চাঞ্চল্যকর মেজর (অবঃ) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তার (আইও) প্রদত্ত চার্জশীট আদালত আমলে নিয়ে মামলাটি চার্জ গঠন করেছেন এবং মামলাটি বিচার কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রস্তুত করা হয়।
রোববার ২৭ জুন সকালে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল চার্জ গঠন করেন। কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি এডভোকেট ফরিদুল আলম মামলাটির চার্জ গঠন শুনানি করেন।
গত বছর ৩১ জুলাই ঈদুল আজহার আগের রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশ কর্মকর্তা লিয়াকত আলীর গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
হত্যার পাঁচদিনের মাথায় ৫ আগস্ট সিনহার তাঁর বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে। ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাশকে করা হয় দুই নম্বর আসামি। মামলার তিন নম্বর আসামি করা হয় টেকনাফ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিতকে। আদালত থেকে মামলাটির তদন্তভার দেওয়া হয় র্যাব -১৫ কে।
এরপর আসামি ৭ পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে তদন্তে নেমে হত্যার ঘটনায় স্থানীয় ৩ জন, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ৩ সদস্য এবং প্রদীপের দেহরক্ষীসহ আরো মোট ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গত ২৪ জুন মামলার চার্জশীটভুক্ত এতদিন পলাতক আসামী কনস্টেবল সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে আলোচিত এই মামলার ১৫ আসামির সবাই এখন আইনের আওতায় আসে।
এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় চার মাসের বেশি সময় ধরে চলা তদন্ত শেষে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ৮ আলোচিত মামলাটির অভিযোগপত্র দাখিল করে র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম।
মামলায় কারাগারে থাকা ১৫ আসামি হলো- বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, প্রদ্বীপের দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাগর দেব, এপিবিএনের এসআই মোঃ শাহজাহান, কনস্টেবল মোঃ রাজীব ও মোঃ আবদুল্লাহ, পুলিশের মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মোঃ নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।
মামলায় রাষ্ট্র পক্ষে পিপি এডভোকেট ফরিদুল আলম, বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস এর পক্ষে এডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, এডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা, আসামীদের পক্ষে এডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, এডভোকেট দিলীপ দাস, এডভোকেট প্রতিভা দাশ, চট্টগ্রামের আইনজীবী এডভোকেট চন্দন দাশ, শহীদুল আলম, শফিউল আলম সহ ২১/২২ জন আইনজীবী শুনানীতে অংশ নেন।
আদালতে চার্জ শুনানীকালে চার্জশীট ভুক্ত ১৫ জন আসামী আদালতের কাটগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। চাঞ্চল্যকর এই মামলার ধার্যদিন উপলক্ষে সকল আসামীকে আদালতে আনা হয়। এজনয় সকাল থেকে আদালত অঙ্গনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন