বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ইপিজেডের কাজের পরিবেশ অত্যন্ত ভালো। শ্রমিকরা বাইরের শ্রমিকদের চেয়ে বেশি মজুরি ও অন্যান্য সুবিধা ভোগ করছে। ইপিজেডের শ্রমিকরা শ্রমিক কল্যাণ সংঘের (ডব্লিউডব্লিউএ) মাধ্যমে মালিকদের সাথে দর কষাকষির সুযোগ পাচ্ছে। আদমজী ইপিজেডে রেমি হোল্ডিংস লিমিটেড নামে একটি গার্মেন্টস কারখানার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন যেটি ইতিমধ্যে সর্বোচ্চ স্কোর অর্জন করে লিড প্লাটিনাম সনদ অর্জন করেছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ইপিজেডের শ্রমিকরা তাদের মজুরি, সুবিধা, কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ এবং নিরাপত্তা নিয়ে সন্তুষ্ট। ইপিজেডের কারখানাসমূহে কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মিজ মার্শা বার্নিকাটকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার করা সত্বেও সেদেশের বাজারে আমাদের পোষাক রপ্তানী বেড়েছে। তিনি যুক্তরাষ্টকে আমাদের দেশের পোষাকের শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের আহবান জানান। ইপিজেডের পরিবেশ বিষয়ে রাষ্ট্রদূতের উদ্দেশ্যে বলেন, আদমজী ইপিজেডের মতো আমাদের অন্যান্য ইপিজেডেও সুন্দর কর্ম পরিবেশ বিরাজমান। তিনি বেপজার কার্যক্রমের ভূয়শী প্রশংসা করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, অনেক বাধা আসছে তবুও বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে আমাদের গার্মেন্টস রপ্তানী ৫০ বিলিয়ন ডলার এবং জাতীয় মোট রপ্তানী ৬০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি মেজর জেনারেল মুহম্মদ হাবিবুর রহমান খান, এনডিসি, পিএসসি বলেন, দেশের ৮টি ইপিজেডের অধিকাংশের ভিত গড়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেপজার ভিশন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হওয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাত্র ২৩০৭.২৭ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত ইপিজেডসমূহ থেকে বেপজা বিগত কয়েক বছরে দেশের মোট রপ্তানী এবং বিনিয়োগ উভয় ক্ষেত্রেই প্রায় ২০% অবদান রেখেছে।
প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নের্তৃত্বে বিগত ৭ বছরে বেপজার সাফল্যের উল্লেখ করে বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, ২০০৯-১৫ সময়ে পূর্ববর্তী ৭ বছরের তুলনায় বেপজা বিনিয়োগে ১৪৭.৭৬ শতাংশ, রপ্তানীতে ১৮৭.৪৭ শতাংশ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ১২৩.২৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। বিগত ৭ বছরে ইপিজেডসমূহে ২,৩৩,১১৭ জন বাংলাদেশী নাগরিকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, ইপিজেডে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে ৬৫% নারী। বেপজা সর্বদাই একটি অনুকূল কর্ম পরিবেশ বজায় রাখতে সচেষ্ট, যেখানে শ্রমিকদের অধিকার, কল্যাণ ও নিরাপত্তা, চিকিৎসাসহ অন্যান্য কমপ্লায়েন্সকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মিজ মার্শা বার্নিকাট বলেন, রেমি হোল্ডিংস লিমিটেড সুন্দর ও সঠিক নিয়মে পরিচালিত হচ্ছে। এই কারখানার সামগ্রিক কার্যক্রম বিশেষ করে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা, শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধা, চিকিংসা ব্যবস্থা, ডে কেয়ার সেন্টার, ফ্যাক্টরির আন্তর্জাতিক মানের সবুজায়ন প্রক্রিয়া দেখে তিনি বলেন, ইপিজেডের কারখানাসমূহ অন্যদের জন্য আদর্শ। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, যদি দেশের সমস্ত শিল্প কারখানা ইপিজেডের এই কারখানার মতো পরিচালিত হয় তবে বাংলাদেশ অচিরেই উন্নত দেশে পরিণত হবে-এটা নিশ্চিত।
রেমি হোল্ডিংস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মিরান আলী বলেন, রেমি হোল্ডিংস লিমিটেড সর্বোচ্চ স্কোর অর্জন করে লিড প্লাটিনাম সনদ অর্জন করেছে। তিনি বলেন, আমরা ইপিজেডে এই ধরনের আরো কারখানা স্থাপন করতে আগ্রহী।
উদ্বোধন পর্ব শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্টদূতসহ অনান্যদের নিয়ে কারখানাটি ঘুরে দেখেন এবং সরাসরি শ্রমিকদের সাথে কথা বলেন। তারা কারখানার ডে-কেয়ার সেন্টার ও মেডিকেল সেন্টার পরিদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ’র সহ সভাপতি, বিশ্বখ্যাত পোষাক ক্রেতা কোম্পানির সম্মানিত প্রতিনিধিগণ, বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, আদমজী ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক আশরাফুল কবির, বেপজার মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) নাজমা বিন্তে আলমগীর, উপ-মহাব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা) মেজর সাজ্জাদ হোসেন খানসহ আদমজী ইপিজেড এবং রেমি হোল্ডিং লিমিটেডের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন