ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিসি) অভিযোগ করেছেন গাজার বিধ্বস্ত এক বহুতল ভবন মালিক। আলজাজিরা, এএফপিসহ ৩৩টি গণমাধ্যমের দপ্তরও ছিল ওই ভবনে। জালা টাওয়ার নামে বিখ্যাত ১৩ তলা ভবনটি ১৫ মে গুড়িয়ে দেয় দখলদার ইসরায়েল। দেশটির পক্ষ থেকে বলা হয়, ভবনটিকে সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। তবে ভবনমালিক শুরু থেকেই এ অভিযোগ পুরোপুরি নাকচ করে আসছেন।
ইসরায়েলের এ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নাশকতাকে আন্তর্জাতিক আইনের ‘যুদ্ধাপরাধ’ ধারায় আইসিসিতে মামলা করেছেন ভবন মালিক জাওয়াদ মেহদি। সংশ্লিষ্ট আইনজীবীর বরাত দিয়ে শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে এএফপি।
গত সপ্তাহে আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি বলেছিলেন, গাজার শাসক দল হামাস ও সশস্ত্র অন্য সংগঠনগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের সংঘর্ষে ‘বেশ কিছু অপরাধ’ সংঘটন হতে পারে বলে মন্তব্য করেছিলেন আইসিসির প্রধান কৌঁসুলি। তার এ বক্তব্যের রেশ না কাটতেই আইসিসিতে অভিযোগ নিয়ে হাজির হলেন টাওয়ার-মালিক। অভিযোগ-সংবলিত সে নথির একটি কপি হাতে পেয়েছে এএফপি।
টাওয়ারের মালিকের আইনজীবী গিলস ডেভার্স এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ওই ভবনের ফিলিস্তিনি মালিক তার আইনজীবীদের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ দেয়ার অনুমোদন দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘সশস্ত্র প্রতিরোধযোদ্ধাদের একটি দল বা সামরিক সরঞ্জাম থাকায় টাওয়ারটি ধ্বংস করা হতে পারে বলে আমরা অনেকবার শুনেছি। কিন্তু ঘটনা পর্যালোচনা করে আমরা বিষয়টি পুরোপুরি নাকচ করছি।’
শুক্রবার অভিযোগটি ই-মেইলের মাধ্যমে আইসিসির দপ্তরে পাঠানোর কথা। ডেভারস আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন বলছে, আপনি যুদ্ধের সময় কোনো বেসামরিক জানমালের ক্ষতি করতে পারবেন না, যদি সেখানে কোনো সামরিক সরঞ্জামাদি না থাকে।’
জাওয়াদ মেহদি জানান, ইসরায়েলের একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা হামলার এক ঘণ্টা আগে তাকে ১৩ তলা ভবনটিতে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হবে বলে সতর্ক করেছিলেন। তারা তা বিশ্বাস করেননি। এক ঘণ্টা পরই ভবনটি ধ্বংস করে দেয় সন্ত্রাসীরা। তবে আইসিসির প্রসিকিউটরের কাছে দায়েরকৃত অভিযোগের বিষয়টি আমলে নেওয়া বা না নেওয়ার ব্যাপারে তিনি সম্পূর্ণ স্বাধীন।
আশাবাদী হওয়ার মতো বিষয়, আইসিসি ২০১৪ সালে ইসরায়েল ও ফিনিস্তিনের মধ্যে সংঘটিত যুদ্ধের তদন্ত শুরু করেছে গত মার্চে। ইসরায়েল এ সংস্থাটির সদস্য না হলেও, ২০১৫ সাল থেকে সংস্থাটিতে সম্পৃক্ত হয়েছে।
আইসিসির প্রসিকিউটর বেনসুডা বলেন, গত সপ্তাহে গাজা ও পশ্চিম তীরে সংঘটিত ক্রমবর্ধমান সহিংস ঘটনাগুলোর বিষয়ে সংস্থাটির কর্তাব্যক্তিরা কড়া নজর রেখে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সূত্র : এএফপি
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন