সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মালামাল ক্রয় ও সরবরাহের নামে ১৬ কোটি ৭১ লাখ ৩২ হাজার ২২২ টাকা আত্মসাতের মামলায় সাবেক সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমানসহ নয়জনের দেশত্যাগের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন আদালত।
বুধবার (২৩ জুন) সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ মফিজুর রহমান এই নিষেধাজ্ঞা জারির আদেশ দেন।
নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, সাতক্ষীরার সাবেক সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমান, সিভিল সার্জন অফিসের সাবেক হিসাব রক্ষক আনোয়ার হোসেন, স্টোর কিপার এ.কে.এম ফজলুল হক, ঢাকার সেগুন বাগিচার মেসার্স বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির সত্ত্বাধিকারী জাহের উদ্দিন সরকার, নয়াপল্টনের মেসার্স মাকেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সত্ত্বাধিকারী ও অংশীদার আব্দুর ছাত্তার সরকার, একই এলাকার মেসার্স মাকেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্ত্বাধিকারী ও অংশীদার আহসান হাবিব, ইউনিভার্সেল ট্রেড কর্পোরেশনের সত্ত্বাধিকারী আসাদুর রহমান, মেসার্স মাকেন্টাইল ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজার কাজী আবু বকর সিদ্দীক ও মহাখালী নিমিউ অ্যান্ড টিসির অবসরপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী এ.এইচ.এম আব্দুস কুদ্দুস।
সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের দায়িত্বপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাড. আসাদুজ্জামান দিলু জানান, সাতক্ষীরার সাবেক সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমানসহ নয়জন প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক চিকিৎসা সংক্রান্ত মালামাল ক্রয় ও সরবরাহের নামে তিনটি বিলের বিপরীতে মোট ১৬ কোটি ৭১ লাখ ৩২ হাজার ২২২ টাকা সাতক্ষীরা হিসাবরক্ষণ অফিস থেকে তিনটি চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করে সরকারের আর্থিক ক্ষতি সাধনের মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন।
বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ায় দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে সাতক্ষীরায় আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনকারীরা সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিস ঘেরাও করেন এবং প্রধানমন্ত্রী ও দুদক চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ের তৎকালীন উপ-সহকারী পরিচালক ও বর্তমান সহকারী পরিচালক জালাল উদ্দিন দুদকের অনুমোদন সাপেক্ষে ২০১৯ সালের ৯ জুলাই সিভিল সার্জন ডা. তৌহিদুর রহমানসহ নয়জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এ বিষয়ে মামলা দায়ের করেন। এ মামলার আসামিরা হাইকোর্টের নির্দেশে কয়েক দফায় সাতক্ষীরার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে হাজির হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করার পর জামিনে মুক্তি পান। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আদালতে এজাহারভুক্ত সকল আসামিদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪০৯/ ১০৯ এবং ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদক এর প্রধান বকার্যালয়ের উপ পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম।
অ্যাড. আসাদুজ্জামান দিলু আরো জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ন্যায় বিচারের স্বার্থে আসামিরা যাতে দেশত্যাগ না করতে পারে সেজন্য গত ৯ জুন সংশ্লিষ্ট আদালতে একটি আবেদন করেন। গত ১৬ জুন ভার্চুয়াল আদালতে ওই আবেদনের শুনানী হয়। শুনানী শেষে বিচারক শেখ মফিজুর রহমান তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদন মঞ্জুর করেন।
তিনি বলেন, ২৩ জুন বুধবার এ সংক্রান্ত আদেশের কপি হাতে পেয়েছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন