কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পদ্মার ভাঙনে কয়েক হাজার একর আবাদী জমি ও বসত বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকির মুখে রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।
এলাকাবাসীর দাবি ভাঙনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের। তবে দৌলতপুরের সংসদ সদস্য আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান বাদশাহ্র প্রচেষ্টায় পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ফেলে তা নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পদ্মা নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে নদী ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। দৌলতপুর উপজেলার মরিচা ইউনিয়নের ৩টি ওয়ার্ডের অসংখ্য মানুষের পদ্মা নদীর ভাঙনে কয়েক হাজার একর আবাদী জমি ও বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। হুমকিতে রয়েছে রায়টা-মহিষকুন্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন খুটি, সরকারি স্থাপনা ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ক্ষতিগ্রস্থরা জানিয়েছেন, ফসলি জমি ও বসতবাড়ি পদ্মাগর্ভে চলে যাওয়ায় তারা এখন সর্বশান্ত ও আশ্রয়হীন। ভাঙন ঠেকাতে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি তাদের। মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলপাড়া এলাকার কৃষক ফজলুল হক জানান, প্রতিবছরই পদ্মা নদীতে পানি আসলে জমি জায়গা ভেঙে নদীতে তলিয়ে যায়। এবারও এলাকার অসংখ্য মানুষের আবাদী জমি পদ্মার ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এলাকাবাসীর জমি জায়গা ও ঘর-বাড়ি বাঁচাতে পদ্মার ভাঙনরোধে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
উজ্বল হোসেন নামে এক স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী জানান, মরিচা ইউনিয়নের ভুরকা হাটখোলা পাড়া ও কোলদিয়াড় এলাকায় পদ্মার ভাঙন ঠেকাতে এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
মরিচা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহ আলমগীর জানান, নদী ভাঙনের কবলে তার ইউনিয়ন ব্যাপক হুমকির মুখে আছে। ইতিপূর্বে তার ইউনিয়নের নদীভরাট, চিতলমারী, রুইমারী, চৌদ্দহাজার ও নতুন চরসহ অনেকগুলো গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে হাটখোলাপাড়া, ভুরকাপড়া ও কোলদিয়াড় এলাকা প্রবল নদী ভাঙনে জমি জায়গা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বেশ কয়েকটি প্রাইমারী ও হাইস্কুল এবং ভারত-বাংলাদেশ বিদ্যুৎ সঞ্চালন খুঁটি হুমকির মুখে রয়েছে। তিনি পদ্মার ভাঙনরোধে অতিশীঘ্রই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে এ ইউনিয়নের ৩টি ওয়ার্ড নদী ভাঙন থেকে রক্ষার ব্যবস্থা করার দাবি করেন। যাতে তাদের আবাদী জমি বাড়ি-ঘর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ রাস্ত-ঘাট ও জুনিয়াদহ বাজার এবং অসংখ্য সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা রক্ষা পায়।
দৌলতপুরের মরিচা ইউনিয়নের হাটখোলপাড়ার পদ্মার ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৗশলী আফছার উদ্দিন জানান, পদ্মার ভাঙনরোধে ১০৬ মিটার এলাকায় ১৩ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এটা আরও সম্প্রসারিত হবে বলে তিনি জানান।
তবে আশ্বাস নয়, সর্বগ্রাসী পদ্মার করাল গ্রাস থেকে দুই উপজেলার মানুষকে বাঁচাতে স্থায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক, এমনটাই দাবি ভুক্তভোগীসহ পদ্মা তীরবর্তী এলাকার মানুষের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন