উত্তরাঞ্চলের ঠাকুরগাঁও জেলায় এবার ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনে কৃষকরা অনেক খুশি। তবে উৎপাদিত ভুট্টার দাম নিয়ে কৃষকদের মনে এক ধরনের হতাশা বিরাজ করছে। তাদের কথায়, কৃষক মাঠে যে শ্রম দিচ্ছে তার মূল্য পাচ্ছে না। অথচ মধ্যস্বত্বভোগী সবচেয়ে বেশি মুনাফা করছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি অফিসের মতে, জেলার মাটি ও আবহাওয়া ভুট্টা চাষের উপযোগী। গত কয়েক বছর ধরে ভুট্টার পাশাাপশি গমের ফলনও ভালো হচ্ছে। জেলা কৃষি অফিস বলছে, আবাদ ও উৎপাদনের দিক দিয়ে দেশের সর্বোচ্চ গম-ভুট্টা উৎপাদনকারী জেলা ঠাকুরগাঁও। সরকারও এ জেলা থেকে গম কেনে সর্বাধিক। চলতি বছরের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। গমের তুলনায় ভুট্টার দাম বেশি পাওয়ায় এবার জেলায় কমেছে গমের আবাদ।
কৃষি অফিসের সূত্র জানায়, চলতি বছর জেলায় গমের আবাদ কমে ভুট্টার ফলন বেশি হয়েছে। আর গমের চেয়ে ভুট্টার দাম বেশি পাওয়া যাচ্ছে। কয়েক বছর ধরেই জেলার পাঁচ উপজেলায় গমের ভালো ফলন হচ্ছে। তবে কৃষকেরা বলছেন, বাজারে গমের থেকে ভুট্টার দাম বেশি থাকায় তারা ভুট্টা চাষের দিকেই ঝুঁকছেন। জেলায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫০ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে গম আবাদ করা হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছিল ২ লাখ ৭ হাজার ৬৮৫ মেট্রিক টন গম। তবে চলতি মৌসুমে ২০২০-২১ অর্থবছরে ঠাকুরগাঁওয়ে ৪৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে গম আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। এর মধ্যে ১ লাখ ৯৪ হাজার ১৮৪ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়। আবাদ ও উৎপাদনের দিক থেকে যা দেশের সর্বোচ্চ। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ হলেও নিজ জেলায় গত বছরের তুলনায় কমেছে এবারের আবাদ।
জেলা সদরের বান্দিগড় গ্রামের ভুট্টা চাষি নিতাই চন্দ্র জানান, চলতি বছর তিনি ৭ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। আর উৎপাদিত ভুট্টা বিক্রি করে লাভ হয়েছে এক লাখ ৪০ হাজার টাকা। তার অভিযোগ, মাঠ পর্যায়ে কৃষকরা সব সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতি বছরই মধ্যস্বত্তভোগীরা কৃষকদের কাছ থেকে ভ্ট্টুা কিনে নিয়ে অনেক মুনাফা করে। এদিকে সরকার দৃষ্টি দিলে কৃষকরা সত্যিকার অর্থে উপকৃত হত।
ঠাকুরগাঁও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, গম উৎপাদনে ঠাকুরগাঁও হচ্ছে সর্বোচ্চ। এছাড়া এই জেলা থেকে অন্যান্য জেলার তুলনায় খাদ্য বিভাগ গম কিনেছে বেশি। আর এটি জেলার কৃষকদের জন্য একটা ভালো খবর। তারা অনেকটাই লাভবান হচ্ছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন