শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যবসা বাণিজ্য

কেসিসিতে ডিজিটালাইজড হচ্ছে ট্রেড লাইসেন্স শাখা

প্রকাশের সময় : ৬ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এ.টি.এম. রফিক, খুলনা থেকে : খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) ট্রেড লাইসেন্স শাখা ডিজিটালাইজডকরণের কাজ চলছে। ২০১৮ সাল নাগাদ ব্যবসায়ীরা পাবেন ডিজিটাল ট্রেড লাইসেন্স কার্ড। এতে দূর হবে খুলনার ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি। বাড়বে কেসিসি’র আয়। জরিপে ট্রেড লাইসেন্স সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হচ্ছে।
কেসিসি সূত্রে জানা যায়, গত আগস্ট থেকে কেসিসি’র ট্রেড লাইসেন্স জরিপ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। খুলনা মহানগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে ৩৩ জন ইন্সপেক্টর এ কাজ করছেন। ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজটি শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে জরিপ সম্পন্ন না হওয়ার কারণে সময় আগামী ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
কেসিসি’র প্রধান রাজস্ব অফিসার ও দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা আরিফ নাজমুল হাসান বলেন, ইতোমধ্যে ২৮টি ওয়ার্ডে জরিপ কার্যক্রম শেষ হয়েছে। বাকি ৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে রয়েছে ৬, ২১ ও ২৩নং ওয়ার্ড। আগামী রোববার নাগাদ এ ৩টি ওয়ার্ডের জরিপ কাজ শেষ হবে। ট্রেড লাইসেন্স জরিপের (শুমারি) কাজে নির্ধারিত ফরম পূরণ করার মাধ্যমে জরিপকারীরা তথ্য সংগ্রহ করছেন। তারা পরে এ তথ্য প্রধান রাজস্ব অফিসারের কাছে জমা দিবেন।
জমাকৃত ফরমে প্রাপ্ত তথ্যাদি কম্পিউটারে সংযোজন করার পর তথ্য ভা-ার সমৃদ্ধ হবে।
তিনি আরও জানান, ২০১৫-১৬ অর্থ-বছরের হিসাব অনুযায়ী খুলনায় ২১ হাজার ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে। তিনজন কম্পিউটারম্যান ডাটা এন্ট্রি কাজ করছেন। এবার ট্রেড লাইন্সেস থেকে আয়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। জরিপ ও ডাটা এন্ট্রি কাজ শেষে অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে সংগৃহীত তথ্য যাচাই বাছাইয়ের কাজ। স্থায়ী কাঠামোর মধ্যে থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এ জরিপের আওতায় আসবে। তবে ফুটপাতের হকার্স, চা-পান বিক্রেতা জরিপের আওতায় আসবে না। প্রত্যেক কাউন্সিলরকে সংগৃহীত তথ্য যাচাইয়ের জন্য একটি খসড়া তালিকা দেয়া হবে। ওই খসড়া তালিকা ঠিক আছে কি না; সে ব্যাপারে মতামত দিবেন কাউন্সিলররা। কাউন্সিলরদের অনুমোদন পেলেই মূল কাজ শুরু করা হবে। ট্রেড লাইসেন্স বই পরিবর্তন হবে ডিসেম্বর মাসের পর। জালরোধ করার জন্য ক্যালেন্ডার বছর থেকে ট্রেড লাইসেন্স হিসেব শুরু হবে। ইতোমধ্যে নতুন করে ট্রেড লাইসেন্স বই ছাপানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। নতুন করে লাইসেন্স বই করার জন্য দামী কাগজের ১০টি নমুনা কপি সংগ্রহ করা হয়েছে। ফ্রান্সের কাগজের নমুনা কপি ইতোমধ্যে প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। সিল নকল থেকে রক্ষা করতে ব্যবহার করা হবে অ্যাম্বুস সিল। যা চোখে দেখা যাবে না তবে হাতের স্পর্শে বোঝা যাবে। ২০১৭ সাল থেকে নতুন বইয়ে ট্রেড লাইসেন্স করা হবে। এছাড়া থাকবে গোপন কোড নম্বর। যা মেয়র আর প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (সিআরও) জানবেন। আগামী বছর জানুয়ারি মাসে নতুন বইয়ে ট্রেড লাইসেন্স করা হবে। বাংলার পাশাপাশি ইংলিশ ভার্সনেও লাইসেন্স দেয়া হবে। ৫ হাজার বড় ব্যবসায়ীকে প্লাস্টিক কার্ডের আওতায় আনা হবে। এ কার্ড দেয়ার পর ইতিবাচক হলে বাকি ট্রেড লাইসেন্সধারীদেরকে প্লাস্টিক কার্ডের আওতায় আনা হবে। এ কার্ডের ভেতর চিফস নামের এক ধরনের পদার্থ থাকবে। যা স্ক্যানিং করলেই ট্রেড লাইসেন্সধারীর সকল তথ্য পাওয়া যাবে। এসব বিষয় চূড়ান্ত করার আগে কেসিসি বসবে চেম্বার অব কমার্সের নেতৃবৃন্দের সাথে। তাদের সাথে সমন্বয়ের পর বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হবে। এছাড়া ছবিযুক্ত কার্ড দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। তার সংখ্যা হবে প্রাথমিক পর্যায়ে ৫ হাজারের মত। এমন কি ছবিযুক্ত ট্রেড লাইসেন্স কার্ডধারীরা চাইলে একবার এসে পাঁচ বছরের জন্য লাইসেন্স নবায়ন করতে পারবেন।
কেসিসির রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কেসিসিতে লাইসেন্সধারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২১ সহ¯্রাধিক। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আদায় হয়েছে ৪ কোটি ৫৯ লাখ ৯৬ হাজার ৫৭ টাকা। আদায়ের হার ১০২.২২ ভাগ। নতুন তফসিল অনুযায়ী বর্ধিত রেটে লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন লাইসেন্স ইস্যুর কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক রাজস্ব আদায় হয়। ২০১৬-১৭ অর্থ-বছরের ট্রেড লাইসেন্স শাখায় বার্ষিক রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ কোটি টাকা। যা বিগত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ।
খালিশপুর পাওয়ার হাউজ গেটের সজল স্টুডিও মালিক জয়নুল আবেদীন জানান, গত দেড় মাস আগে তার দোকানের ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য জরিপের লোক এসেছিল। তারা তার পরিচয় ও দোকানের ঠিকানা নিয়ে গেছে।
রয়েল মোড়ের ক্রেস্টের দোকান ক্রেস্ট কর্নারের মালিক শাহ আলম জানান, গত ২৭ সেপ্টেম্বর তার দোকানের ট্রেড লাইসেন্স জরিপ করে গেছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)‘র খুলনা মহানগর কমিটির আহ্বায়ক আলহাজ লোকমান হাকিম বলেন, কেসিসির এনালগ ট্রেড লাইসেন্স পদ্ধতি ডিজিটাল যুগে প্রবেশ নিশ্চয়ই ভালো উদ্যোগ। তবে কোনোভাবেই যাতে ব্যবসায়ীরা হয়রানি না হয়, সে বিষয়টি কেসিসি কর্তৃপক্ষকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন