রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কঠোর লকডাউনের ৫ম দিনে রংপুরে ব্যাপক হারে বেড়েছে যানবাহন ও মানুষের চলাচল

রংপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ জুলাই, ২০২১, ১২:৪৪ পিএম

মহামারী করোনার বিস্তার রোধে দুই সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধের ৫ম দিনে আজ (মঙ্গলবার) রংপুর মহানগরীতে ব্যাপক হারে বেড়েছে মানুষের চলাচল ও যানবাহনের সংখ্যা। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অনেকেই খুলেছেন দোকানপাট। খোদ নগরীর প্রধান সড়কের দু’ধারেই বেশ কিছু দোকান-পাট খোলা দেখা গেছে। নগরীর শাপলা চত্বর থেকে রংপুর হাই স্কুলের গেট পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে অধিকাংশ দোকানই খোলা দেখা গেছে। এসব দোকানের প্রায় সবগুলোই একটি করে শার্টার খোলা রেখে পন্য কেচা-বেচা চলছে। বিশেষ করে নগরীর বেতপট্রি, হাড়িপট্রি, নবাবগঞ্জ বাজার এলাকায় বেশিরভাগ দোকানই খোলা দেখা গেছে। এসব দোকানে কেনা-কাটা করতে লোকজনেরও ব্যাপক ভীড় পরিলক্ষিত হয়েছে। নগরীর নাভী হিসেবে খ্যাত এই এলাকায় গেলে লকডাউনের কোন অস্তিত্বই চোখে পড়ছে না। সব কিছুই যেন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। নগরীর প্রধান সড়কটির বিভিন্ন স্থানে পুলিশী চেকপোস্ট থাকলেও পূর্বের মত তৎপরতা নেই। নানা অযুহাতে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা কমছে না, বরং বেড়েই চলেছে। সচেতনতার অভাব ও প্রশাসনের নমনীয়তায় কঠোর বিধিনিষেধ চলছে একেবারেই ঢিলেঢালাভাবে।
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকাল থেকেই নগরীর মেডিকেল মোড়, কাচারী বাজার, পায়রা চত্বর, জাহাজ কোম্পানীর মোড়, সাতমাথা, মর্ডান মোড়, শাপলা চত্বর, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালসহ বেশকিছু এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। দেখা গেছে নগরীর বিভিন্ন মোড়ে ও বাজার সংলগ্ন পয়েন্টগুলোতে মানুষের জটলা অন্যান্য দিনের চেয়ে ঢের বেশি। রাস্তায় চলাচলরত কারোর মধ্যেই যেন করোনা ভীতি নেই। নিয়ম লঙ্ঘনের দায়ে জরিমানা গুণছেন অনেকেই। তারপরও কমছে না লোকজনের চলাচল। বিভিন্ন স্থানে দোকানপাট খোলা নিয়ে চলছে লুকোচুরি। সকাল থেকেই দোকানগুলোর অর্ধেক ঝাপ তুলে রেখে কেনা-বেচা করছেন ব্যবসায়ীরা। দোকানের একটি শার্টার খুলে রেখে পাশেই বসে থাকছেন দোকানদারগন। পুলিশ কিংবা প্রশাসনের গাড়ি দেখলেই শার্টার নামিয়ে দিচ্ছেন। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ছাড়াও নগরীর অলি-গলিতে রিকশা, অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাসের চলাচল পুর্বের তুলনায় ব্যাপক বেড়েছে। বেশির ভাগ মানুষেরই মুখে মাস্ক থাকলেও তা ঝুলছে থুতনিতে। পরিবারের বিভিন্ন চাহিদার অযুহাতেই বাহিরে এসেছেন সকলেই। তাদের কেউ পায়ে হেঁটে বা আবার কেউ বের হয়েছেন অটোবাইক ও রিকশা নিয়ে।
বিধিনিষেধ কার্যকর করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সাথে নিয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে কাজ করছেন। যানবাহনের অযাচিত ও অপ্রয়োজনীয় চলাচল নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ বিভিন্ন স্থানে চেকপোষ্ট বসিয়ে কাজ করছে। যৌক্তিক কারণ দেখাতে না পারলে জরিমানা গুনতে হচ্ছে। বিনা কারণে বাইরে হওয়া লোকদের সতর্ক করে জরিমানাসহ বিভিন্নভাবে শাস্তিও দেয়া হচ্ছে। তারপরও লোকজনকে আটকানো যাচ্ছে না। দিন দিন মার্কেট এবং রাস্তায় লোকজনের চলাচল বেড়েই চলেছে।
এদিকে, লকডাউনের কারনে সন্ধ্যার পর থেকে প্রতিটি পাড়া মহল্লার মোড়ে মোড়ে আড্ডা দেয়া লোকজনের জটলা বেড়েই চলেছে। গতকাল নগরীর বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। দেখা গেছে, প্রতিটি পাড়া-মহল্লার মোড়ে মোড়ে চা-পানের দোকান খোলা। এসব দোকানের সামনে একাধিক বেঞ্চ দেয়া হয়েছে। সামাজিক দুরুত্বের বালাই নেই এসব স্থানে। বরং এসব বেঞ্চে গাদাগাদি করে বসেই চলছে আড্ডা।
আরপিএমপির সহকারী পুলিশ কমিশনার মোঃ ফারুক আহমেদ (ডিবি এন্ড মিডিয়া) জানিয়েছেন, বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার বাহিনীর ২টি করে টহল দল কাজ করছে। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ৬টি থানা, ট্রাফিক বিভাগ ও ডিবির ২৫টি টহল টিম মাঠে কাজ করছে। বিধি-বহির্ভূতভাবে বিভিন্ন যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণে নগরীতে ২০টি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।
মেট্রোপলিটন পুলিশের ৬ থানা ও ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক বিভিন্ন যানবাহনের বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এ মোট ১২৩ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে ১২ টি যানবাহন এবং জরিমানা করা হয়েছে হয়েছে মোট ৩,৯৯,৫০০ টাকা।
এছাড়াও রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ৬ থানা, ট্রাফিক ও ডিবি কর্তৃকসহ জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনীর টহল দল, র‌্যাব টহল দল এবং বিজিবি টহল দল যৌথভাবে রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকায় লকডাউনের বিধি নিষেধ বাস্তবায়নে মোট ১২ টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে। এতে মোট ৫,১০০ টাকা টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন