বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

সাকিব ঝলকে সিরিজ বাংলাদেশের

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ জুলাই, ২০২১, ১২:১১ এএম

বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ঝলকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ওয়ানডে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। গতকাল হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ২৪১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয় টাইগারদের। মাত্র ৭৫ রানে চার নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে যখন প্রায় দিশেহারা টাইগাররা, তখন বলা যায় খাদের কিনাড়া থেকেই দলকে টেনে তোলেন সাকিব। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ব্যাট করতে নেমে তিনি অল্পের জন্য তুলে নিতে পারেননি ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরি। বল হাতে ২ উইকেট শিকারের পর ব্যাট হাতে ৯৬ রানে অপরাজিত থাকেন সকিব। তার ১০৯ বলের ইনিংসে ৮টি চারের মার ছিল। শেষ পর্যন্ত ৪৯.১ ওভারে ৭ উইকেটে ২৪২ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। ফলে ৫ বল হাতে রেখেই ৩ উইকেটের জয় তুলে নেয় তারা।
এই জয়ে জিম্বাবুয়ের মাটিতে একযুগ পর সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের মাটিতে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিলেন সাকিবরা।
রান তাড়ায় শুরুটা খারাপ ছিল না তামিম ইকবাল আর লিটন দাসের। ৯.৩ ওভারের উদ্বোধনী জুটিতে তারা তোলেন ৩৯ রান। প্রথমে আউট হন তামিম। লুক জংউইকে ড্রাইভ করতে গিয়ে পয়েন্টে সিকান্দার রাজার দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন তামিম। তার ৩৪ বলে ২০ রানের ইনিংসে ৪টি চারের মার ছিল। এরপর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি লিটন দাসও। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান এবার উচ্চাভিলাষী পুল খেলতে গিয়ে টপএজ হন। মিডঅনে তার সহজ ক্যাচ নেন ব্রেন্ডন টেলর। ৩৩ বলে ৪ চারে লিটনের ব্যাট থেকে আসে ২১ রান। দলীয় সংগ্রহ ৫০ পূর্তির আগেই দুই ওপেনার ফিরে গেলে যেখানে দলকে ভরসা দেবেন, সেখানে উল্টো বিপদে ফেলে যান মোহাম্মদ মিঠুন। পরের ওভারেই জংউইকে উইকেট উপহার দেন তিনি। শরীরের বাইরে খেলতে গিয়ে কভার পয়েন্টে মাদভেরেকে ক্যাচ দেন মিঠিুন। ৩ বলে তিনি মাত্র ২ রান করেন। ৫০ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর মোসাদ্দেক হোসেন হন দুর্ভাগ্যজনক রানআউটের শিকার। ১৯ ওভারের প্রথম বলে এনগারাভার ওয়াইড বলটি উইকেটরক্ষক রেগিস চাকাভার হাত ফসকে গেলে এক রান নিতে চানস মোসাদ্দেক, সাকিবও দৌড় দেন। কিন্তু মোসাদ্দেক (৫) স্ট্রাইকার এন্ডে পৌঁছানোর আগেই স্ট্যাম্প ভেঙে দেন চাকাভা। ৭৫ রানে ৪ উইকেট হারানো দলকে এরপর খাদের কিনাড়া থেকে টেনে তোলার দায়িত্ব নেন সাকিব ও বরাবরের মতো বিপদের ভরসা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। পঞ্চম উইকেটে ৫৬ রানের জুটি গড়েন তারা। শেষ পর্যন্ত এই জুটি ভাঙে মাহমুদউল্লাহ (৩৫ বলে ৩ চারের মারে ২৬) কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলে। আবার বিপদ ফিরে আসে বাংলাদেশের। প্রমোশন পেয়ে ওপরে চলে এসেছিলেন মেহেদি হাসান মিরাজ। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। মাদভেরেকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে মায়ের্সের ক্যাচ হন এই অলরাউন্ডার, মাত্র ৬ রান করে।
আফিফ হোসেন ধ্রুব উইকেটে এসে সাকিবকে সঙ্গ দেয়ার চেষ্টা করছিলেন। ঝুঁকিপূর্ণ শট না খেলে সিঙ্গেলস-ডাবলসে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ২৩ বলে কোনো বাউন্ডারি ছাড়াই ১৫ রান করা আফিফ শেষ পর্যন্ত ঝুঁকি নিতে গিয়েই আউট হন। সিকান্দার রাজাকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন তিনি। আফিফের পর সাকিবকে সঙ্গ দিতে এসে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ভালোই করেছেন। শেষ পর্যন্ত তিনি ৩৪ বলে ১ চারের মারে ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেশে বাংলাদেশের তরুণ পেসার শরিফুল ইসলামের বিধ্বংসী বোলিং সত্তে¡ও ৯ উইকেটে ২৪০ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায় জিম্বাবুয়ে। স্বাগতিক দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন ওয়েসলি মাধভিরে। অধিনায়ক টেইলর করেন ৪৬ রান। বাংলাদেশের হয়ে পেসার শরিফুল ইসলাম ৪৬ রানে ৪ উইকেট নেন। সাকিব ৪২ রানে পান ২ উইকেট। অবধারিতভাবেই ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠেছে সাকিবের হাতেই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
জিম্বাবুয়ে : ৫০ ওভারে ২৪০/৯ (মারুমানি ১৩, চাকাভা ২৬, টেইলর ৪৬, মায়ার্স ৩৪, মাধেভেরে ৫৬, রাজা ৩০; তাসকিন ১/৩৮, সাইফ ১/৫৪, মিরাজ ১/৩৪, শরিফুল ৪/৪৬, সাকিব ২/৪২)। বাংলাদেশ : ৪৯.১ ওভারে ২৪২/৭ (তামিম ২০, লিটন ২১, সাকিব ৯৬*, মাহমুদউল্লাহ ২৬, আফিফ ১৫, সাইফ ২৮*; মুজারাবানি ১/৩১, জঙ্গুয়ে ২/৪৬, এনগারাভা ১/৩৩, মাধেভেরে ১/৩৯, রাজা ১/৩৩)।
ফল : বাংলাদেশ ৩ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা : সাকিব আল হাসান।
সিরিজ : ৩ ম্যাচে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে বাংলাদেশ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Md.khalid ১৯ জুলাই, ২০২১, ১২:২২ এএম says : 0
মিথুন আর মোসাদ্দেককে বাদ দেওয়া হোক
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন