ছে। এই জমি দ্রুত উদ্ধার করে কবরস্থান খেলার মাঠ করে দেয়ার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। তবে দখলদাররা বলছেন, বন বিভাগ নোটিশ করলে ওই জমি ছেড়ে দিতে বাধ্য তারা।
গাজীপুরের কোনাবাড়িতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ওপর ফ্লাইওভারের পশ্চিম মাথায় মহাসড়কের উভয় পাশে বন বিভাগের প্রায় ১২ একর সম্পত্তি জবর দখল করে স্থাপনা তৈরি করছে একটি প্রভাবশালী মহল। গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন ধরণের স্থাপনা ও দোকান পাট। তৈরি করা হচ্ছে বিশাল আকৃতির সুউচ্চ সীমানা প্রাচীর। মূল্যবান এ সম্পত্তি ভ‚মিদস্যুদের হাতে দখল হয়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী। দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জমি উদ্ধার করে জনস্বার্থে কবরস্থান ও খেলার মাঠ করে দেয়ার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসি।
স্থানীয় সিরাজুল ইসলাম জানান, সরকারি জমি লিজ নিয়ে আব্দুল মজিদ ইটভাটা করেছিলো। সিটি কর্পোরেশন হওয়ার পর ইটভাটা বন্ধ হয়ে গেলে দীর্ঘদিন ওই জমি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিলো। হঠাৎ সড়কের একপাশের জমিতে ট্রাক স্টেশন গড়ে তুলে প্রভাবশালীরা। গত কয়েক মাসের মধ্যে অপর পাশের জমিতেও সেলিম নামে এক ঝুট ব্যবসায়ী গড়ে তুলেছেন ঝুটের গুদাম ও দোকানপাট।
সরকারি জমি কিভাবে দখল হয়ে যায় তা জানা নাই। তবে তার অভিযোগ বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই বেদখল হচ্ছে এসব মূল্যবান জমি।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সেলিম রহমান জানান, সরকারি সম্পত্তি রাতারাতি কিভাবে দখল হয়ে গেল এ বিষয়ে তিনি অবগত নন। এসব জমিতে দোকানপাট ও স্থাপনা তৈরিতেও সিটি করপোরেশন থেকে কোন প্রকার অনুমতি নেয়া হয় নাই।
তবে, ঝুট ব্যবসায়ী সেলিম শেখ জানান, এখানে দীর্ঘদিন আ. মজিদ নামে জনৈক ব্যক্তি ইটভাটা চালিয়ে আসছিলেন। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন হওয়ার পর দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। পরে আ. মজিদের ছেলে আবু সাইদের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে স্থাপনা তৈরি ঝুটের গোডাউন তৈরি করছেন তিনি। নিরাপত্তার জন্য মহাসড়কের পাশে ইটের বাউন্ডারি করা হয়েছে। তবে বনবিভাগ ব্যবস্থা নিলে ওই জমি ছেড়ে দিতে বাধ্য হবেন বলেও জানান সেলিম।
কালিয়াকৈর বন রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম হাওলাদার জানিয়েছেন, দখলের বিষয়টি শুনামাত্রই ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দ্রুতই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে ওই জমি বন বিভাগের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে উচ্ছেদ কাজ পরিচালনা করতে জেলা প্রশাসন থেকে ম্যাজিস্ট্রেট চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্দেশ পাওয়া মাত্রই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে বলেও জানান রেঞ্জ কর্মকর্তা।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উভয় পাশে থাকা এসএ এবং আরএস রেকডভুক্ত বন বিভাগের এ মূল্যমান জমি দ্রুত উদ্ধার করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আওতায় আনা হবে এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন এলাকাবাসী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন