ব্রাক্ষণবাড়িয়ার সড়াইলের ধামাউড়া গ্রামে ঈদুল আজহার আগে আব্দুর রহিম নামে মসজিদের এক ইমাম হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে সিআইডি। হত্যাকান্ডে জড়িত ইমামের দুই ভাই ও এক ভাতিজাকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। তারা হলো- ইমামের ভাই মো. সহেদ মিয়া (৫০), আব্দুল্লাহ (৪০) ও ভাতিজা মো. জুনাইদ মিয়া (২০)। রোববার রাজধানীর খিলগাঁও ও তেজগাঁও থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। বসত ঘরের ভিটায় মাটি ফেলানোকে কেন্দ্র করে ইমামের সঙ্গে তার ভাইদের কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তার দুই ভাই, এক ভাইয়ের স্ত্রী ও এক ভাতিজা তাকে পিটিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
তিনি বলেন, ভিকটিম আব্দুর রহিম সড়াইল থানার ধামাউড়া গ্রামের বাসিন্দা। তবে তিনি পাশের থানা নাসিরনগরের ফেদিয়ারকান্দি মসজিদের ইমাম ছিলেন। গত ঈদুল আজহার আগের দিন দুই ভাই, ভাইয়ের স্ত্রী ও এক ভাতিজা তাকে পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ঘটনার দিনের বর্ণনা দিয়ে মুক্তা ধর বলেন, গত ২০ জুলাই ইমামের দুই ভাই পরিবারসহ ঢাকা থেকে ঈদ উদযাপন করতে বাড়িতে যান। বাড়িতে গিয়ে দেখেন, ইমাম তার বসতঘরের ভিটার মাটি ঠিকঠাক করার কাজ করছে। মাটি ফেলানো ও ঠিকঠাক করাকে কেন্দ্র করে ভিকটমের তাদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি শুরু হয়। এই কথাকাটাকাটি মুহূর্তের মধ্যে প্রচন্ড বাগবিতন্ডায় রূপ নেয়। পরে দুপুর ১২টায় বাগবিতন্ডার এক পর্যায়ে মো. সহেদ মিয়া, আব্দুল্লাহ, মো. জুনাইদ ও আব্দুল্লাহর স্ত্রী রত্না বেগম বল্লম ও লাঠি দিয়ে জখম করে ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। পরে এ ঘটনায় ব্রাক্ষণবাড়িয়ার সড়াইল থানায় একটি মামলা করা হয়। ঘটনাটি স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় আলোচিত ঘটনা হিসেবে প্রচারিত হলে সিআইডি ঘটনাটির ছায়াতদন্ত শুরু করে।
তিনি আরো বলেন, মামলার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে আসামিদের সম্ভাব্য লুকানোর সকল স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এর প্রেক্ষিতে সিআইডির একটি দল মামলার এক নম্বর আসামি মো. সহেদ মিয়া, তার ছেলে তিন নম্বর আসামি মো. জুনাইদ মিয়াকে তেজগাঁও এবং দুই নম্বর আসামি আব্দুল্লাহকে খিলগাঁও থেকে গ্রেফতার করা হয়। মামলা দায়ের হওয়ার পর আসামিরা ঢাকায় এসে আত্মগোপন করেন। পরে মামলার বাদী ভিকটিমের ছেলেকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখায়। এছাড়া মামলার সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছিল। আর এ ঘটনায় মামলার পলাতক আসামি রত্না বেগমকে গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন