আরব-বাংলাদেশ ব্যাংকের (এবি ব্যাংক) পৌনে দুইশত কোটি টাকা আত্মসাত মামলায় ১৭ আসামির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। হাইকোর্টে দাখিলকৃত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চে প্রতিবেদনটি দাখিল করে পুলিশ।
জাল ওয়ার্ক অর্ডার ও অবৈধ ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে এবি ব্যাংক থেকে ১৭৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় একটি চক্র। এ ঘটনায় ২০২১ সালের ৮ জুন মামলা দায়ের করা হয়। এরশাদ ব্রাদার্স করপোরেশনের মালিক মো. এরশাদ আলীসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। আসামিদের মধ্যে এরশাদ আলী ছাড়া বাকী ১৬ জনই ব্যাংকটির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা।
এজাহারের তথ্য মতে, ২০১০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এবি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করেন এরশাদ আলী। তিনি ব্যাংক থেকে পদ্মা বহুমুখী সেতু কার্যালয়ের ঠিকাদার সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড ও চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের নাম করে ৬টি ভুয়া ও জাল ওয়ার্ক অর্ডারের অনুকূলে ১৬৬ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন করিয়ে নেন।
ওয়ার্ক অর্ডারগুলো কোনও ধরণের যাচাই-বাছাই ছাড়াই ঋণ দেয়ার পক্ষে সুপারিশ করে ব্যাংকের ক্রেডিট রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ডিভিশনে (সিআরএম বিভাগ) পাঠানো হয়। পরে সিআরএম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ওই প্রস্তাব যাচাই-বাছাই ছাড়াই অবৈধ সুবিধা লাভের মাধ্যমে ঋণ প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য ক্রেডিট কমিটিতে পাঠায়। ক্রেডিট কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক পরস্পর যোগসাজশের মাধ্যমে রেকর্ডপত্র যাচাই-বাছাই ছাড়াই ১৬৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা জাল ওয়ার্ক অর্ডারের বিপরীতে ঋণ অনুমোদন করেন।
এছাড়া এরশাদ করপোরেশন এবি ব্যাংক থেকে ২০১৭-১৮ সালের মধ্যে ৭টি ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে ১০ কোটি টাকা গ্রহণ করেন। এই ঋণ প্রদান করা হয় ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন ছাড়াই। এই মামলায় হাইকোর্টে জামিন চেয়ে ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা মো. আব্দুর রহিমসহ দু’জন আবেদন করেন।
গত ১৪ জুন এবি ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের মামলায় দীর্ঘদিনেও আসামিদের গ্রেফতারে আদালতের আদেশ প্রতিপালন না করার বিষয়ে ব্যাখ্যা চান হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, পুলিশের আইজি ও ইমিগ্রেশন বিভাগের অতিরিক্ত আইজিপিকে এ ব্যাখ্যা দাখিল করতে বলা হয়। একইসঙ্গে এবি ব্যাংকের কর্মকর্তা আব্দুর রহিমসহ দুই আসামির জামিন আবেদনের শুনানি মুলতবি করেন আদালত।
মন্তব্য করুন