বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

দুবাইয়ে সহস্রাধিক নারী পাচার আজম খানের জামিন স্থগিত

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০২১, ১২:০১ এএম


আন্তর্জাতিক নারী পাচারচক্রের প্রধান আজম খানের জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট। সরকারপক্ষীয় এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল মঙ্গলবার চেম্বার জাস্টিস ওবায়দুল হাসান এ আদেশ দেন।
গত ১৯ জুলাই আজম খানকে জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়। শুনানি শেষে উপরোক্ত আদেশ হয়। এর ফলে এ মামলায় আজম খানের কারামুক্তি আপাত : আটকে গেল। আজম খানের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। সরকারপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন। তাকে সহায়তা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।

বিদেশে চাকরির নামে দেশের হাজারেরও বেশি তরুণী-কিশোরীকে দুবাই পাচার করে তাদের অনৈতিক কাজে জড়াতে বাধ্য করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় আজম খানকে। সহযোগীসহ আজম খানকে গ্রেফতারের পর গতবছর ১২ জুলাই সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম প্রধান ডিআইজি ইমতিয়াজ আহমেদ ব্রিফিংয়ে জানিয়েছিলেন, দুবাইয়ে মানবপাচার চক্রের গডফাদার আজমের বিলাসবহুল হোটেলের সন্ধান পেয়েছি। তিনি ‘ফরচুন পার্ল হোটেল অ্যান্ড ড্যান্স ক্লাব’, ‘হোটেল রয়েল ফরচুন’, ‘হোটেল ফরচুন গ্রান্ড’ ও ‘হোটেল সিটি টাওয়ার’র অন্যতম মালিক। এর মধ্যে তিনটি ফোর স্টার, একটি থ্রি স্টার মানের হোটেল। তিনি বাংলাদেশে অর্ধশত দালালের মাধ্যমে কিশোরী অথবা ২০-২২ বছরের মেয়েদের উচ্চ বেতনে কাজ দেয়ার কথা বলে প্রলুব্ধ করতেন। দালালরা মেয়েদের প্রলুব্ধ করে নির্ধারিত দু’টি বিদেশি এয়ারলাইন্স এজেন্সির মাধ্যমে দুবাই পাঠাত। সেখানে যাওয়ার পর তাদের প্রথমে ছোটখাটো কাজ দেয়া হতো। পরে জোরপূর্বক ড্যান্স ক্লাবে নাচতে বাধ্য করা হতো। আটকে রাখা হতো, খাবার দেয়া হতো না। শারীরিক নির্যাতন করা হতো। বৈদ্যুতিক শক পর্যন্ত দেয়া হতো এবং দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হতো।

সিআইডির ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ভিকটিমদের অগ্রিম বেতন দেয়ার কথা বলে প্রলুব্ধ করা হতো। দুবাই পর্যন্ত ভিকটিমদের যাওয়া-খাওয়া, থাকার সব খরচ দালালচক্র পরিশোধ করত। অগ্রিম বেতন হিসেবে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত পরিশোধ করতেন আজম। কিন্তু দুবাই ড্যান্সবারে কিংবা হোটেলে নেয়ার পর তাদের আর বেতন দেয়া হতো না।

তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুবাই সরকার বাংলাদেশ দূতাবাসকে জানিয়ে চক্রের গডফাদার আজমের পাসপোর্ট জব্দ করে দেশে ফেরত পাঠায়। দেশে ফেরার পর আজম আত্মগোপনে যান। বারবার নিজের অবস্থান পরিবর্তন করেন। নতুন পাসপোর্ট করে সীমান্ত দিয়ে ভারত পালানোর চেষ্টা করেন। তবে তার আগেই দুই সহযোগীসহ সিআইডির চৌকস দল তাকে আটক করে। আজমের বিরুদ্ধে ৬টি হত্যাসহ ১৫টি মামলা রয়েছে। তরুণীদের সঙ্গে ফোনালাপের অডিও ক্লিপ সিআইডির হস্তগত হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে আজম স্বীকার করেন যে, ৮ বছরে তিনি এক হাজারেরও বেশি তরুণীকে দুবাই পাচার করেছেন। এ গতবছর ২ জুলাই রাজধানীর লালবাগ থানায় একটি মামলা করে সিআইডি।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন