সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

সময় নিয়ে সুযোগ হারাল বাংলাদেশ!

ইমরান মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১২:০১ এএম

১৯৯৭ সালে কলম্বো টেস্টে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ হওয়ার আধঘণ্টা আগে ৮ উইকেটে ৫৩৭ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। এরপর শ্রীলঙ্কা বাকি তিন দিন ব্যাট করে ৬ উইকেটে ৯৫২ রানের বিশ্বরেকর্ড গড়ে নিজেদের প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে। ততক্ষণে টেস্টের ভাগ্যও নির্ধারিত-ম্যাড়মেড়ে ঘুমপাড়ানি ড্র। পাল্লেকেলে টেস্টেও যদি এমন কিছু হয়! কেননা, রানের পাহাড় মাথায় নিয়ে শ্রীলঙ্কা ম্যাচ বাঁচাতে যত বেশি সময় সম্ভব ব্যাট করতে চাইবে। আগের দিন আলোক স্বল্পতায় আগেভাগে শেষ হওয়া দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে গতকাল খেলা শুরু হয়েছে ১৫ মিনিট আগে। দুই দলের বোলাররা হাত ঘুরিয়েছে ৯১ ওভার। স্বাগতিকরা দিন পার করেছে ৩ উইকেটে ২২৯ রান নিয়ে। লাহিরু থিরিমান্নের ফিফটির (৫৮) পর ৮৫ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন করুনারত্নে। তার সঙ্গী ধনঞ্জয়ার রান ২৬। অলৌকিক কিছু না ঘটলেই তো টেস্টের ভাগ্য মোটামুটি নির্ধারিত!
সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রয়োজনের চেয়ে বেশি সময় ব্যাট করেছে কি না, এই প্রশ্ন উঠছে। কিংবা তৃতীয় দিনে মন্থর ব্যাট করেছে কি না, সে প্রশ্ন তোলারও অবকাশ আছে। এদিন ১৮ ওভার ব্যাট করে মাত্র ৬৭ রান তুলেছে বাংলাদেশ। ৩ উইকেট পড়লেও বল এমন আহামরি ভালো হয়নি। এমনকি দ্বিতীয় দিনের উদাহরণও টানা যায়। প্রথম দিনে ৯০ ওভার খেলে ২ উইকেটে ৩০২ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। বৃষ্টির কারণে দ্বিতীয় দিনে খেলা হয়েছে ৬৫ ওভার। এর মধ্যে রান উঠেছে ১৭২। ওভারপ্রতি রান তোলার গড় ২.৬৪। সাধারণত কোনো দল উইকেট হাতে রেখে তিন শ পেরিয়ে যাওয়ার পর রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করে। সেখানে দ্বিতীয় দিনেও এমন মন্থর ব্যাটিং, তাও পাল্লেকেলের পাটা উইকেটে!
৬৮ রানে (১৫৬ বল) অপরাজিত থেকে মাঠছাড়া মুশফিক তৃতীয় দিনে ৫৫ বল খেলে তুলেছেন মাত্র ২৭ রান। বোলারদের আরও বেশি সময় করে দিতে দ্রুত রান না তোলায় এই ব্যাটিংকে খানিকটা নেতিবাচক মনে হওয়াই স্বাভাবিক।
তবে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে যে দলগতভাবে ভালো ব্যাট করেছে, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। টেস্টে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো নিজেদের কোনো ইনিংসে পাঁচ ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে ন্য‚নতম ফিফটির দেখা পেল বাংলাদেশ। পাল্লেকেলেতে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করেন নাজমুল হোসেন ও মুমিনুল। ফিফটি এসেছে তামিম ইকবাল, লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে।
টেস্টে বাংলাদেশ এর আগে সর্বশেষ এমন কিছু দেখেছে ২০১৭ সালে ওয়েলিংটনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সেই টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৮ উইকেটে ৫৯৫ রান তুলেও হেরেছিল বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে সর্বোচ্চ রান তুলেও হারের এটি বিশ্বরেকর্ড। তবে প্রথম এমন কিছু (ন্য‚নতম পাঁচ ফিফটি) দেখা গেছে ২০১২ সালে ঢাকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্টে। সেই টেস্টেও নিজেদের প্রথম ইনিংসে সাড়ে পাঁচ শ-র (৫৫৬) বেশি রান তুলে হেরেছিল বাংলাদেশ। তাহলে পাল্লেকেলেতেও কি... ওসব অলক্ষুণে কথা থাক, ক্রিকেট এমনিতেই গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা!
তবে দুই ইনিংসে যেকোনো একটিতে ন্য‚নতম ৫০০ রান তুলে বাংলাদেশ শুধু ওই দুটি টেস্টেই হেরেছে (২০১২ ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ২০১৭ নিউজিল্যান্ড)। এর আগে বাংলাদেশ টেস্টে যে ১০ ইনিংসে ন্য‚নতম ৫০০ রান তুলেছে, তার মধ্যে ওই দুটি ম্যাচেই শুধু হেরেছে। ড্র চারটি ২০১৩ সালে গলে শ্রীলঙ্কা, সে বছরই চট্টগ্রামে নিউজিল্যান্ড, ২০১৫ সালে খুলনায় পাকিস্তান ও ২০১৮ সালে চট্টগ্রামে শ্রীলঙ্কা। যে চার জয়, তার মধ্যে তিনটি এসেছে সর্বশেষ ন্য‚নতম পাঁচ শ-র দেখা পাওয়া ম্যাচে।
২০১৪ সালে চট্টগ্রাম টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৫০৩ রান তুলে পরে ১৮৬ রানের জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। মাঝে চার বছর পর ২০১৮ থেকে ২০২০ এই দুই বছরে তিন ম্যাচে যেকোনো ইনিংসে পাঁচ শ রান তোলার পর জিতেছে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে ঢাকায় জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে, এরপর ২০২০ সালে ঢাকাতেই প্রতিপক্ষ ছিল সেই জিম্বাবুয়ে। কিন্তু একেক ম্যাচের গতি-প্রকৃতি ছিল একেক রকম। পাল্লেকেলেতে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে সাড়ে পাঁচ শতাধিক তোলার পরও যেমন মনে হচ্ছে, অলৌকিক কিছু না ঘটলে এই টেস্ট ড্র হবে!
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ৫৪১/৭ ডি. (নাজমুল ১৬৩, মুমিনুল ১২৭, তামিম ৯০, মুশফিক ৬৮*, লিটন ৫০; ফার্নান্দো ৪/৯৬, লাকমল ১/৮১)। শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস : ২২৯/৩ (করুনারত্নে ৮৫*, থিরিমান্নে ৫৮, ধনঞ্জয়া ২৬*; তাসকিন ১/৩৫, তাইজুল ১/৫৬, মিরাজ ১/৬০, জায়েদ ০/২৫, ইবাদত ০/৪৪)। তৃতীয় দিন শেষে

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Habibul Bashar ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১:২৬ এএম says : 0
Yes, he wasted so much time.
Total Reply(0)
Mir Irfan Hossain ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১:২৬ এএম says : 0
তামিমরা যখন ডেড পিচে ব্যাটিং করে যাচ্ছিল, তখন কত কাব্য ... এখন শ্রীলংকার পালা, একটু সহ্য করুন
Total Reply(0)
Farjana Yeasmin Moni ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১:২৯ এএম says : 0
হতাশ হ‌ওয়ার কিছু নেই...আশা করি এই ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়ে টাইগাররা আগামী ম্যাচে আপন শক্তিতে জ্বলে উঠবে।
Total Reply(0)
Jahangir Hossain ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১:২৯ এএম says : 0
টিবিতে খেলার খবর দেখলো তো মনে হয়, এই টিমের ছেয়ে ভাল কোন দলই হতে পারে না।বিশেষ করে ৭১ টিবি!!!!কত রকম ছন্দে ভরা হাওয়া দেয়।
Total Reply(0)
Masud Mohd ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩০ এএম says : 0
ICC কে অনুরোধ করছি বাংলাদেশের সব খেলা মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে খেলার অনুমতি দেওয়া জন্য!
Total Reply(0)
FT Jahangir ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ১:৩০ এএম says : 0
হতাশা ছাড়া আর কিছুই নেই খুবই লজ্জা জনক। তারপরেও আগামী ম্যাচ গুলো ভালো পারফরম্যান্স করবে সেই শুভকামনা রইল টাইগারদের জন্য
Total Reply(0)
Md.Monir ২৪ এপ্রিল, ২০২১, ৯:৩৪ এএম says : 0
বোড এর সবাইকে ধন্যবাদ দিতে হবে।ভাল রেখে খারাপ খেলোয়াড় নেওয়ার জন্য।
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন