পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারে আবারও সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৫৮ গ্রামবাসীর প্রাণ কেড়ে নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকা তিলাবেরিতে এই ঘটনা ঘটেছে। মালি সীমান্তে এ রক্তক্ষয়ী সংঘাত হয় বলে জানায় দেশটির সরকার। কর্তৃপক্ষ জানায়, চারটি গাড়িতে করে তিলাবেরির একটি বাজারে উপস্থিত হয় হামলাকারীরা। ছুড়তে শুরু করে এলোপাতাড়ি গুলি। আগুন ধরে যায় দু’টি গাড়িতে। এখনও হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনো গোষ্ঠী। এই মুহ‚র্তে দু’টি সশস্ত্র জিহাদি গ্রæপ সক্রিয় নাইজারে। এক দলের প্রভাব দেশের পশ্চিমাঞ্চলে, আরেক অংশের প্রভাব দক্ষিণ প‚র্বাঞ্চলে। নাইজার সরকারের মুখপাত্র আব্দুররহমান জাকারিয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, নিহতরা সবাই তিলাবেরি শহরের সংলগ্ন শিনাগোদের এবং দারে দে গ্রামের বাসিন্দা। মঙ্গলবার সাপ্তাহিক বাজারে কেনাকাটা ও উৎপাদিত কৃষিপণ্য বিক্রয় করতে তারা তিলাবেরি শহরে এসেছিলেন। স্থানীয় সময় বিকেলের দিকে গ্রামবাসীরা যখন বাড়ির পথে রওনা হন, পথিমধ্যে চারটি যাত্রীবাহী বাস রোধ করে তাদের নামতে বাধ্য করে সন্ত্রাসীরা। তারপর তাদের মধ্য থেকে ৫৮ জনকে আলাদা করা হয়। বিবৃতিতে জাকারিয়া বলেন, ‘আলাদা করার পর হতভাগ্য ওই মানুষদের সার বেঁধে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এসময় অন্যান্য যাত্রীদের কাছ থেকে অর্থ ও পণ্যসামগ্রীও লুটে নিয়েছে তারা।’ নাইজারের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকা তিলাবেরি ম‚লত একটি সীমান্ত অঞ্চল। নাইজারের দুই প্রতিবেশী দেশ মালি ও বুরকিনা ফাসোর সীমান্ত এলাকায় এই এলাকাটির অবস্থান। স¤প্রতি তিলাবেরিতে ব্যাপকভাবে বেড়েছে সন্ত্রাসী তৎপরতা যা দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমের নেতৃত্বাধীন সরকারের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে। সরকারের পক্ষ থেকে যদিও বলা হচ্ছে, মঙ্গলবারের হত্যাকাÐের জন্য আইএস সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা দায়ী, তবে এখন পর্যন্ত হামলার দায় স্বীকার করেনি কেউ। দেশটির নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, তিলাবেরি এলাকায় জঙ্গিগোষ্ঠী ছাড়াও নৃতাত্তি¡ক বা জাতিগোষ্ঠীভিত্তিক একাধিক সন্ত্রাসী সংগঠন সক্রিয় আছে। চলতি বছর ২ জানুয়ারি তিলাবেরিতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন ১০০ মানুষ। এর আগে ২০২০ এবং ২০১৯ সালে ওই এলাকায় নাইজার সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। ২০২০ সালের হামলায় নিহত হয়েছিলেন ৭০ জন এবং ২০১৯ সালে নিহত হয়েছিলেন ৮৯ জন। আল-জাজিরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন