সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

দক্ষিনাঞ্চলের ১৪ লাখ ছাত্র ছাত্রীর স্বাস্থ্য নিরাপত্তায় দ্রুত ভেকসিন ও নিবিড় নজরদারীর তাগিদ

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৩:৩৮ পিএম

করোনা মহামারীকে পাশে রেখে সারা দেশের সাথে দক্ষিনাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমুহও রোববার থেকে খুলে দেয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তবে শিক্ষক মন্ডলী সহ উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের কতভাগ ছাত্রÑছাত্রীকে করোনা প্রতিষেধক ভেকসিনের আওয়তায় আনা সম্ভব হয়েছে সে তথ্য নেই স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিভাগের কারো কাছেই। গত ৭ ফেব্রুয়ারী থেকে দক্ষিনাঞ্চলের ৬ জেলাতেও করোনা ভেকসিন প্রদান শুরুর পরে কয়েক দফায় ইতোমধ্যে প্রথম ডোজের প্রায় ১২ লাখ এবং ৪ লাখ ১০ হাজার দ্বিতীয় ডোজের ভেকসিন প্রদান সম্পন্ন হয়েছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। দক্ষিনাঞ্চলের ৬ জেলার মোট জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি। কোন সল্পতা নেই বলে জানিয়ে প্রতিদিনই কোন না কেন ব্রান্ডের ভেকসিন দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন মেডিকেল স্টোরে আসছে বলেও জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

তবে ইতোমধ্যে ভেকসিন গ্রহনকারীদের মধ্যে কতজন ছাত্র-ছাত্রী বা শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন তার কোন পরিসংখ্যন পাওয়া যায়নি কোন তরফ থেকেই। প্রথমে ৫৫ বছর, পরে ৪০ বছর ও তদোর্ধ ব্যক্তিদের ভেকসিন প্রদান শুরু হলেও পরে তা ১৮ বছরে নামিয়ে এনে আবার ২৫ বছরে নির্ধারন করা হয়। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার প্রয়োজনে আবার ১৮ বছর থেকে ভেকসিন কার্যক্রম শুরু হলেও এখনো জাতীয় পরিচয় পত্র-এনআইডি ছাড়া ভেকসিনের রেজিষ্ট্রেশন হচ্ছে না। ফলে যে বিপুল সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী এখনো এনআইডি পায়নি বা আবেদন করেনি, তাদেরকে ভেকসিন-এর আওতায় আনার বিষয়টি সম্পূর্ণ অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।
৭ ফেব্রুয়ারী থেকে ভেকসিন কার্যক্রম শুরু হলেও জুলাই মাসের প্রথম থেকে বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মেডিকেল ছাত্রÑছাত্রীদের আলাদাভাবে ভেকসিন প্রদান শুরু হয়। পরবর্তিতে বরিশাল ও পটুয়াখালী বিশ^বিদ্যালযের ছাত্রÑছাত্রীদেরও ভেকসিনের আওতায় আনার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে এ দুটি বিশ^বিদ্যলয়ের প্রায় ৭০ ভাগ ছাত্রÑছাত্রী ভেকসিন গ্রহন করেছে বলে একাধীক সূত্রে বলা হলেও অন্যসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৮ বছর ও তদুর্র্ধের ছাত্রÑছাত্রী বা শিক্ষকমন্ডলীর বিষয়ে কেউ কিছু বলতে পারেছন না।
তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার লক্ষে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা সহ কিছু সিমিত উদ্যোগে ইতেমধ্যে শুরু হয়েছে। ১২ তারিখের আগেই সরকারী বিধি বিধান অনুযায়ী অবশিষ্ট সব কার্যক্রমও সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন একাধীক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগন।
দক্ষিনাঞ্চলের ৬ জেলায় ৬ হাজার ২৫১টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে করোনা মহামারীর পূর্বকালীন সময়ে ছাত্রÑছাত্রীর সংখ্যা ছিল ১০ লাাখ ৩২ হাজার ১৬২ জন। গড়ে প্রায় ১৬৫ জন করে ছাত্রÑছাত্রী রয়েছে এ বিপুল সংখ্যক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের ১ হাজার ৬৩৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২২৮টি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ১৬৭টি বিভিন্ন ধরনের মাদ্রাসায় বর্তমানে ছাত্রÑছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ২ লাখ ৮২ হাজার। এর বাইরে বরিশাল ও পটুয়াখালী বিশ^বিদ্যালয় ছাড়াও এ দুটি জেলায় মেডিকেল কলেজ ,বরিশাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ সহ ¯œতক ও ¯œাতক সম্মান পর্যায়ের আরো বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও লক্ষাধীক ছাত্রÑছাত্রী অধ্যায়নরত।
সব মিলিয়ে প্রায় ১৪ লাখ ছাত্রÑছাত্রী দক্ষিনাঞ্চলে অধ্যায়নরত থাকলেও তাদের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় বাদ দিলে প্রায় ৪ লাখ ছাত্রÑছাত্রীর স্বাস্থ্য নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে তা তদারকির তাগিদ দিয়েছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞগন। বিশেষকরে স্বাস্থ্য মন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী যতদ্রুত সম্ভব ১২ বছর ও তদুর্ধের শিক্ষার্থীদের ভেকসিনের আওতায় আনার বিষয়টি বাস্তবায়ন সহ ১৮ বছরের যেসব ছাত্রÑছাত্রী এখনো এনআইডি পায়নি,তাদের বিকল্প যে কোন ব্যবস্থায় ভেকসিনের আওতায় আনারও তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগন।
পাশপাশি সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিপূর্ণ স্বাস্থ্য বিবিধ অনুসরনে শিক্ষা বিভাগের বাইরে স্বাস্থ্য বিভাগ এবং জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের নিবিড় নজরদারীর বিকল্প নেই বলেও মনে করছেন একাধীক চিকিৎসা বিশেষজ্ঞগন।
এব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক ছাড়াও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক বৃন্দের সাথে আলাপ করা হলে সকলেই ‘সরকারী নির্দেশনা অনুযায়ী সব পদক্ষেপ নেয়া হবে’ বলে জানিয়েছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন