চাঁদপুরে ৪০ গ্রামের একাংশে মঙ্গলবার(২০ জুলাই) সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে। সৌদি আরবে সোমবার (২০ আগস্ট) হজ হওয়ায় হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা দরবার শরিফের অনুসারীরা ঈদ উদযাপন করছেন।
প্রথম চন্দ্র দর্শনের ভিত্তিতে ধর্মীয় উৎসব পালনের রেওয়াজ চালু করেন দরবারের প্রতিষ্ঠাতা পীর মাওলানা ইসহাক।
দরবার শরিফ সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২০ জুলাই) হাজীগঞ্জ উপজেলার বলাখাল, শ্রীপুর, মনিহার, বরকুল, অলীপুর, বেলচোঁ, রাজারগাঁও, জাকনি, কালচোঁ, মেনাপুর, ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাচনমেঘ, খিলা, উভারামপুর, পাইকপাড়া, বিঘা, উটতলী, বালিথুবা, শোল্লা, রূপসা, বাশারা, গোয়ালভাওর, কড়ইতলী, নয়ারহাট, মতলবের মহনপুর, এখলাসপুর, দশানী, নায়েরগাঁও, বেলতলীসহ কচুয়া ও শাহরাস্তির কয়েক গ্রামের একাংশের মুসল্লিরা ঈদ উদযাপন করছেন।
জানা গেছে, ১৯২৮ সালে হাজীগঞ্জ রামচন্দ্রপুর মাদ্রাসার তৎকালীন অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক আরব দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে প্রথম চাঁদ দেখার ভিত্তিতে ঈদ উদযাপনের উদ্যোগ নেন। কিন্তু স্থানীয়দের অসহযোগিতায়
তা ভেস্তে যায়। সরকারি নিয়মের বাইরে গিয়ে একদিন আগে ঈদ পালনের উদ্যোগ নেওয়ায় অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ওই বছরই নিজ গ্রাম সাদ্রায় ফিরে আসেন তিনি।
ধনী ও প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান মাওলানা ইসহাক ওই বছর নিজ গ্রামে একই উদ্যোগ নিয়ে গণসংযোগ শুরু করেন। গ্রামের অসহায় ও দুস্থদের আর্থিক সহায়তা দিয়ে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদসহ সব ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান উদযাপনের প্রথা চালু করেন। পরে তিনি দরবার শরিফ ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।
স্থানীয় মুসল্লী সাকের হোসাইন বলেন, সৌদিতে সোমবার হজ হয়ে গেছে। তাই মঙ্গলবার (২০ জুলাই) আমরা ঈদ করছি। সকাল সাড়ে ৮টায় সাদ্রা ঈদগাহ মাঠে ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সকাল ৯ টায় সাদ্রা দরবার শরিফ জামে মসজিদে ঈদের শেষ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
পীর শাইখ মাও. আরিফ চৌধুরী বলেন, দরবারের প্রতিষ্ঠাতা পীর মাওলানা ইসহাক প্রথম চন্দ্র দর্শনের ভিত্তিতে ধর্মীয় উৎসব পালনের রেওয়াজ চালু করেন। এজন্য প্রতিবছর সৌদির সঙ্গে মিল রেখে আমরা ঈদ ও রোজা পালন করি। করোনা সংক্রমণরোধে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
সাদরা দরবার শরীফের পীরজাদা ও পরিচালক মুফতি ড. খাজা বাকীবিল্লাহ মিশকাত চৌধুরী বলেন, আরাফার দিন রোজা রাখা সুন্নাত এবং ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম। সর্বপ্রথম চন্দ্র দর্শনের ভিত্তিতে সোমবার (১৯ জুলাই) আরাফার দিন ছিলো তথা হজ হয়েছে। তাই বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ পবিত্র ঈদুল আযহা পালন করছে। সেই ক্ষেত্রে আমরাও ঈদুল আযহা উদযাপন করছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন