বরগুনা জেলায় গত কয়েকদিন ধরে ডায়রিয়ার প্রকোপ ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারি হিসেব মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় এ জেলায় আক্রান্ত হয়েছে ১২৮ জন। গত এক সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৯৫ জন। এ পর্যন্ত আক্রান্ত ৩ হাজার ৪৪ জন। চিকিৎসা কেন্দ্রে জায়গা, জনবল ও প্রয়োজনীয় স্যালাইন সঙ্কট তীব্রতর পর্যায়ে পৌঁছেছে। হাসপাতালের মেঝেতেও ঠাঁই হচ্ছে না রোগীদের।
বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় বরগুনা সদরে ৭৩, আমতলী-তালতলীতে ৩৪, পাথরঘাটায় ১৩, বেতাগীতে ৬ ও বামনায় ২ জন আক্রান্ত হয়েছে। গত এক সপ্তাহে আক্রান্ত হয়েছে বরগুনা সদরে ৪৫৭, আমতলী-তালতলীতে ২৯৪, পাথরঘাটায় ৭৫, বেতাগীতে ৪৭ ও বামনায় ২২ জন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সোহরাব উদ্দিন জানান, প্রতিদিন গড়ে ২৫-৩০ জন করে রোগী ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে। ডায়রিয়া ওয়ার্ড ছাড়িয়ে মেঝেতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। ডায়রিয়ার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে সমগ্র জেলায়। প্রয়োজনীয় ওষুধ ও স্থান সঙ্কট রয়েছে। তারা আরও জানান, একদিকে যেমন আইভি স্যালাইন সঙ্কট অন্যদিকে স্থানীয়ভাবে রোগীরা মেঝেতে আশ্রয় নিয়েছে। হঠাৎ করে ডায়রিয়া রোগী বেড়ে যাবার ফলে ব্যাহত হচ্ছে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম।
ডায়রিয়ায় আক্রান্ত আ. খালেক বলেন, হাসপাতালের যেই অবস্থা এতে আরও বেশি দুর্বল হওয়া লাগে। চারদিক থেকে আসে দুর্গন্ধ। এছাড়া পরিবেশও নোংরা। তিনি আরও বলেন, দুইটি মাত্র পায়খানা রয়েছে। তা ব্যবহার করার মত নয়। বাইরে থেকে স্যালাইন এনে দিতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের জনৈক নার্স বলেন, ‘ডায়রিয়ার এমন প্রকোপ আগে দেখিনি। হাসপাতালে স্যালাইনের সঙ্কট রয়েছে। স্থান সঙ্কুলানও হচ্ছে না। জনবল সঙ্কটের মধ্যে একদিকে করোনায় আক্রান্তদের অন্যদিকে সাধারণ রোগীদেরও সেবা দিতে হচ্ছে।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান বলেন, দূষিত পানি, খোলা খাবার আর গরমের কারণেই হঠাৎ করে ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। নিরাপদ পানি ও খাবারের ক্ষেত্রে মানুষ সচেতন না হলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন