রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

বড় ইনিংস চান মাশরাফি

প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শামীম চৌধুরী : সিরিজের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে পিষে মারতে চেয়েছিলেন মাশরাফি। ১০ মাস পর ওয়ানডে প্রত্যাবর্তন ম্যাচে পারেননি তা। শ্লগের ব্যাটিং হয়নি প্রত্যাশিত। সেট হয়ে সেঞ্চুরি হাতছাড়া করেছেন তামীম, মাহামুদুল্লাহ শ্লগে ফিরেছেন, ব্যাটকে চাবুক বানিয়ে ২ রানের জন্য ফিফটি মিস করেছেন সাকিব, ইমরুল কায়েসের ইনিংসে সন্তুষ্ট হতে পারছেন না মাশরাফি। ৩শ’র সম্ভাবনা থাকা ইনিংসটি তাই ২৬৫ তে থেমে যাওয়ার তাই দ্বিতীয় ম্যাচকে সামনে রেখে আক্ষেপ করতে হচ্ছে বাংলাদেশ অধিনায়ককেÑ ‘সেট হয়ে তামিম, ইমরুল, রিয়াদ, সাকিব আউট হয়েছে। বড় স্কোর হতে হলে অন্ততঃ দু’জনকে বড় ইনিংস খেলতে হয়। সেখানে আমাদের চারজন শুরু করেও বড় স্কোর করতে পারেনি। ২৮০, ২৯০ এমনকি ৩০০ করারও সুযোগ ছিল। সেট হয়ে আউট হয়ে যাওয়াতে সম্ভব হয়নি।’
গত বছর পাকিস্তান, ভারতের বিপক্ষে এই মিরপুরেই ৩শ’ প্লাস স্কোরের অতীত আছে বাংলাদেশ দলের। আছে টপ অর্ডারদের বড় বড় ইনিংস। সে কারণেই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বড় স্কোর চান মাশরাফিÑ ‘তামীম, রিয়াদ, দু’জনেরই একশ’র সুযোগ ছিল। সাকিবের ‘বড়’ ফিফটিরও সুযোগ ছিল। বড় টিমের বিপক্ষে ২৮০ কিংবা ৩০০ এখন নিয়মিত চেজ হচ্ছে। তাই উইকেটে যদি পক্ষে থাকে, তাহলে আমাদের ৩শ’ করতে হবে। সেক্ষেত্রে সেট ব্যাটসম্যান যদি বড় রান না করে তাহলে এই লক্ষ্য পূরন করা কঠিন হয়ে যাবে।’
১০ মাস পর ওয়ানডে প্রত্যাবর্তনে ব্যাটিং-বোলিং প্রত্যাশিত না হাওয়ায় বড় অভিযোগ নেই মাশরাফির। তবে তিন তিনটি সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করায় প্রচÐ ক্ষুদ্ধ তিনিÑ ‘ফিল্ডিং নিয়ে অজুহাত দেয়া ঠিক হবে না। ফিল্ডিংয়ের জন্য খেলার মধ্যে থাকতে হবে, এমন কোনো বিষয় দেখছি না। চাইলেই ফিল্ডিংয়ে উন্নতি করা যায়। তাই এটা কোনো অজুহাত হতে পারে না। প্রথম ম্যাচে এটা হয়নি। কেন যেনো মনে হয়েছে বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ঠি ঠাক মতো পজিশনে ছিল না। এর কারণে ফিল্ডিং খারাপ হতে পারে।’
ক্যারিয়ারের শেষ দিকে এসেও মাশরাফি দিচ্ছেন বোলিংয়ে দলকে নেতৃত্ব। তার নেপথ্য কারণ জানিয়েছেন বাংলাদেশ ওয়ানডে অধিনায়কÑ ‘আমি সব সময় চেষ্টা করি একটা জায়গায় ধারাবাহিকভাবে বল করে যেতে। আধুনিক ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানরা চার্জ করে। তিারপরও যদি এক জায়গায় অনবরত বল করে যায়, তাহলে সফলতা পাওয়া যাবেই। আমি সব সময় সেদিকেই ফোকাস করি।’
দলে বোলিং বিকল্প থাকার পরও মাশরাফি ব্যবহার করেননি সাব্বির রহমান রুম্মানকে, মাহামুদুল্লাকে ২ ওভারের বেশি বল করাননি। পরিস্থিতির কারণেই নাকি সেই ঝুঁকি নেননি বলে জানিয়েছেন মাশরাফিÑ ‘আমাদের হাতে রুম্মান, রিয়াদ ছিল। যখন আস্কিং রেট ৬’র নিচে থাকবে, তখন মূল বোলার ছাড়া অন্য বোলারকে ব্যবহার করা কঠিন। তাই আমি পাঁচজন বোলারকে নিয়ে ট্রাই করেছি। রিয়াদকেও দিয়ে বোলিং করিয়েছি। মনে করি না বোলার শর্ট ছিল। কোনো পর্যায়ে হয়ত ভাবছিলাম সাব্বিরকে আনব। কিন্তু তারপরও ঝুঁকি নেই।কারণ জানতাম একটা-দুটা উইকেট ম্যাচ পরিবর্তন করে দিবে।’
মুখস্ত সুইপ শটে আউট হয়েছেন মুশফিকুর। এই ব্যাটসম্যানের ব্যাটিং এখন আগের মতো কথা বলছে না। তারপরও মুশফিকুরের উপর আস্থা রাখতে চান মাশরাফিÑ ‘গত দেড় বছরের পরিসংখ্যানে মুশফিকের গড় রান ৪০-৪৯। তাছাড়া ওর স্ট্রেন্থ ওই শটটাই। ওই শটে অনেক রান করে। যদি ওটা বন্ধ করে দেন তাহলে রানের জায়গাও কমে যাবে। ও নিজেই অনেক কিছু ওয়ার্কআউট করে। খেলোয়াড় ও সতীর্থ হিসেবে ওর প্রতি আমার অগাধ বিশ্বাস।’ গত বছর বিশ্ব ক্রিকেটে অন্যভাবে আবির্ভূত হওয়া সৌম্য সরকারের এ বছরটা ভাল যাচ্ছে না। তার পরও এই টপ অর্ডারকে নিয়ে উদ্বিগ্ন নন মাশরাফিÑ ‘ক্যারিয়ারের শুরুতে ও যা করেছে তা অপ্রত্যাশিত। ওটা যদি ধরে ওকে এখন সবাই রিড করে তাহলে ওর প্রতি অবিচার করা হবে। আমাদেরও কিছু দায়িত্ব আছে। অন্য দলগুলো প্রথম দশ ম্যাচ সেভাবে রিড করে না। ১১তম ম্যাচ থেকে অন্যভাবে রিড করা শুরু করে। আমি বিশ্বাস করি সৌম্য ঠিক পথে আছে। চেষ্টা করে যাচ্ছে। হয়তবা মনযোগ আরেকটু বাড়াতে পারে। আগের পারফরমেন্সের সঙ্গে না মিলিয়ে এখান থেকে টেক অফ করতে পারে হার্ড টাইমটা ওকে আরও শক্ত করে তুলবে।’
প্রতিপক্ষ র‌্যাঙ্কিংয়ের নীচু সারির দল হলে মাস্ট উইনের চাপ থাকে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে নাকি সেই চাপের মুখেই পড়তে হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাশরাফিÑ ‘অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইংল্যান্ড যখন আমাদের সঙ্গে খেলে তখন ওদের বাড়তি চাপ থাকে। শেষ ম্যাচটা অলমোস্ট ৯০ ভাগ ওদের পক্ষে ছিল। ওখান থেকে ফিরে এসে ম্যাচ জেতা একটা ‘চরিত্র’।’
বড়দলগুলো না হলেও তো ছোট দলগুলোর সঙ্গে বেশি বেশি ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে পারে বাংলাদেশ দল। থাকতে পারে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মধ্যে সারা বছর। তবে এই ফর্মূলার বিপরীতে ২০১৯ বিশ্বকাপে সরাসরি অংশগ্রহণের কথাও মাথায় রাখতে হচ্ছে মাশরাফিকেÑ‘অবশ্যই যায়। ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিশ্বকাপের একটা সিস্টেম আছে। ওদিক নজর রাখতে হবে।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন