নগর খাদ্য ব্যবস্থায় সৃজনশীল উদ্ভাবনে পুরস্কার পেলেন ৬ উদ্যোক্তা। বিজয়ী উদ্যোক্তাদের প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- জ্যাকফ্রুট ৩৬০ ডিগ্রি, ইন্সপিরা, ড. রিসাইকেল বিডি, ঘোস্ট কিচেন বাংলাদেশ, গ্রিনগ্রেইন এবং আইপেইজ। বিজয়ীদের অনুদান, কারিগরি এবং নগদ সহায়তা হিসেবে ব্যবসায়িক ধারণা বাস্তবায়নের জন্য মোট ২৬ হাজার ডলার প্রদান করা হবে। বুধবার (৩০ জুন) রাতে ভার্চুয়ালি ‘ফুড ফ্রন্টিয়ার্স : আরবান ফুড সিস্টেম ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতা’ শেষ হয়।
সুইজারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইপ্রুভড নিউট্রিশন (গেইন) এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউওএফপি) এর যৌথ উদ্যোগে গঠিত প্ল্যাটফর্ম স্কেলিং আপ নিউট্রিশন-সান (এসইউএন) বিজনেস নেটওয়ার্ক (এসবিএন)-বাংলাদেশ এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি) ড. রুহুল আমিন তালুকদার। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্ল্যানিং) মো. গোলাম ইয়াহিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আব্দুল কাইয়‚ জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টি ইনস্টিটিউটের (আইপিএইচএন) আওতাধীন ন্যাশনাল নিউট্রিশন সার্ভিসের লাইন ডিরেক্টর ড. এস এম মুস্তাফিজুর রহমান, গেইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. রুদাবা খন্দকার, ডেনমার্ক দূতাবাসের বাণিজ্যিক কাউন্সিলর আলী মুশতাক বাট, রিসার্স অ্যান্ড কমপিউটিং সার্ভিসেস এর প্রধান নির্বাহী ড. নাদিয়া বিনতে আমির ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গেইন বাংলাদেশ’র পোর্টপোলিও লিড ড. আশেক মাহফুজ।
নগর এলাকার মানুষের নিরাপদ, পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণে উৎসাহ প্রদানের ক্যাম্পেইনের অংশ হিসেবে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এতে তরুণ ও সম্ভাবনাময় মোট ৮৫ জন উদ্যোক্তা অংশ নেন। পরবর্তীতে শীর্ষ ১২ জন অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকে ছয়জন উদ্যোক্তাকে বিচারকরা চূড়ান্তভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেন।
চলতি বছরের ১৩ মে থেকে ‘ফুড ফ্রন্টিয়ার্স আরবান ফুড সিস্টেম ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২১’ শিরোনামে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং উদ্যোক্তা ফোরামের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন আহ্বান করা হয়। ৬ জুন ছিল আবেদনের শেষ দিন। ১০ জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত অনলাইন বুটক্যাম্পের মাধ্যমে খাদ্য ব্যবস্থাপনা এবং ব্যবসা সম্প্রসারণের বিভিন্ন বিষয়ের ওপর তারা দক্ষতা লাভ করেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রচলিত ব্যবস্থায় খাদ্য উৎপাদনের কারণে অতিরিক্ত গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন এবং ভ‚গর্ভস্থ পানি ৭০ শতাংশ কমে যায়, যা আমাদের খাদ্য ব্যবস্থার জন্য বিপর্যয়কর। একই সঙ্গে এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি। তদুপরি বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপ খাদ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে তরুণদের এই উদ্ভাবনী ধারণাসমূহ টেকসই পরিবেশ উন্নয়ন ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই প্রতিযোগিতার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের নগর এলাকার খাদ্য ব্যবস্থায় আধুনিক উদ্ভাবন ও চিহ্নিতকরণ। পাশাপাশি টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা বাস্তবায়নে তরুণ উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং ব্যবসায়ের দক্ষতা বিকাশ করা। এক্ষেত্রে কী ধরণের ব্যবসায়িক মডেল কার্যকর হতে পারে বিচারকরা সেগুলো বিবেচনায় আনেন।
এ ছাড়া তিনটি মৌলিক ধারণার ওপর ভিত্তি করে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এগুলো হলো- নিরাপদ খাবার ও অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব, বাস্তবায়নে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং সৃজনশীল বিপণন প্রক্রিয়া। ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব স্মল অ্যান্ড কটেজ ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশ (এনএএসসিআইবি) এবং বাংলাদেশ ইয়ুথ এনভায়রনমেন্টাল ইনিশিয়েটিভ (বিওয়াইইআই) এই ক্যাম্পেইনে কৌশলগত অংশীদার হিসেবে কাজ করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন