শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

তামীমীয় ব্যাটিংই দেখল মিরপুর

প্রকাশের সময় : ২ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শামীম চৌধুরী : সিরিজের প্রথম ম্যাচেই তিন ফরমেটের ক্রিকেট মিলিয়ে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবার আগে পেয়েছেন ৯ হাজারী ক্লাবের সদস্যপদ। তবে ওই মাইলস্টোন ইনিংসের পরও তৃপ্ত হতে পারেননি অধিনায়ক মাশরাফি। প্রথম ম্যাচে ৮০ তে তামীমের ফিরে আসায় সেঞ্চুরি না পাওয়ায় দলের ৭ রানে জয়েও আক্ষেপ করেছেন তিনি। ছন্দে থাকা তামীমের কাছে তিন অঙ্কের ইনিংসের দাবিটা ছিল ওয়ানডে অধিনায়কের। কিন্তু সেই দাবিটা যে দ্বিতীয় ম্যাচেও পূরন করতে পারেননি তামীম। ফিরে গেছেন ২০ রানে। তবে দ্বি-পাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ মানেই অনেক বেশি ছন্দময় তামীম, এই বদ্ধমূল ধারণার প্রতিফলনই দিয়েছেন বাঁ হাতি এই ওপেনার। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে চেনা তামীমকেই গতকাল দেখেছে দর্শক। গত বছর পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ২ ম্যাচে উপর্যুপরি সেঞ্চুরি- ১৩২ও১১৬ রানের ওই ইনিংস দু’টিতে ভর করেই বড় জয় দেখেছে দর্শক। পাকিস্তানকে ৩-০তে হোয়াইট ওয়াশের এই নায়ককে পরবর্তী সেঞ্চুরি পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১২ ইনিংস,সময়ের হিসেবে ১৭ মাস ১১দিন!
দেশের হয়ে তিন ফরমেটের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান,তিন ভার্সনের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ইনিংসে অনন্য রেকর্ডটা গড়ে ফেলেছেন তামীম এ বছরই। সংখ্যার দিক থেকে তিন ফরমেটের ক্রিকেটে সর্বাধিক ১৫টি সেঞ্চুরিও তারই। ৪২ টেস্টে ৭ সেঞ্চুরির পাশে ১৫৫ ওয়ানডেতে ৬টি সেঞ্চুরি একটু বেমানানই মনে হয়েছে। পেছন থেকে বন্ধু সাকিবকে একটার পর একটা ভার্সনে রানে ছাড়িয়ে গেছেন। লড়াইটা ছিল ওয়ানডে সেঞ্চুরিতে। ১৫৬ তম ওয়ানডে ম্যাচে ৭ম সেঞ্চুরি উপহার দিয়ে সাকিবের ৬ সেঞ্চুরিকে গেলেন টপকে।
ভাগ্যটাও ছিল গতকাল তামীমের পক্ষে। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে আফগান অফ স্পিনার মোহাম্মদ নবীর বলে শর্ট মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন, আসগর স্ট্যানিকজাই সে ক্যাচটি ফেলে দেয়ার পর আর ভুল করেননি তামীম। ইনিংসের ৮ম ওভারে মিরওয়াইজ আশরাফকে তিন তিনটি বাউন্ডারিতে চেনা ছন্দে ফিরেছেন তামীম। পেয়েছেন মোহাম্মদ নবীর ওভার থ্রো থেকে বোনাস ৪ রান! ফিফটি, সেঞ্চুরির সামনে দাঁড়িয়ে তাড়াহুড়ো নয়, খেলেছেন সতর্ক দৃষ্টিতে। ৬৩তম বলে রহমাত শাহ’কে পয়েন্টে পুশ করে সিঙ্গলে পূর্ণ করেছেন ৩৪তম ওয়ানডে ফিফটি। সেঞ্চুরির শটেও সিঙ্গলকে দিয়েছেন প্রাধান্য। দৌলত জাদরানের বলে মিড অফে পুশ করে সিঙ্গলে ১১০তম বলে উদযাপন করেছেন ওয়ানডে ফিফটি। যে ইনিংসে ছিল না কোন ছক্কার মার। জানেন, প্রিয় পজিশন পয়েন্ট,ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে একটির বেশি বাউন্ডারি মারেননি তিনি এই ইনিংসে। সেঞ্চুরির ইনিংসকে ক্যারিয়ার সেরা ওয়ানডে ইনিংসে রূপটা দেয়া অসম্ভব মনে হয়নি তামীমের কাছে। পার্টনার সাব্বির ফিরে যাওয়ায় সেঞ্চুরির পর বিগ শটে দলের প্রয়োজন মেটাতে বেপরোয়া ব্যাটিংয়ে মনোনিবেশ করেছেন তামীম। রহমত শাহকে পর পর তিন বলে এক চার, ২ ছক্কায় মাতিয়েছেন গ্যালারি। তবে লং অন,লং অফের উপর দিয়ে বিশাল ২টি ছক্কায় গ্যালারি মাতিয়ে পরের ওভারেই দর্শককে স্তম্ভিত করেছেন তামীম। নবীকে ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে যেয়ে লং অফে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ১১৮ রানের মাথায় (১১৮ বলে ১১ চার ২ ছক্কা)।
তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে পাকিস্তানের বিপক্ষে গত বছর ৩১২ রানের রেকর্ডটি তামীমেরই। ওই সিরিজে মুশফিকুরের ২২০ রানের দ্বিতীয় সেরা সাফল্যকে টপকে যেতে পারেননি এই সিরিজে তামীম। আফগানিস্তানের বিপক্ষে থেমেছেন ২১৮ রানে (৭২.৬৬)।
গত বছর দারুণ কাটিয়ে এ বছর যেনো চেনাই যাচ্ছে না সৌম্যকে। এই সিরিজে ০, ২০’র পর গতকাল থেমেছেন এই বাঁ হাতি ওপেনার ১১ তে। পেসার মিরওয়াইজ আশরাফের অফ স্ট্যাম্পের বাইরে পিচিং ডেলিভারিতে ফ্লাশ করতে যেয়ে উইকেটের পেছনে দিয়ে এসেছেন এই ওপেনার ক্যাচ। তবে শুরুর ওই হতাশা কাটিয়ে তামীমের দিনে সিনিয়র ব্যাটিং পার্টনারে উদ্বুদ্ধ সাব্বির রহমান রুম্মান তিন নম্বরে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে ইনিংসকে করে রেখেছেন স্মরণীয় (৬৫)। তবে তামীম-রুম্মানে যে উজ্জীবনী টনিক পাওয়ার কথা, তা পাননি সাকিব (১৭), মুশফিকুর (১২)। তামীম যেখানে রেখে এসেছিলেন বাংলাদেশ দলকে, তাতে ৩’শ প্লাস স্কোরই ছিল প্রত্যাশিত। কিন্তু প্রথম ২ ম্যাচের মতো গতকালও সøগের ব্যাটিং মন ভরাতে পারেনি মিরপুর স্টেডিয়াম ঠাসা দর্শককে। প্রথম ম্যাচে শেষ ৬০ বলে ৬৯ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ ৭ উইকেট। দ্বিতীয় ম্যাচে শেষ ১০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে যোগ করতে পেরেছে ৫৪। সিরিজের শেষ ম্যাচেও ৪০ ওভারের পর হতাশ করেছে বাংলাদেশ দল। ৫ উইকেট হারিয়ে যোগ করতে পেরেছে ৬৪ রান! দৌলত জাদরানের অফ স্ট্যাম্পের বাইরে ওয়াইড ডেলিভারীতে ফ্লাশ করতে যেয়ে উইকেটের পেছনে সাকিব নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে আসায় (১৭), এবং আফগান লেগ স্পিনারের এক ওভারে ২টি গুগলি ডেলিভারীতে মুশফিকুর (১২), মোসাদ্দেকের (৪) ফিরে যাওয়ায় সøগ ওভারগুলোকে কাজে লাগাতে পারেনি মাশরাফির দল। শেষ বল পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গেছেন মাহামুদুল্লাহ (২২ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৩২ নট আউট)। তার কল্যানেই আফগানিস্তানকে ২৮০ রানের চ্যালেঞ্জ দিতে পেরেছে বাংলাদেশ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
MISHA ২ অক্টোবর, ২০১৬, ৭:৪১ পিএম says : 0
VERY GOOD BD
Total Reply(0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন