দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার অন্যতম প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি নৌপথ দুটিতে সীমিত ফেরি চলাচলে যাত্রীদের দুর্ভোগ কাটছেই না। চলতি বছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে চারবার পদ্মা সেতুর পিলারে ধাক্কা লাগার পর থেকে এ নৌরুটে চলাচলকারী মানুষের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। টানা ৪৭ দিন বন্ধ থাকার পর গত ৪ অক্টোবর ছোট যানবাহন নিয়ে ৪টি ফেরি শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে চলাচল শুরু করে। এক সপ্তাহ চলার পরই আবার বন্ধ হয়ে যায় ফেরি চলাচল। কয়েকবার পরীক্ষামূলক চালানোর পর দুই সপ্তাহ পর আবার ফেরি চলাচল শুরু হয়। এদিকে, শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি নতুন নৌরুটে অন্তত তিনবার পরীক্ষামূলক ফেরি চলার পর এখন দিনে মিডিয়াম ফেরি চলাচল করছে। পণ্যবাহী ট্রাক কিংবা পিকআপ এ নৌরুটে চলতে না পারায় ব্যবসায়ীদের ক্ষতি হচ্ছে। আরিচা ঘাট হয়ে পারাপার হওয়ায় একদিকে ১৫০-২০০ কিলোমিটার দূরত্ব বেশি পাড়ি দিতে হচ্ছে। আর অন্যদিকে পরিবহন ব্যয় গুনতে প্রায় ২৫ শতাংশ।
লৌহজং উপজেলার ঘোড়দৌড় বাজারের গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ী রুহুল আমিন দীপু বলেন, আমরা বাগেরহাট থেকে গ্যাস আনি। সব সময় বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে গ্যাস আনতাম। এখন ছোট পরিবহন নিয়ে সীমিত আকারে ফেরি চলাচল করায় আমার মতো ব্যবসায়ীদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, পদ্মা নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে কর্তৃপক্ষ বড়ো ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছে। অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে শীতকালে নদী শান্ত থাকে। আমি পদ্মা পাড়ের মানুষ। আমি জানি কখন স্রোতের বেগ বেশি থাকে। এই সময়েও স্রোতের গতির দোহাই দিয়ে বড়ো ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা অজুহাত ও অদক্ষতা ছাড়া কিছুই না।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. শাফায়াত হোসেন জানান, সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ৪টি মিডিয়াম ফেরি দিয়ে সীমিত সংখ্যক ছোট যানবাহন নিয়ে ফেরি চলাচল করছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরেও ঘাটে প্রায় দেড় শতাধিক ছোট গাড়ি অপেক্ষমান রয়েছে। বিকাল পর্যন্ত যদি ঘাটে অপেক্ষমান যানবাহনগুলো পারাপার না হয়। তাহলে মাঝির ঘাট দিয়ে একটি ফেরি চলাচল করবে রাতে। এতে হয় তো দক্ষিণবঙ্গের যাত্রীদের দুর্ভোগ একটু কমবে। সেই সাথে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ঘাটে যানবাহনের চাপটা বেড়েছে। এ দুর্ভোগের পরিত্রাণ কবে নাগাদ শেষ হবে সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলতে পারবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন