ময়মনসিংহের ভালুকায় রাতের আঁধারে সংরক্ষিত বন থেকে কয়েকশ’ গজারী ও আকাশমনি গাছ চুরি করে নিয়ে গেছে দুর্বত্তরা। পরে বনের বেশ কিছু অংশ আগুন দিয়ে জ¦ালিয়ে দেয়া হয়। বনবিভাগ বলছে, স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুর রশিদ ও মফিজসহ কতিপয় লোক এই কাজের সাথে জড়িত এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভালুকা রেঞ্জের আওতায় হবিরবাড়ি বিট অফিসের অদূরে ৪৩৮ নম্বর দাগে রাধুর ভিটা নামক স্থনে সজল ও মফিজের ভিটা থেকে রাতের আধাঁরে পর্যায়ক্রমে কয়েক হাজার গাজারী ও বিশাল আকারের আকাশমনি গাছ চুরি করে নিয়ে গেছে। এমনকি গাছগুলো কেটে নেয়ার পর আগুণ দিয়ে জ¦ালিয়ে দেয়া হয়েছে। ফলে এক সময়কার গণগজারী বন বর্তমানে বিরানভূমিতে পরিনত হতে চলেছে। এতে বানরসহ বিভিন্ন প্রজাতীয় বন্য প্রাণী বিলুপ্তির পাশাপাশি প্রকৃতিক পরিবেশ হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, জায়গাটি ১১ গড় নামেও পরিচিত ছিলো। প্রথমে রাতের আঁধারে বিশাল বিশাল গজারী গাছগুলো কেটে নিয়ে আমের বাগান করা হয়েছিলো। পরে পর্যায়ক্রমে ওইসব পরিস্কার করে নিচুভূমিগুলো লেক ও উচুভূমিগুলো গ্রীণ অরণ্য পার্ক হিসেবে গড়ে তুলা হয়েছে। তাছাড়া পার্কের পশ্চিম পাশে আশপাডা পরিবেশ উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ সারা বৃদ্ধা আশ্রম গড়ে তুলেছেন। তারা জানান, বৃদ্ধা আশ্রম একটি লোক দেখানো ফর্মূলা। মূলত বনভূমি দখলেরই একটি পাঁয়তারা মাত্র। আর এরই জের হিসেবে আশ্রমের উত্তর পাশে বেশ কয়েকটি চালা দখলের উদ্দেশ্যে এবং তা ঢাকার বড় বড় পার্টির কাছে বিক্রির জন্য রাতের আঁধারে গাছগুলো কেটে নিয়ে বন উজাড় করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিশাল আকারের গজারী গাছগুলো কেটে নিয়ে আগুন লাগিয়ে নিশ্চিহৃ করার কৌশল অবলম্বন করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুর রশিদ জানান, ওই জায়গাটি অনেক আগেই পলমল কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দিয়েছি। এ ব্যাপারে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
এ ব্যাপারে ভালুকা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. রইছ উদ্দিন জানান, গজারী ও আকাশমনি গাছ কাঠার সংবাদ পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে কিছু ও গাছ কাটাার সরঞ্জামাধি জব্দ করে রেঞ্জ অফিসে নিয়ে এসেছেন। স্থানীয় প্রভাবশালী আব্দুর রশিদ ও মফিজসহ কতিপয় লোক এই কাজের সাথে জড়িত। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ময়মনসিংহ দক্ষিণ অঞ্চলের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. হারুন অর রশিদ সংরক্ষিত বন থেকে গজারী ও আকাশমনি গাছ কাটার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধিন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন