তুরস্কের প্রেসিডেন্টের রজব তাইয়্যেব এরদোগান বলেছেন, কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিচালনার ব্যাপারে তালেবান যে অনুরোধ করেছে সে বিষয়ে এখনো চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি আঙ্কারা। তিনি বলেন, আগামী ১ সেপ্টেম্বরের পরে কোন ধরনের নীতি গ্রহণ করা হয় তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছে তার দেশ। ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোটের সেনা প্রত্যাহার করার কথা রয়েছে। এরপর আফগানিস্তান সম্পর্কে আমেরিকা এবং ন্যাটো জোট কী সিদ্ধান্ত নেয় তার ওপর নির্ভর করছে তুরস্কের ভূমিকা। খবরে বলা হয়, প্রথমবারের মতো তালেবানের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে তুরস্ক। শুক্রবার তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগান এ তথ্য জানিয়েছেন। এরদোগান জানিয়েছেন, কাবুল বিমানবন্দরের একটি সামরিক এলাকায় তালেবানের সঙ্গে তুর্কি কর্মকর্তাদের বৈঠক হয়েছে। সামরিকীকৃত ওই এলাকায় সাময়িকভাবে তুর্কি দূতাবাসের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, ‘তালেবানের সঙ্গে আমাদের প্রথম বৈঠক হয়েছে, এটি সাড়ে তিন ঘণ্টা হয়েছিল। প্রয়োজন হলে এ ধরনের বৈঠক আমাদের আবারও করার সুযোগ রয়েছে।’ তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে তুরস্কের রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনা প্রসঙ্গে এরদোগান বলেন, ‘অস্থির অঞ্চলে অলসভাবে দাঁড়িয়ে থাকার মতো বিলাসী নয় আঙ্কারা।’ তালেবান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তাদের কী প্রত্যাশা কিংবা আমাদের কী প্রত্যাশা তা আমরা আলোচনা ছাড়া জানতে পারব না। বন্ধুরা, কূটনীতি কী জিনিস? এটাই কূটনীতি।’ কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিচালনার জন্য তালেবানের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল তুরস্ককে। এ ব্যাপারে তুরস্কও আগ্রহ প্রকাশ করেছিল। তবে তুর্কি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিমানবন্দরে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না পর্যন্ত এ ব্যাপারে এখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তারা নিচ্ছেন না। এর আগে কাবুল বিমানবন্দর পরিচালনা করতে তুরস্কের কাছে প্রযুক্তিগত সহায়তা চেয়েছিল তালেবান। এ বিষয়ে দুই তুর্কি কর্মকর্তা জানান, কাবুলে থাকা তুর্কি সামরিক বাহিনীকেও আগস্টের শেষ তারিখের মধ্যে পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হবে। ইসলামপন্থী তালেবান শর্তসাপেক্ষে কাবুল বিমানবন্দর পরিচালনার অনুরোধ করেছে। তবে এ ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি আঙ্কারা। এমনকি অল্প সময়ের মধ্যে সেনারা কাবুল বিমানবন্দর ত্যাগ করতেও প্রস্তুত রয়েছে। অবশ্য মাসখানেক ধরে প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের নেতৃত্বাধীন সরকার বলে আসছে যে, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করা হলেও তারা কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার জন্য কিছু সৈন্য রেখে যাবে। এখন তালেবান কাবুল দখল করার পর তাদেরকে বিমানবন্দরের প্রযুক্তিগত এবং নিরাপত্তা সহায়তা দিতে অনুরোধ করেছে গোষ্ঠীটি। এরই অংশ হিসেবে কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিচালনার বিষয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের এরদোগান বলেছেন, কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিচালনার ব্যাপারে তালেবান যে অনুরোধ করেছে সে বিষয়ে এখনও চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি আঙ্কারা। তিনি বলেন, আগামী ১ সেপ্টেম্বরের পরে কোন ধরনের নীতি গ্রহণ করা হয় তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছে তার দেশ। শুক্রবার বসনিয়া-হার্জেগোভিনা যাত্রার আগ মুহূর্তে ইস্তাম্বুলের আতাতুর্ক বিমানবন্দরে এক সংবাদ সম্মেলনে এরদোগান আরও বলেন, কাবুল বিমানবন্দর পরিচালনায় সহযোগিতা শুরুর আগে সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যথায় সেখানে যে ধরনের ঝুঁকি তৈরি হবে তা ব্যাখ্যা করা মুশকিল। বৃহস্পতিবার কাবুল বিমানবন্দরে যে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও হতাহতের ঘটনা ঘটেছে তার নিন্দা জানান তুর্কি প্রেসিডেন্ট। এদিকে আফগানিস্তানের কাবুলে ভয়াবহ হামলার পর ফের আফগানদের সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিমানবন্দরে আরও হামলার তথ্য পেয়েছে পেন্টাগন। আনাদোলু, রয়টার্স, বিবিসি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন