শাস্তি ছিল দুজনেরই। তবে দুই রকমের। শাহাদাত হোসেন মাঠ থেকে দূরে ছিলেন একের পর এক শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনায় নিষিদ্ধ হয়ে। জুবায়ের হোসেন মাঠেই ছিলেন, কিন্তু ম্যাচে নয়। তার জন্য শাস্তি হয়ে উঠেছিল টানা উপেক্ষা। হাপিত্যেশ করে ফিরছিলেন ম্যাচ খেলার জন্য। অবশেষে দুজন একই দিনে পেলেন ম্যাচ খেলার স্বাদ। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে গতকাল পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে ওল্ড ডিওএইচএস স্পোর্টস ক্লাবের বিপক্ষে মাঠে নামেন শাহাদাত ও জুবায়ের। দুজনই সবশেষ ঘরোয়া ক্রিকেটের শীষ পর্যায়ে ম্যাচ খেলেছিলেন ২০১৯ সালের নভেম্বরে, জাতীয় লিগে। ফেরার ম্যাচটা স্মরণীয় করে রাখতে পারেননি দুজনের কেউই। উইকেট পাননি কেউই। অবশ্য বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে পারটেক্সের ব্যাটসম্যানদের চরম ব্যর্থতার পর বোলারদের করার ছিল সামান্যই। সীমিত সেই সুযোগে ভালো বোলিং করতে পারেননি পেসার শাহাদাত। লেগ স্পিনার জুবায়ের অবশ্য খারাপ করেননি।
শাহাদাত নিষিদ্ধ হয়েছিলেন ২০১৯ সালের ১৯ নভেম্বর। খুলনায় ১৬ নভেম্বর শুরু হওয়া জাতীয় লিগের ম্যাচে সতীর্থের গায়ে হাত তোলার ঘটনায় প্রথমে ম্যাচ থেকে বহিষ্কার করা হয় তাকে। শৃঙ্খলাভঙ্গের আরও ঘটনা তার আগে থেকেই ছিল নানা সময়ে। সব মিলিয়ে এবার তাকে দুই বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞাসহ পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয় বিসিবি, সঙ্গে জরিমানা করা হয় ৩ লাখ টাকা।
পরে অনুতপ্ত হওয়ার কথা জানিয়ে শাহাদাত বোর্ডে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। জীবন-জীবিকার প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে বারবার বোর্ডে আবেদন করেন শাস্তির মেয়াদ কমাতে। মানবিক দিক বিবেচনা করে স¤প্রতি তার নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় বোর্ড। গতকাল তার সুযোগ হয় মাঠে ফেরার। এত দিন পর খেলতে নেমে ৩৪ বছর বয়সী পেসারের বলে ধার ছিল না তেমন। ছিল না গতি ও আগ্রাসন। ২ ওভারে রান দেন ১৬।
জুবায়ের সবশেষ ম্যাচ খেলেন আরও আগে, জাতীয় লিগের সেই ম্যাচটি শুরু হয় ২০১৯ সালের ২ নভেম্বর। ওই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে দুটি উইকেটও পান। তার পর আর সুযোগ হয়নি ঘরোয়া ক্রিকেটের কোনো পর্যায়েই কোনো ম্যাচ খেলার। পরে আসে কোভিডের ধাক্কা। কোভিড বিরতির পরও তার ভাগ্য বদলায়নি। এই সময়টায় ফিটনেস নিয়ে খেটে, দেশের কোচদের সঙ্গে বোলিং নিয়ে কাজ করে নিজেকে প্রস্তুত রাখেন ২৫ বছর বয়সী লেগ স্পিনার। কিন্তু সুযোগ পাচ্ছিলেন না।
অবশেষে এদিনই শেষ হলো তার দীর্ঘ প্রতীক্ষা। তবে যখন বোলিং পেলেন, ম্যাচ ততক্ষণে শেষের পথে। ১৫ ওভারের ম্যাচে পারটেক্স করতে পারে ৭৭ রান। রান তাড়ায় ওল্ড ডিওএইচএস যখন ৫ ওভারে করে ফেলেছে ৩৯, তখন আক্রমণে আনা হয় জুবায়েরকে।
এরপর তিন ওভার বোলিং করে জুবায়ের চেষ্টা করেন নিজের ছাপ রাখতে। প্রথম ওভারে ৮ রান দিলেও ৬ রানই ছিল বাজে ফিল্ডিং থেকে, যেখানে এক রানও হওয়ার কথা নয়। পরের দুই ওভারও করেন নিয়ন্ত্রিত। তিন ওভারে রান দেন মোট ১৫। টার্ন কিছুটা পান, দারুণ একটি ফ্লিপারও ছিল।ওল্ড ডিওএইচএস ১১.৩ ওভারেই ম্যাচ জিতে যাওয়ায় আর বোলিং পাওয়া হয়নি দুজনের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন