সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিখ্যাত গরুর বাজার নরসিংদীর পুটিয়ার হাটে গত শনিবার ব্যাপক সংখ্যক কোরবানীর গরু আমদানী হয়েছে। আমদানীকৃত গরুর মধ্যে ৮০ ভাগই ছিল দেশীয় জাতের ষাড় গরু। এসব ষাড় গরু বেশীরভাগই পালিত হয়েছে কৃষকের গোয়ালে। পুটিয়ার হাটে এটাই ছিল মৌসুমের প্রথম গরু আমদানী। তবে ক্রেতার সংখ্যা ছিল কম। আমদানী বেশী হলেও বেঁচাকেনা খুব একটা হয়নি বলে জানিয়েছে ইজারাদাররা। তারা জানিয়েছে ঈদের আরো প্রায় একপক্ষকাল বাকী। এখনই গরু বেঁচাকেনার সময় হয়নি। আজকের বাজারে গরু আমদানীকে তারা প্রাথমিক গরু প্রদর্শনী বলে আখ্যায়িত করেছে। অন্যান্য গরুর মধ্যে রয়েছে মিশ্র ফ্রিজিয়ান, শাহীওয়ালসহ পূর্ব ভারতীয় জাতোদ্ভূত কিছু ছোট আকৃতির গরু। গরু বিক্রেতারা জানিয়েছে, পুটিয়ার হাট দেশের একটি বিখ্যাত গরুর বাজার। প্রতি বছর এবাজারে কয়েক লাখ গরু বেঁচাকেনা হয়। প্রায় সমসংখ্যক মহিষ, ছাগল, ভেড়াও বিক্রি হয় এই হাটে। এসব গরু আমদানী হয় উত্তরবঙ্গের রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর, পাবনা, ময়মনসিংহ। পূর্বাঞ্চলের সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, কিশোরগঞ্জ এলাকা থেকে। সবচেয়ে বেশী গরু আমদানী হয় নরসিংদী সদর, রায়পুরা ও ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার চরাঞ্চল থেকে। আবার রাজধানী ঢাকাসহ আশেপাশের জেলাগুলোতে এ বাজার থেকেই পাইকারী হারে কোরবানীর গরু রফতানী করা হয়। ঢাকা শহরে রফতানীকৃত গরুর প্রায় ৪০ ভাগই পুটিয়ার বাজার থেকে প্রেরণ করা হয়। ইজারাদার এবং পাইকারী গরু ব্যবসায়ীরা জানিয়েছে, অন্যান্য বছর ভারত থেকে এই বাজারে প্রচুর সংখ্যক গরু আমদানী হতো। গত কয়েক বছর যাবত ভারত থেকে কোন গরু আমদানী হয়না। বর্তমানে যাকিছু ভারতীয় গরু পাওয়া যাচ্ছে তা সংখ্যায় খুবই অল্প। এসব গরু মধ্য বয়স থেকে কিনে ফেটেনিং প্রজেক্টে লালন পালন করে চড়া দামে বিক্রি করা হয়। তবে এসব গরু ক্রেতা খুবই কম। উচ্চ শ্রেণির লোকেরা এসব ভারতীয় জাতের বড় বড় গরু কিনে থাকে। সাধারণ ক্রেতা থেকে শুরু করে মধ্যবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্ত ও বিত্তশালীদের বেশীরভাগ ক্রেতাই দেশীয় গরু কিনতে বেশী পছন্দ করেন। মানুষের চাহিদা অনুযায়ীই দেশে দেশী গরু বেশী লালন পালন করা হচ্ছে। এর প্রমাণ পুটিয়ার হাটসহ গত কয়েকবছর ধরে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন বাজারে দেশী গরু বেশী আমদানী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন