দৈবদুর্বিপাক বা দুর্যোগের কারণে কোনো এলাকার সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ করা সম্ভব না হলে বিদ্যমান সীমানায় নির্বাচন করা যাবে। এমন বিধান রেখে ‘জাতীয় সংসদের নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ বিল-২০২১’ সংসদে পাস হয়েছে। আইন বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি পাসের প্রস্তাব করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।
গতকাল শনিবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে বিলটি পাসে আগে বিলের ওপর বিরোধী দলের সদস্যদের আনা জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়। এসময় যাচাই-বাছাই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনাকালে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদ ও ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা নির্বাচনী ব্যবস্থা ও সরকারের কঠোর সমালোচনা করেন।
পাস হওয়া বিলে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ স্বাক্ষর করলেই তা কার্যকর হবে। এ আইন কার্যকর হলে ১৯৭৬ সালের ‘দ্য ডিলিমিটেশন অব কন্সটিটিউয়েন্সিস অর্ডিনেন্স’ রহিত হবে। গত ৩ জুন আইনমন্ত্রী বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন। পরে তা অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটির বৈঠকে আলোচনা শেষে বিলটি পাসের সুপারিশ করে সংসদে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
পাস হওয়া বিলে বিদ্যমান আইনের ৮ নম্বর ধারায় একটি উপধারা যুক্ত করা হয়েছে। সেখানে বলা আছে, দৈব-দুর্বিপাকে বা অন্য কোনো কারণে আঞ্চলিক সীমানা নির্ধারণ করা না গেলে বিদ্যমান সীমানার আলোকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ইসির সীমানা নির্ধারণের বিষয় নিয়ে দেশের কোনো আদালত বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন তোলা যাবে না বলে বিলের ৭ ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে।
বিদ্যমান আইনের ৮টি ধারার স্থলে নতুন আইনে ৯টি ধারার প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন ধারাটিতে আইনের অধীনে বিধি প্রণয়নের সুযোগ রাখা হয়েছে। বিদ্যমান আইনে বিধি প্রণয়নের সুযোগ নেই। বিদ্যমান আইনের ধারা-১-এ একটি নতুন উপধারার প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে আইনটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিলে আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণের কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে সংবিধানের ৬৫(২) অনুচ্ছেদে উল্লিখিত সংখ্যক সংসদ সদস্য নির্বাচিত করতে পুরো দেশকে সে সংখ্যক একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকায় বিভক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এক্ষেত্রে ভৌগলিক অখন্ডতা বজায় রাখা এবং আদমশুমারির ভিত্তিতে যতদূর সম্ভব বাস্তবভিত্তিক বণ্টনের কথা বলা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, প্রস্তাবিত বিলে সংবিধানের ৬৫(২) অনুচ্ছেদে উল্লিখিত সংখ্যক একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচন কমিশনের কার্যপদ্ধতি, ক্ষমতা অর্পণ ও কমিশনকে সহায়তা প্রদান এবং কমিশন কর্তৃক বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা প্রদান-সংক্রান্ত বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটি আইনে পরিণত হলে জাতীয় সংসনের একক আঞ্চলিক নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ কাজ সুচারুরূপে সম্পাদন করা সম্ভব হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন