কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় পৃথক ঘরে পাওয়া গেছে বউ ও শাশুড়ির লাশ। গত শনিবার লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায় পুলিশ। লাশ উদ্ধার হওয়া দুই নারী হলেন উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের রামদিয়া গ্রামের মৃত বসির উদ্দিনের স্ত্রী রোকেয়া খাতুন ও তার ছেলে আবদুর রহমানের স্ত্রী হিরা খাতুন ওরফে জোসনা
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শাশুড়ি রোকেয়া ও পুত্রবধূ জোসনার মধ্যে পারিবারিক কলহের জেরে গত তিনদিন দুজনের মধ্যে কথা বলা বন্ধ ছিল। এমনকি তারা দুজনই তিনদিন ধরে না খেয়ে ছিলেন। একপর্যায়ে পুত্রবধূ জোসনা অসুস্থ হয়ে পড়লে বাড়িতে পল্লী চিকিৎসক এনে তাকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়।
এ অবস্থায় শুক্রবার রাতে ছেলে আব্দুর রহমান তার মা রোকেয়া খাতুন ও স্ত্রী জোসনাকে অনুরোধ করে দুজনের মধ্যে মীমাংসা করিয়ে দেন। ওইদিন দিনগত রাত ২টার দিকে রহমান তার মা রোকেয়াকে বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘরের আঁড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলে থাকতে দেখেন। খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা নামিয়ে দেখেন তিনি মারা গেছেন। শাশুড়ির আত্মহননের আধাঘণ্টার মাথায় আব্দুর রহমানের স্ত্রী জোসনারও নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। স্বজনদের অভিযোগ, জোসনার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাকিব হাসান বলেন, খবর পেয়ে শনিবার শাশুড়ি ও পুত্রবধূর লাশ সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়। পরে লাশগুলো ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়া ছাড়া হিরা খাতুনের মৃত্যুর বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাচ্ছে না।
রাকিব হাসান আরো বলেন, ওই বাড়ি থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, চিরকুটটি আব্দুর রহমানের স্ত্রী হিরা খাতুনের। ওই চিরকুটে লেখা, মুক্ত করে দিলাম, তুমি তোমার মাকে নিয়েই থাক।
পুলিশের এই তদন্তকারী কর্মকর্তা বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে আগে শাশুড়ি আত্মহত্যা করেছেন। এর আধাঘণ্টা পর পুত্রবধূর লাশ পাওয়া যায়। কিন্তু চিরকুটের ভাষ্য অনুযায়ী শাশুড়ির আগেই পুত্রবধূর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ করেনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন