মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

করোনায় বড় চ্যালেঞ্জ মাতৃস্বাস্থ্য সুরক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩০ আগস্ট, ২০২১, ৮:৫৮ পিএম

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা এমনিতেই বেশ নাজুক। করোনা মহামারি সে সঙ্কট আরো গভীর করে তুলেছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ভুগতে হচ্ছে গর্ভবতী মায়েদের। এখনো পর্যন্ত বড় ধরণের কোন গবেষণা না হলেও সংশ্লিষ্টরা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সময়ে মাতৃমৃত্যু ও নবজাতকের মৃত্যু বেড়েছে। মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর ক্ষেত্রে অল্প বয়সে গর্ভধারণ, অপুষ্টি এবং সেবা কেন্দ্র থেকে সেবা না গ্রহণকেই দায়ী মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর এই অবস্থা উত্তোরণে ভবিষ্যত বাবাকেই ভূমিকা পালন করতে হবে।

সোমবার (৩০ আগস্ট) ‘করোনাকালে মাতৃস্বাস্থ্য এবং বাবার দায়িত্ব’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞরা এই মত প্রকাশ করেন। ‘বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ ২০২১’ উপলক্ষে সোমবার ইউনিলিভার বাংলাদেশ (ইউবিএল) এবং বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএইচআরএফ) যৌথভাবে এই ওয়েবিনারের আয়োজন করে। বক্তাদের আলোচনায় প্রাধান্য পেয়েছে বাংলাদেশে মাতৃস্বাস্থ্যের বিভিন্ন ঝুঁকি, মাতৃত্বকালীন সময়ে সন্তানের বাবা ও পরিবারের দায়িত্ব, মাতৃদুগ্ধের গুরুত্ব এবং করোনাকালে প্রসূতিসেবার সঙ্কটগুলো।

বিএইচআরএফ’র সাধারণ সম্পাদক রাশেদ রাব্বির সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা শিশু হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. শফি আহমেদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গাইনী ও প্রসূতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেজাউল করিম কাজল। মাতৃস্বাস্থ্য বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মুরাদ আহমেদ। এছাড়াও ইউনিলিভার কনজুমার কেয়ার লিমিটেডের (ইউসিএল) করপোরেট অ্যাফেয়ার্স পার্টনারশিপস এন্ড কমিউনিকেশনের প্রধান শামীমা আক্তার, বিএইচআরএফের সভাপতি তৌফিক মারুফ বক্তব্য রাখেন।

ডা. মুরাদ আহমেদ বলেন, অল্প বয়সে বিয়ে মাতৃমৃত্যুর হারকে বাড়িয়ে দেয়। ১৯ বছরের আগেই ৫৯ শতাংশ মেয়ে গর্ভধারণ করে। এক তৃতীয়াংশ নারী খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। প্রতি ৫ জনে ৩ জন জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করলেও তাদের মধ্যে মাত্র ১ জন এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারে। ২৪ শতাংশ নারী একলামশিয়ায় মৃত্যু হয়। দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে মাতৃস্বাস্থ্য সমস্যার প্রতি আলোকপাত করে অধ্যাপক ডা. শফি আহমেদ বলেন, করোনালকডাউনের কারণে নিম্নআয়ের পরিবারগুলোতে মাতৃস্বাস্থ্য সমস্যা প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। পরিবারের উপর্জনকারী ব্যক্তি যেমন বাবারা কর্মহীন হওয়ায় তারা সন্তানের মায়ের যথাযথ যত্ম নিতে পারছেন না। মাতৃস্বাস্থ্যের গুরুত্বের বিষয়টি এই সময়ে আরো বেশি করে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। মা ও শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও বাবাকে ভাবতে হবে।

ডা. রেজাউল করিম কাজল বলেন, আমাদের দেশে প্রথমবার গর্ভধারণ করা অধিকাংশ মা-ই কিশোরী। মা হতে গিয়ে তাদের যে মৃত্যুঝুঁকিতে পড়তে হয় তা পরিবারের অন্য সদস্যরা ভাবেন না। প্রসবকালীন ঠিক সময়ে হাসপাতালে না নিয়ে যাওয়ার ফলে দেশে মাতৃমৃত্যুর ৫৪ শতাংশ ঘটে বাড়িতে। করোনাকালে মায়েদের সেবাকেন্দ্রে যাবার প্রতিবন্ধকতা আরো বেড়েছে। পরিবার ও সন্তানের বাবার সহযোগিতা ছাড়া এই সঙ্কট কাটিয়ে উঠা কঠিন। মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যের জন্য আমাদের এখন এক সামাজিক যুদ্ধে নামতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন