ঈদের ছুটিতে দক্ষিণাঞ্চলে নমুনা পরিক্ষার হ্রাসের কারণে করোনা সনাক্তের সংখ্যাও গত ৪৮ ঘন্টায় যথেষ্ঠ কমেছে। পাশাপাশি ছুটির কারণে চিকিৎসা লাভের সম্ভবনা কম বলে ধারনা থেকে আক্রান্তদের অনেকেই হাসপাতালে না যাওয়ায় এসময়ে দক্ষিণাঞ্চলের ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা কিছুটা কমে যাবার কারণ বলে মনে করছেন চিকিৎসকগন। দক্ষিনাঞ্চলে এপর্যন্ত সরকারী হিসেবে করোনা সংক্রমন ও ডায়রিয়া আক্রান্ত প্রায় ৭০ হাজার মানুষের মধ্যে প্রায় ৩শ জনের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগ, শণিবার দুপুরের পূর্ববর্তি ৪৮ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ৪১ জনের করোনা সংক্রমনের পাশাপাশি ৮শ জনের ডায়রিয়া আক্রান্তের কথা জানিয়েছে। এসময়ে মাত্র ১৯৩ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৪১ জনের দেহে করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়। দক্ষিণাঞ্চলে এ পর্যন্ত ৯৯ হাজার ৫৭৪ জনের নমুনা পরিক্ষায় ১৫ হাজার ৪৫ জনের দেহে করোনা পজিটিভ সনাক্ত হয়েছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে। এরমধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৭৩ জনের। এ অঞ্চলে এখনো করোনা সংক্রমনে মৃত্যু হার ১.৮২%। আর করোনা পজিটিভ সনাক্তের হার ১৫.১৩%।
আর চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সনাক্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪২৬ জনে। এসময়ে মারা গেছেন ৯ জন। গত এপ্রিলে এ আঞ্চলে সনাক্তের সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ২শ । এসময়ে মৃত্যু হয় ৫০ জনের। যা ছিল গত বছর মার্চে দক্ষিনাঞ্চলে করোনা সনাক্তের পরে সর্বোচ্চ সংক্রমন। দক্ষিনাঞ্চলের ৬ জেলার মধ্যে এখনো বরিশাল মহানগরী করোনার হটস্পট হয়ে আছে। এ মহানগরীতে প্রায় ৬ হাজার সহ বরিশাল জেলায় এপর্যন্ত ৬ হাজার ৫৮৬ জন আক্রান্তের মধ্যে ১১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার প্রায় ৬৬ জনই বরিশাল মহানগরীতে। এ অঞ্চলের দ্বিতীয় সর্বধীক সংক্রমিত পটুয়াখালীত এ পর্যন্ত ২ হাজার ১৮৪ জন করোনা সংক্রমনের শিকার হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৫০ জনের।
দ্বীপজেলা ভোলাতে এপর্যন্ত ১ হাজার ৮৪০ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ২৫ জন। পিরোজপুরে ১ হাজার ৬২২ জন আক্রান্তের মধ্যে ৩১ জন মারা গেছেন। দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট জেলা ঝালকাঠীতে আক্রান্ত ১ হাজার ৩০১ জনের মধ্যে মারা গেছেন ২৬ জন। আর বরগুনাতে আক্রান্ত ১ হাজার ২৪২ জনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের।
এদিকে গত ৪৮ ঘন্টায় সরকারী হিসেবে দক্ষিনাঞ্চলে আরো প্রায় ৮শ মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ জনিয়েছে। ঈদের ছুটিতে সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসা লাভের অনিশ্চয়তার পরেও শুক্রবার দক্ষিণাঞ্চলে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা হাসপাতালে ৩৯২ জন ডায়রিয়া আক্রান্তের খবর জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
এনিয়ে সরকারী হিসেবেই দক্ষিণাঞ্চলে মোট ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্য দাড়িয়েছে প্রায় ৫৩ হাজারে। মারা গেছেন ২১ জন। দক্ষিণাঞ্চলে এখনো সর্বাধীক আক্রান্ত জেলা ভোলাতে সংখ্যাটা দাড়িয়েছে ১৪ হাজার ১১ জনে। জেলাটিতে ডায়রিয়ায় মারা গেছেন দুজন। পটুয়াখালীতে আক্রান্ত প্রায় ১১ হাজারের মধ্যে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। বরিশাল মহানগরী সহ জেলাতে আক্রান্ত ৭ হাজার ৫০ জনের মধ্যে ইতোমধ্যে ৬ জন মারা গেছেন। বরগুনাতে আক্রান্ত ৮ হাজার ২৩৬ জনের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। পিরোজপুরেও আক্রন্তের সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার। ছোট জেলা ঝালকাঠীতেও আক্রান্তের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৫ হাজার ৮২৯। তবে এদুটি জেলায় ডায়রিয়ায় কোন মৃত্যু সংবাদ নেই এখনো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন