ঢাকা ব্যাংকের বংশাল শাখার ভল্ট থেকে পৌনে ৪ কোটি টাকা উধাও হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ওই শাখারই দুই কর্মকর্তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।
বংশাল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আবুল কালাম ভূঁইয়া বলেন, ঢাকা ব্যাংকের বংশাল শাখা থেকে ৩ কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকা তাদের ক্যাশ ইনচার্জ সরিয়ে নিয়েছেন বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে ব্যাংকটির ম্যানেজার আমাদের কাছে অভিযোগ করেন। এ অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাংকের বংশাল শাখার ক্যাশ-ইনচার্জ রিফাজুল হক, ম্যানেজার (অপারেশন) এমরান আহমেদকে আটক করা হয়। গতকাল বিকেল ৫টায় বংশাল থানার ডিউটি অফিসার মাসুম বিল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোনো মামলা হয়নি। তবে একটি মামলা হবে। মামলাটি দুদকে চলে যাবে এবং আসামিদেরও আমরা দুদকে হস্তান্তর করে দেব। বিষয়টি দুদক তদন্ত করে দেখবে।
ডিএমপির লালবাগ বিভাগের ডিসি মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা ব্যাংকের বংশাল শাখা ম্যানেজার আবু বক্কর সিদ্দিক তাদের এই দুই কর্মকর্তাকে থানায় সোপর্দ করেছেন। তার অভিযোগ ছিল, অডিটের মাধ্যমে তারা জানতে পেরেছেন ব্যাংকের ভল্ট থেকে তিন কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকা এই দুই কর্মকর্তা আত্মসাত করেছেন। আমরা আটক দুই কর্মকর্তাকে ৫৪ ধারায় আদালতে পাঠিয়েছি। আইনগত যে প্রক্রিয়া আছে সেটা আমরা এখন করছি।
এদিকে, ব্যাংকের নিñিদ্র নিরাপত্তা ভেদ করে ভল্ট থেকে টাকা উধাওয়ের ঘটনা তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে ঢাকা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এমরানুল হক বলেন, বৃহস্পতিবার ব্যাংকের শাখায় আমাদের ইন্টারনাল অডিট হয়। এরপরই টাকার অংকে অসঙ্গতি দেখা যায়। ক্যাশ কম পাওয়ায় আবারও ইনভেস্টিগেশন করা হয়। পৌনে চার কোটি টাকার মত কম ছিল। এরপর দায়িত্বে থাকা ক্যাশ-ইনচার্জের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রাথমিকভাবে ক্যাশ সরিয়ে ফেলার বিষয় স্বীকার করেন। এ কাজটি তিনি একাই করেছেন বলে জানিয়েছেন ক্যাশ-ইনচার্জ রিফাজুল হক। কী জন্য এই টাকা সরিয়েছেন তা এখনও তিনি জানাননি।
এমডি বলেন, পরবর্তীতে আমরা নিয়মানুযায়ী লিগ্যাল প্রসেসে ব্যবস্থা নিয়েছি। যেহেতু দুজন দায়িত্বে ছিলেন তাই ক্যাশ-ইনচার্জ ও ম্যানেজার (অপারেশন) দুজনকে পুলিশে সোপর্দ করেছি। এখন সংশ্লিষ্ট সংস্থা তদন্ত করে বলতে পারবে কিভাবে ও কী জন্য এ টাকা সরানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, কয়েক দিন আগে ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে ওই ব্যাংকের একজন আইটি অফিসারের ২ কোটি ৫৭ লাখ সরোনোর বিষয়টি সামনে আনে পুলিশ। তিন বছরে ৬৩৭টি অ্যাকাউন্টের ১৩৬৩টি লেনদেনের মাধ্যমে এই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। ওই ঘটনাও ব্যাংকের অডিটে ধরা পড়ে। তবে ততদিনে ঘটনার মূলহোতা চলে গেছেন নাগালের বাইরে। ওই ঘটনার রেশ না কাটতেই ঢাকা ব্যাংকে লুটের ঘটনা ঘটল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন