পবিত্র মাহে রমজানের মধ্যে গত সোমবার (১০ মে) থেকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা শুরু করে দখলদার ইসরায়েল। অবশেষে এগারো দিনের এই বর্বরোচিত হামলার অবসান ঘটলো। শুক্রবার থেকে কার্যকর হলো যুদ্ধবিরতি।
ইসরায়েল ও হামাস ; দুই পক্ষই এই যুদ্ধবিরতিকে নিজেদের জয় দাবি করেছে। নজিরবিহীন সামরিক সাফল্য দাবি করে টুইট করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। অন্যদিকে হামাস বলছে, এটি ফিলিস্তিনের মানুষের কাছে জয়ের মতো এবং ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহুর একটি পরাজয়।
এদিকে যুদ্ধবিরতি শুরুর পর পরই ফিলিস্তিনিরা গাজার রাস্তায় নেমে আসে। বিজয় উল্লাস শুরু করে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসরায়েল-হামাসের এই যুদ্ধবিরতিকে নানাভাবে দেখছেন নেটিজেনরা। কেউ এটাকে হামাস বা ফিলিস্তিনি সংগ্রামী মানুষের সাফল্য মনে করছেন। আবার কেউ কেউ মনে করছেন এটা ইসরায়েলী কূটকৌশল। তবে সবাই বলছেন একটা স্থায়ী সমাধানের কথা।
তুষার আলী নামে একজন ফেইসবুকে লিখেন, ‘আল্লাহর শুকরিয়া! যুদ্ধবিরতিতে হামাসের বিজয়! এ বিজয় ইসলামের, এ বিজয় শহীদের রক্তের। এ বিজয় ফিলিস্তিনের নারী-শিশুর ত্যাগ এবং কুরবানীর। সারা পৃথিবীতে ইসলামের বিজয় অনিবার্য, ইনশাআল্লাহ।’
এমডি আল আমিন লিখেন, ‘ইসরাইলের উদ্দেশ্য ছিলো ফিলিস্তিনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলো দখল করা। কিন্তু তারা ফিলিস্তিনি জনগনের ঈমানি শক্তির কাছে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। অন্যদিকে ফিলিস্তিনের উদ্দেশ্য ছিল জীবন দিয়ে হলেও জন্মভূমিকে রক্ষা করা। আর তাতে তারা সফলও হয়েছে। সুতরাং বলা যায়, এই যুদ্ধে আপাতত ফিলিস্তিনিরাই জয়ী হয়েছে। নিহত ও আহতের সংখ্যা দেখে সব কিছু বিচার করা যায় না। আপাতত জয় মানেই সমস্যার স্থায়ী সমাধান নয়। ওরা অনেক ধূর্ত। আবার মতলব নিয়ে অত্যাচার শুরু করে দিবে ফিলিস্তিনের উপর। সেজন্য, গোটা মুসলিম উম্মাহকে একতাবদ্ধ হতে হবে।’
‘এরকম যুদ্ধ বিরতি বহুবার হয়েছে। কিছু দিন বাদে ঘুরে ফিরে ফিলিস্তিনিরা আবারও রক্তাক্ত হবে। চিরস্থায়ী সমাধান দরকার’ বলে মনে করেন রেজাউল কবির মিন্টু।
ইজহার রহমান লিখেন, ‘ইসরায়েল যুদ্ধ বিরতি করেছে, এতে এত উল্লাসিত হবার কিছু নেই। শয়তানের প্যাঁচ বুঝা বড় দায়।’
আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করে এমডি ফিরোজ খান লিখেন, ‘আল্লাহ নিহত সকল ফিলিস্তিনিদের শহীদ হিসাবে কবুল করুন এবং মজলুম ফিলিস্তিনিদের উপর রহম করে চুড়ান্ত বিজয় দান করুন।’
উল্লেখ্য, এগারো দিনের ইসরাইলি হামলায় গাজায় অন্তত ২৩২ জন নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে শিশু ৬৫ জন। আহত হয়েছে অগণিত ফিলিস্তিনি নাগরিক। ইসরাইলের এই বর্বরোচিত হামলায় ফিলিস্তিনের ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অসংখ্য স্থাপত্য ধ্বংস হয়ে গেছে। আল-জাজিরা, এপিসহ বেশ কিছু মিডিয়া অফিসের কার্যালয় গুড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েল।
অপরদিকে ইসরায়েল বলছে, প্রায় চার হাজার রকেট ছুঁড়েছে হামাস। হামাসের এই পাল্টা হামলায় ইসরাইলে দুই শিশুসহ ১২ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন