শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

মিয়ানমার আবার রক্তাক্ত, একদিনেই নিহত ৩৯

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ মার্চ, ২০২১, ৯:০৯ এএম

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে গিয়ে গতকাল (রোববার) একদিনেই নিহত হয়েছেন ৩৯ জন। রোববার (১৪ মার্চ) দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে লন্ডন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।

গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকারকে উৎখাত করে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর গতকালই সবচেয়ে বেশি মানুষের প্রাণহানী ঘটেছে। সেক্ষেত্রে গতকাল ছিল মিয়ানমারে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন।
খবরে বলা হয়েছে, শুধু হ্লাইংথায়ায় ২২ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। অ্যাডভোকেসি গ্রুপ অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারসের (এএপিপি) বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এদের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া দেশটির অন্যান্য শহরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন ১৬ জন। আর বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন একজন পুলিশ সদস্যও।
দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, শিল্প এলাকা হ্লাইংথায়ায় চারটি গার্মেন্টস কারখানা ও একটি সার কারখানায় আগুন দেওয়া হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি সেদিকে যেতে চাইলে বিক্ষোভকারীরা বাধা দেয়। প্রায় দুই হাজার বিক্ষোভকারী ফায়ার সার্ভিসের পথ বন্ধ করে দেয়।
চিকিৎসাকর্মীদের বরাতে খবরে বলা হয়েছে, নিরাপত্তাবাহিনী রাবার বুলেট ও তাজা গুলি ছোড়ে। এতে অন্তত ৩৯ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার নাউ ওয়েবসাইট। তবে স্থানীয় অপর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে নিহতের সংখ্যা আরও বেশি বলে দাবি করা হচ্ছে।
এর আগে গত ৩ মার্চ একদিনে ১৮ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন। এতদিন জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে একদিনে ওটাই ছিল সর্বোচ্চ প্রাণহানির ঘটনা। সব মিলিয়ে রোববার পর্যন্ত জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে ১২৬ জন প্রাণ হারালেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী।
গত মাসে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারে চলমান আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ১২৬ জনের বেশি মানুষের নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্স। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী।
এদিকে চীনের কয়েকটি কারখানায় হামলার খবর পেয়ে মিয়ানমারকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে বলেছে বেইজিং। চীনের দূতাবাস বলছে, তাদের কারখানাগুলোতে অনেক চীনা কর্মী আহত হয়েছেন। কেউ কেউ আটকা পড়েছেন। তাদের নিরাপত্তা দিতে ও চীনের সম্পদ রক্ষার আহ্বান জানায় দূতাবাস।
চীনকে মিয়ানমারের সেনা সরকারের সমর্থক হিসেবে ভাবা হয়। সামরিক অভ্যুত্থান ও গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সুচিকে আটকের ঘটনাকে ‘মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদল’ বলে উল্লেখ করেছিল চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিনহুয়া।
মিয়ানমারে ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। দেশটির নেত্রী অং সান সু চিসহ শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতিকদের বন্দী করা হয়। এর কয়েকদিন পরই জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। শুরুতে শান্তিপূর্ণ থাকলেও ধীরে ধীরে তা রক্তক্ষয়ী সহিংসতায় রূপ নেয়। সূত্র : রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Shamsulalam ১৫ মার্চ, ২০২১, ১১:১১ এএম says : 0
যেমন কর্ম তেমন ফল আল্লাহ তাআলা সবাইকে হেফাজত করুন আমীন
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন