এবার একজন স্ট্রাইকার দলে আনতে চেয়েছিল বার্সেলোনা। তাই বলে দলটার কোচ রোনাল্ড কোমান যে তাঁকে সেভাবে চেয়েছিলেন, তা কিন্তু নয়। কোমানের মূল আগ্রহ ছিল স্বদেশি মেম্ফিস ডিপাইয়ের প্রতি, নেদারল্যান্ডসের কোচ থাকার সময় যে মেম্ফিসকে নিজের হাতে গড়েছেন বিশ্বের অন্যতম কার্যকরী ফরোয়ার্ড হিসেবে।
কোমানের আগ্রহ থাকুক বা না থাকুক, মেম্ফিসকে দলে আনা হোক বা না হোক, সার্জিও আগুয়েরোকে দলে নেওয়ার জন্য বার্সা কর্তৃপক্ষের আগ্রহ ছিল ষোলো আনা। মেম্ফিসের মতো আগুয়েরোকে আনার জন্যও দলবদল ফি বাবদ কিছু দিতে হয়নি, তার ওপর মেসি-আগুয়েরো সেই কিশোর বয়স থেকেই হরিহর আত্মা। মেসির আরেক বন্ধু নেইমারকে দলে ফেরাতে ব্যর্থ বার্সেলোনা দলের সবচেয়ে বড় তারকার মন রাখতেই আগুয়েরোকে দলে টানার সুযোগটা হেলায় হারাতে চায়নি। আগুয়েরোও বন্ধুর সঙ্গে খেলবেন, এই লোভে বার্সায় নাম লেখাতে দুবার ভাবেননি। কিন্তু এরপর তো ঘটনা ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেল, নিশ্চিত হলো বার্সেলোনা থেকে মেসির বিদায়। আগুয়েরো এক দরজা দিয়ে ঢুকলেন, অন্য দরজা দিয়ে বেরিয়ে গেলেন মেসি!
বার্সার সঙ্গে মেসির আগের চুক্তি ৩০ জুনই শেষ হয়ে গিয়েছিল। এরপর দুই পক্ষের চুক্তি নবায়ন হবে বলে নিশ্চিত করেছিল ইউরোপের সংবাদমাধ্যম। কিন্তু আর্থিক জটিলতায় লা লিগার কাছে মেসির নিবন্ধন করাতে পারছে না দেখে বার্সা জানিয়ে দেয়, বিচ্ছেদই সমাধান। মেসি-বার্সার ২০ বছরের সম্পর্ক শেষ হয়ে গেল। মেসি এখন তার আরেক প্রাণের বন্ধু নেইমারের ক্লাব পিএসজিতেই যাচ্ছেন বলে জোর গুঞ্জন। অবস্থা দেখে আগুয়েরো নাকি এতটাই হতাশ, ক্লাব ছাড়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম কাদেনা সেরের নির্ভরযোগ্য সাংবাদিক সিকে রদ্রিগেজের কথায় আগুয়েরোর হতাশার মাত্রাটা একটু আঁচ করা যায়। এই সাংবাদিক জানিয়েছেন, ‘আমার মনে হয়, বার্সেলোনা ফ্রিতে দল ছেড়ে যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে গেছে। আগুয়েরোকে যদি বার্সা না ছাড়তে চায়, সে ক্ষেত্রে চোটের বাহানা দিয়ে হলেও বার্সেলোনার হয়ে খেলবেন না তিনি।’
কিছুদিন আগেই আর্জেন্টাইন দৈনিক টিওয়াইসি স্পোর্ত জানিয়েছিল, মেসির ব্যাপারে আগুয়েরো হতাশ। মাদ্রিদভিত্তিক স্প্যানিশ দৈনিক এএস তাদের স্প্যানিশ সংস্করণে লিখেছিল, কদিন আগেই বার্সায় যোগ দেওয়া আগুয়েরো এখনই বার্সা ছাড়তে চান! স্প্যানিশ টিভি বেতেভের ‘লা পোর্তেরা’কে সূত্র হিসেবে জানিয়ে এএস লিখেছিল, বার্সা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা তার সঙ্গে ‘প্রতারণা’ করেছেন বলে মনে হচ্ছে আগুয়েরোর। কারণ, লাপোর্তা তাঁকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, মেসির সঙ্গে খেলতে পারবেন। লাপোর্তা সভাপতি হয়ে বার্সায় ফেরার পর প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে আগুয়েরোকেই দলে নিয়েছেন।
তবে আগুয়েরো যদি এই মৌসুমে বার্সা ছাড়তেও চান, ছাড়তে পারেন। কারণ, যে কারণে মেসি বার্সা ছেড়েছেন, সে একই কারণে নতুন আসা চারজন খেলোয়াড় আগুয়েরো, মেম্ফিস, এমারসন ও এরিক গার্সিয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধন করতে পারেনি বার্সেলোনা। নিবন্ধন করার আগে দলের বেতন বিল কমাতে হবে। কমাতে না পারলে এই চারজনকে বার্সেলোনা প্রতিযোগিতামূলক কোনো ম্যাচে নামাতে পারবে না। আর আনুষ্ঠানিকভাবে যে খেলোয়াড় দলের সঙ্গে নিবন্ধিত নন, তিনি চাইলে এক দলবদলে দুবার দল পাল্টাতে পারেন। হয়তো সেই সুযোগটাই খুঁজছেন আগুয়েরো।
গত রাতে জুভেন্টাসের বিরুদ্ধে হোয়ান গাম্পার ট্রফিতে খেলতে নেমেছিল বার্সেলোনা। ম্যাচে চোটের কারণে স্কোয়াডে ছিলেন না আগুয়েরো। সিকে রদ্রিগেজের কথার পর আগুয়েরো আসলেই চোট পেয়েছেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছেই!
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন