ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যকার চলমান সংঘর্ষ থামাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বৈঠকে বসতে যাচ্ছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। যদিও সোমবার হওয়া ওই বৈঠকের পর কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়া হয়নি। আগামী রবিবার প্রকাশ্যে এই ইস্যুতে আলোচনা করবেন পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলো। তবে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তিতে এই বৈঠকের আয়োজন ভেস্তে যায়। ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ মিত্র ওই সময় ভার্চুয়াল বৈঠকের পক্ষে মত দেয়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীদের মধ্যে সংঘাত শুক্রবার পঞ্চম দিনে গড়িয়েছে। গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে বোমা বর্ষণ এবং বিমান হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। আর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীরা রকেট ছুড়ে হামলার জবাব দিয়ে যাচ্ছে।
১৫ সদস্যের নিরাপত্তা কাউন্সিল গত সপ্তাহে দুইবার ব্যক্তিগতভাবে ফিলিস্তিন ইস্যুতে আলোচনা করেছে। তবে প্রকাশ্য কোনও বিবৃতি দিতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। সম্মতির ভিত্তিতে এসব বিবৃতি প্রদান করতে পারে পরিষদ। তবে এই বিবৃতি উত্তেজনা নিরসনে কাজে আসবে বলে মনে করছে না যুক্তরাষ্ট্র।
গাজার সহিংসতা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে ওই অঞ্চলে দূত পাঠাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত লিন্ডা থমাস-গ্রিনফিল্ড এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘উত্তেজনা নিরসনের চেষ্টায় সর্বোচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক তৎপরতায় সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকবে যুক্তরাষ্ট্র।’
তবে মিশর, কাতার এবং জাতিসংঘ ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামীদের মধ্যে যুদ্ধবিরতির উদ্যোগ নিলেও তাতে দৃশ্যত কোনও অগ্রগতি হয়নি।
জানা গেছে, এই আলোচনার জন্য প্রথম খসড়া প্রস্তাব তৈরি করেছিল নরওয়ে। ওই প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করেই সিদ্ধান্ত হতে পারে। নরওয়ের এই খসড়া প্রস্তাবে সমর্থন দিয়েছে তিউনিসিয়া ও চীন। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে সংঘর্ষের শুরু চলতি সপ্তাহের শুরুতে। আল-আকসায় পবিত্র জুমাতুল বিদা আদায়কে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত। বলা হচ্ছে, বিগত কয়েক বছরের মধ্যে ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় সংঘর্ষের ঘটনা।
এ সংঘর্ষের পর ফিলিস্তিন রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৭০০ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। জাতিসংঘের মিশনে যুক্ত একজন কূটনীতিক বলেন, উত্তেজনা প্রশমনে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের যে কোনো পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র ওতপ্রোতভাবে কাজ করছে। এ বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সলিভেন ইসরায়েলের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। এই আলাপকালে ফিলিস্তিনিদের বসতি উচ্ছেদে ইসরায়েলের পদক্ষেপ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন সলিভেন।
এদিকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এটা ইসরায়েলের ‘অযৌক্তিক এবং অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ’ বলে মন্তব্য করে এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী বারবার আল-আকসা মসজিদে সহিংস অভিযানের সময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে অপরিকল্পিত এবং বেআইনিভাবে শক্তি মোতায়েন করেছে এবং শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের ওপর অকারণে হামলা চালিয়েছে। সূত্র : রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন