ঈদ উপলক্ষে নাড়ির টানে গ্রামে ছুটে চলা কর্মজীবী মানুষগুলো তাদের কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে শনিবার (১৫ মে) সকাল থেকে ঢাকামুখী যাত্রীর চাপ কম থাকলেও আজ রোববার (১৬ মে) সকাল থেকে চাপ বাড়তে শুরু করেছে। যে গতিতে তারা ঘরে ফেরেন, আজ সকাল থেকে ঠিক সেই গতিতে ফিরছেন কর্মস্থলে। রীতিমতো নৌরুটগুলোতে মানুষের ঢল শুরু হয়েছে। একই সাথে মহাসড়কগুলোতেও গাড়ি চাপ বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর শিথিলতার সুযোগ নিয়ে মহাসড়কগুলোতে দূরপাল্লার বাস ও চলছে যাত্রী নিয়ে।
রোববার সকালে দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার অন্যতম প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটের প্রতিটি ফেরিতে যাত্রী ও যানবাহনের ভিড় দেখা গেছে। পাশাপাশি যারা ঈদপূর্ব ছুটি পাননি তাদের অনেককেই আবার বাড়িতে ফিরতে দেখা গেছে। ফেরি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যাত্রীর চাপ থাকলেও স্বাভাবিক পর্যায়ে রয়েছে। যাত্রীদের কোনও ধরনের দুর্ভোগ নেই। ঘাটে পৌঁছে সহজেই ফেরি পার হতে পারছেন মানুষ। ফেরি চলাচলও স্বাভাবিক রয়েছে। তবে বন্ধ রয়েছে লঞ্চ চলাচল।
ফেরিঘাটে আসা কয়েকজন যাত্রী জানান, ঈদের ছুটিতে বাড়ি যাওয়ার সময় সড়ক ও ফেরিঘাটে তাদের চরম হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে। এ জন্য সেই ঝক্কি-ঝামেলা এড়াতে ঈদের একদিন পর কর্মস্থলে রওনা হয়েছেন।
সরকারের বিধিনিষেধের কারণে দূরপাল্লার বাস না চলায় সড়ক-মহাসড়কে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে যাত্রীদের। জেলার অভ্যন্তরীণ গণপরিবহন, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, সিএনজি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে করে তারা ঘাটে পৌঁছেছেন। ঘাট পার হয়ে আবারও একই কায়দায় কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে ব্রেক জার্নিতে (ভেঙে ভেঙে) কর্মস্থলে পৌঁছাতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা অঞ্চলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ভারপ্রাপ্ত) মো. জিল্লুর রহমান বলেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ঈদের আগে ১৭টি ফেরি চলাচল করছিল। এর মধ্যে একটি ফেরি শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে ফিরে গেছে। বর্তমানে এই নৌরুটে ছোট বড় ১৬টি ফেরি চলাচল করছে। ছুটি শেষে যাত্রী ও ছোট যানবাহনের চাপ কিছুটা বাড়লেও পারাপারে কোনও অসুবিধা হচ্ছে না।
অন্যদিকে, দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার শিমুলিয়া প্রান্তে রাজধানীমুখী ঈদফেরত যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে।
রোববার (১৬ মে) সকালে বাংলাবাজার থেকে ছেড়ে আসা ফেরিগুলোতে যানবাহনের চেয়ে যাত্রীদের উপস্থিতি বেশি লক্ষ্য করা গেছে। পাশাপাশি রাজধানী থেকেও কিছু যাত্রীকে দক্ষিণাঞ্চলের দিকে যাত্রা করতে দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসি'র শিমুলিয়া ঘাটের উপ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শফিকুল ইসলাম জানান, সকাল থেকে এই নৌ রুটে ১৭ ফেরি চলাচল করছে। প্রত্যেক ফেরিতে বিপুল পরিমাণ যাত্রী এবং যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। তবে অন্যান্য নৌ যান বন্ধ থাকায় বাংলাবাজার ঘাট থেকে কর্মস্থলে ফিরতে চাওয়া যাত্রীদের ভিড় বেশি লক্ষ্য করা গেছে।
শিমুলিয়া ফেরি ঘাটের ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) হিলাল উদ্দিন বলেন, ঘাট এলাকায় বর্তমানে পারাপারের অপেক্ষায় ছোট-বড় মিলিয়ে অল্পসংখ্যক যানবাহন রয়েছে। তবে পর্যাপ্ত ফেরি রয়েছে। তাই কোন যানবাহন কিংবা যাত্রীদের শিমুলিয়া প্রান্তে এসে অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে না। তারা বিভিন্নভাবে ভেঙ্গে ভেঙ্গে এলেও নির্বিঘেœ ফেরি পার হয়ে বাংলাবাজার যেতে পারছে। পাশাপাশি বাংলাবাজার থেকে যারা আসছে তার গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে ছোট ছোট যানবাহন যোগে স্ব-স্ব গন্তব্যে চলে যাচ্ছেন অনায়াসে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন