বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রাজধানীতে গ্রেফতার ৫৮৭

সড়কে বেড়েছে যানবাহনের চাপ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ জুলাই, ২০২১, ১২:০০ এএম

করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তৃতীয় দিনের মতো সারাদেশে পালিত হয়েছে বিধিনিষেধ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হলেই নানা ধরনের পুলিশি ঝামেলায় পড়তে হয়। এমন পরিস্থিতিতেও ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন সড়কে মানুষ ও ব্যক্তিগত পরিবহনের চাপ বেড়েছে। অনেক স্থানে পুলিশের চেকপোস্ট ঢিলেঢালা হওয়ায় অবাধে মানুষ চলাফেরা করতে দেখা গেছে। গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে। তবে কঠোর বিধিনিষেধের তৃতীয় দিনে নিয়ম লঙ্ঘন করায় ৫৮৭ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এ সময় ২৩৩ জনকে জরিমানা করা হয়েছে এক লাখ ৯৫০ টাকা।

গতকাল সন্ধ্যায় ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগ থেকে জানানো হয়, বিধিনিষেধের নিয়ম অমান্য করায় গতকাল রাজধানী থেকে ৫৮৭ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির বিভিন্ন থানা। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ২৩৩ জনকে এক লাখ ৯৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ডিএমপি ট্রাফিক কর্তৃক ৫২১টি গাড়িকে ১২ লাখ ৭২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও র‌্যাবের পক্ষ থেকে সারাদেশে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ১৮৯ জনকে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তারপরও মানুষকে ঘরে রাখা যাচ্ছে না।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন শাহিদুর রহমান। গতকাল সকালে মোটরসাইকেল চালিয়ে নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসছিলেন অফিসের কাজে। তেজগাঁওয়ে ঢাকা পলিটেকনিকের সামনে দিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের চেকপোস্টে তাকে আটকানো হয়। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা তার মোটরসাইকেলের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাইলে রেজিস্ট্রেশন কার্ড দেখাতে না পারায় ১২০০ টাকার মামলা দায়ের ও নগদ আদায় পরে পুলিশ। শাহিদুর রহমান জানান, গতকাল থেকে অফিসের কাজ শুরু হয়েছে। এ কারণে সকালে অফিসের কাজে বেরিয়েছেন। মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশনের জন্য টাকা জমা দিলও অফিশিয়াল কাগজপত্র পাননি।

আইএফআইসি ব্যাংকের কর্মকর্তা মামুন শেখ ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে মতিঝিল যাওয়ার পথে পুলিশের চেকপোস্টে আটকা পড়েন। বাইরে বের হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, গতকাল থেকে ব্যাংক খুলেছে। সকালে অফিসে আসলেও এখন জরুরি কাজে মতিঝিল যাচ্ছেন। পরে তাকে যেতে দেয়া হয়।

এছাড়া মিরপুর, বিজয় সরণি, মহাখালী, মৎস্য ভবনসহ মহানগরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে কিছু জায়গায় দেখা গেছে চেকপোস্ট বসানো হলোও সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই অবাধে যানবাহন চলাচল করছে। মিরপুর-১০, ১১ ও ১২ নম্বর ঘুরে দেখা গেছে, প্রধান ও অভ্যন্তরীণ সড়কে মানুষের চলাচল অনেকাংশেই বেড়েছে। নিয়ম ও স্বাস্থ্যবিধি না মানলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে মামলা দেয়া ও জরিমানা করা হয়। এদিকে গতকাল দুপুর ১টার পরে মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে বিজিবির তত্ত্বাবধানে মোবাইল কোর্টের কার্যক্রম শুরু হয়। এ সময় মাস্ক না পরা ও বিনা প্রয়োজনে বাইরে বের হয়ে লকডাউনের আইন অমান্য করায় ২২ জনকে জরিমানা করা হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট খায়রুন নাহার বলেন, করোনা প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। কেউ আইনের ব্যত্যয় ঘটালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে সোপর্দ করছে। তিনি আরো বলেন, মাস্কবিহীন কাউকেই ছাড় দেয়া হয়নি। করোনা প্রতিরোধে সবাইকে মাস্ক পরিধান করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। কেউ আইন অমান্য করলে জরিমানা অব্যাহত থাকবে।

অপরদিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের যৌথ অভিযান পরিচালান করে। কঠোর লকডাউনে যারা বিনা কারণে বাইরে বের হয়েছেন এবং স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। মোহাম্মদপুর মোড়ে ক্যাপ্টেন ইমরান কবীরের সহায়তায় চেকপোস্ট পরিচালনা করছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমা সিদ্দীকা বেগম।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমা সিদ্দীকা বেগম বলেন, গতকাল সকাল থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তায় চেকপোস্ট পরিচালিত হয়। অনেকেই মাস্ক ছাড়া বের হয়েছিলেন, তাদের সতর্ক করা হয় এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন