খালা চম্পারানী। রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চিহ্নিত তালিকাভুক্ত মাদক কারবারী। তার নামে রয়েছে রূপগঞ্জ থানায় ১০টির অধিক মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা। একাধিকবার ভ্রাম্যমাণ আদালতেও সাজা হয় তার। এসব মামলার কোনটায় জামিনে আবার কোনটায় পলাতক সে। চম্পা গুতিয়াবো এলাকার জামান মিয়ার মেয়ে। খালু রানা খানও এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারী। রয়েছে ৩টির অধিক মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা। মামা আওলাদ মিয়া পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প এলাকায় একাধিক জুয়ার মাঠ পরিচালনা ও মাদক বাণিজ্যের সম্রাট হিসেবে পরিচিত।
আর তাদের ভাগনে গুতিয়াবো এলাকার আব্দুল হালিম মিয়ার ছেলে সাদ্দাম হোসেন ১টি হত্যা, একাধিক চাঁদাবাজি, জবরদখল, সন্ত্রাসী, চুরি ও ডাকাতিসহ বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের অপরাধী হিসেবে ১০টির অধিক মামলাসহ আরো ৯টি অভিযোগ ও সাধারণ ডায়েরিতে বিবাদী সে। গুতিয়াবো এলাকার চাঞ্চল্যকর আমাল হোসেন হত্যা মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি সে। তবে জামিনে মুক্ত হবার পর সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে পূর্বাচলে গড়ে তোলে ত্রাসের রাজত্ব। এতে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নের পূর্বাচল ও এর আশপাশের গ্রামের বাসিন্দারা রয়েছেন চরম আতঙ্কে।
সূত্র জানায়, সাদ্দাম নির্মাণাধীন পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প ঘুরতে আসা তরুণ তরুণীদের মধ্যে মাদক বিক্রি করতে করতে নিজেই হয়ে পড়ে মাদকসেবী। মাদক বাণিজ্য রক্ষায় গড়ে তোলে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। তার বাহিনীর কমান্ডার হিসেবে রয়েছে মধূখালী এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে মামুন রিয়াদ, গুতিয়াবো এলাকার মৃত শাহজাহানের ছেলে সোহেল রানা, বসুরউদ্দিনের ছেলে ইব্রাহিম ওরফে ইব্রাসহ চিহ্নিত মাদকসেবী ও বিপদগামী তরুণ। সাদ্দাম স্থানীয় একটি আবাসন কোম্পানির আঞ্চলিক সহযোগী কর্মচারী হিসেবে কাজ করে হয়ে যায় কোটিপতি। ওই কোম্পানির প্রভাব খাঁটিয়ে তার বাহিনী দিয়ে নিয়মিত জমি জবরদখল, জোরপূর্বক বালি ফেলে কৃষকের জমি বেহাত, মতের অমতে গেলে দলবেঁধে হামলা ভাঙচুর চালিয়ে ত্রাসের রাজত্ব তৈরি করায় স্থানীয়রা সন্ত্রাসী বলে জানে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, আবাসনের প্রভাবশালী মালিকের নাম ভাঙিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ে মহড়া দিয়ে আতঙ্ক তৈরি করে সাদ্দাম বাহিনী। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে না পারায় দিনদুপুরে ইয়াবা সেবন আর দলবল নিয়ে প্রকাশ্যে মাদক কারবারিতে জড়িয়ে পড়ছে উঠতি বয়সী শিক্ষার্থীরাও। সম্প্রতি সাদ্দাম গুতিয়াবো এলাকার বাবুল মিয়ার ঘরে বসে ইয়াবা সেবনকালে সে নিজেই তার অন্য সহযোগীর মাধ্যমে ভিডিও করায়। ওই সহযোগীর সঙ্গে বিরোধ হলে ইয়াবা সেবনকালে রেকর্ড করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও প্রশাসনের কাছে প্রকাশ করে সে।
এদিকে মাদক বিক্রি বাড়াতে প্রথমে ফ্রিতে মাদক সেবনের সুযোগ দেয় সাদ্দাম। আড্ডায় প্রতিদিন যোগদেয় নতুন নতুন মাদকসেবী। এসব মাদকসেবীর বেশিরভাগই তরুণ আর ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংঠনের কর্মী। সাদ্দামের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানা ও নারায়ণগঞ্জ আদালতে মামলা রয়েছে। সিশেল পার্কের সহকারী ম্যানেজার মনিরুজ্জামানের করা চাঁদাবাজি ও জবর দখলের অভিযোগ, গুতিয়াবোর ক্যাবল অপারেটর আমানুল্লাহর দায়ের করা লুটপাট ও ডাকাতির অভিযোগ, গুতিয়াবোর বাসিন্দা আমাল মিয়াকে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করলে ওই মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিসহ বিভিন্ন অপরাধে আরো ৪টির অধিক মামলা চলমান সাদ্দামের বিরুদ্ধে।
তবে সাদ্দাম হোসেন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মজার ছলে ইয়াবা নিয়ে ভিডিও করেছে বন্ধুরা। আমি কোন মাদক ব্যবসায়ী নই। আমার আত্মীয় কে কিতে জড়িত তা আমার দেখার বিষয় না।
রূপগঞ্জ থানার ওসি জসিম উদ্দিন বলেন, রূপগঞ্জ থানা পুলিশের মাদক নিয়ন্ত্রণে জিরো টলারেন্স দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। ফলে মাদক বিক্রিতে জড়িয়ে পড়লে তাদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন