শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

৮৩৯ কোটি ২০ লাখ ৭৬ হাজার টাকার বাজেট ঘোষনা করেছে সিসিক

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৬:০০ পিএম | আপডেট : ৮:৪৮ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১

৮৩৯ কোটি ২০ লাখ ৭৬ হাজার টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক)। ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য আয় ও ব্যয় সমপরিমাণ ধরে এই বাজেট ঘোষণা করেছেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে নগরীর বালুচরস্থ একটি কনভেনশন হলে এই বাজেট ঘোষণা করেন সিসিক মেয়র আরিফ। ঘোষিত এ বাজেট সিসিকের ইতিহাসে সর্বোচ্চ পরিমাণের বাজেট। ঘোষিত হয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক)। বাজেট ঘোষণাকালে ‘নতুন সিলেট’ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিলেটের সকল মানুষের সহযোগিতায় করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা সহ বহুমুখী ঝুঁকি উপেক্ষা করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি উন্নয়ন অগ্রযাত্রা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই সিলেটে দলমত ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবাই এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে অতুলনীয় ভূমিকা রেখেছেন করোনা মোকাবিলায়। ঐতিহাসিক এই ভূমিকাই আমাদেরকে স্বপ্ন দেখাচ্ছে ‘নতুন সিলেট’ গড়ার।" এদিকে, ঘোষিত নতুন বাজেটে সমান দেখানো হয়েছে আয় ও ব্যয়ের পরিমাণ।
পেশকৃত বাজেটে উল্লেখযোগ্য আয়ের খাত দেখানো হয়েছে- হোল্ডিং ট্যাক্স ৪৪ কোটি ৯২ লাখ ৬৬ হাজার টাকা, স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের উপর কর ৮ কোটি ৬০ লাখ টাকা, ইমারত নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণের উপর কর ২ দুই কোটি টাকা, পেশা ব্যবসার উপর কর ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা, বিজ্ঞাপনের উপর কর ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা, বিভিন্ন মার্কেটের দোকান গ্রহীতার নাম পরিবর্তনের ফি ও নবায়ন ফিস বাবদ ৯০ লাখ টাকা, ঠিকাদারী তালিকাভুক্তি ও নবায়ন ফিস বাবদ ৩০ লাখ টাকা, বাস টার্মিনাল ইজারা বাবদ আয় ৫৫ লাখ টাকা, ট্রাক টার্মিনাল ইজারা বাবদ আয় ১৭ লাখ টাকা, খেয়াঘাট ইজারা বাবদ ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, সিটি কর্পোরেশনের সম্পত্তি ও দোকান ভাড়া বাবদ ১ কোটি টাকা, রোড রোলার ভাড়া বাবদ আয় ৬০ লাখ টাকা, রাস্তা কাটার ক্ষতিপূরণ বাবদ আয় ৫০ লাখ টাকা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা খাতে আয় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা, পানির সংযোগ লাইনের মাসিক চার্জ বাবদ ৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা, পানির লাইনের সংযোগ ও পুনঃসংযোগে ফি বাবদ ৮০ লাখ টাকা, নলকূপ স্থাপনের অনুমোদন ও নবায়ন ফি বাবদ ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। বাজেট বক্তৃতায় মেয়র আরিফ আশা প্রকাশ করে বলেন, নগরবাসী নিয়মিত হোল্ডিং ট্যাক্সসহ অন্যান্য বকেয়া পাওনা পরিশোধ করলে বাজেট বছরে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব খাতে সর্বমোট ৮২ কোটি ২৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা আয় হবে।

ব্যয়ের খাত দেখানো হয়েছে- সরকারি উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) খাতে ১০ কোটি টাকা, কোভিড-১৯ মোকাবেলা, ডেঙ্গু মোকাবেলা, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ও প্রচার উপ-খাতসহ সরকারি বিশেষ মঞ্জুরী খাতে ৩১ কোটি ৬০ লাখ টাকা, অন্যান্য প্রকল্প মঞ্জুরী বাবদ ১ কোটি টাকা, সিটি কর্পোরেশনের অবকাঠামো নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প ১০ কোটি টাকা, সিলেট মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও অবকাঠামো নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প খাতে ১৩০ কোটি টাকা, ২০১৮ সালের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা ড্রেন ও কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প খাতে ২৮ কোটি ৭২ লাখ টাকা, মহানগরীর নাগরিক সেবাবৃদ্ধির লক্ষ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়নের জন্য আধুনিক যান-যন্ত্রপাতি সরবরাহ শীর্ষক প্রকল্প খাতে ২৬ কোটি ৩৬ লক্ষ টাকা, নগর ভবনের ঊর্ধ্বমূখী সম্প্রসারণ প্রকল্প খাতে ২০ কোটি টাকা, দক্ষিণ সুরমা এলাকায় শেখ হাসিনা শিশু পার্কে অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প খাতে ২ কোটি টাকা, মহানগরীর যানজট নিরসন ও সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প খাতে ৫ কোটি টাকা, বিভিন্ন ছড়া খনন ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ প্রকল্প খাতে ১০ কোটি টাকা, সিটি কর্পোরেশন এসফল্ট প্লান্ট স্থাপন ও বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে জমি অধিগ্রহণ খাতে ৩০ কোটি টাকা, সিটি কর্পোশনের নিজস্ব ফিলিং স্টেশন স্থাপন খাতে ৫ কোটি টাকা, সিটি কর্পোরেশনের প্লাস্টিক রিসাইক্লিং প্লান্ট স্থাপন খাতে ৫ কোটি টাকা, কুমারপাড়পাড়া সিটি কর্পোরেশনের নগর মাতৃসদন ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার স্থাপন খাতে ৫ কোটি টাকা। এছাড়া লালমাটিয়া ডাম্পিং গ্রাউন্ড উন্নয়ন প্রকল্প খাতে ২০ কোটি টাকা, তোপখানা পানি শোধনাগারের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি ও বোতলজাত করে বিক্রয় প্রকল্প খাতে ৩০ কোটি টাকা, দক্ষিণ সুরমা বাস টার্মিনাল আধুনিকায়ন প্রকল্প ৩ কোটি টাকা, উৎপাদন নলকূপ স্থাপন খাতে ৫ কোটি টাকা, সুরমা নদীর উত্তর তীর ঘেষে সার্কিট হাউসের সম্মুখ হতে হযরত গাজী বুরহান উদ্দিন সড়ক পর্যন্ত রিটেইনিং ওয়াল এবং ওয়াকওয়েসহ রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প খাতে ২০ কোটি টাকা, মহানগরীতে যানজট নিরসনে ৪টি পার্কিং ব্যবস্থা নির্মাণ খাতে ৪ কোটি টাকা, সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৪টি গরুর হাট নির্মাণ খাতে ৪ কোটি টাকা, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৪টি জবাইখানা নির্মাণ খাতে ৪ কোটি টাকা, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৪টি খেলার মাঠ নির্মাণ খাতে ৪ কোটি টাকা, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন খাতে ২০ কোটি টাকা, সিটি কর্পোরেশন এলাকার মসজিদ, মন্দির, গির্জা, মাজার, কবরস্থান, শশ্মান ঘাট, ঈদগাহ উন্নয়নে ব্যয় দেখানো হয়েছে ১০ কোটি টাকা।
ব্যয়ের খাত হিসেবে ২৭টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলরগণের স্থায়ী অফিস স্থাপন প্রকল্প ২ কোটি টাকা, ভারতীয় অনুদানে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের উন্নত পরিবেশ ও শিক্ষার মান উন্নয়নে সিটি কর্পোরেশন এলাকার অবকাঠামো নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্প খাতে ৫ কোটি টাকা, এমজিএসপি প্রকল্পের আওতায় নির্মাণ ও পূর্ত কাজের পাওনাদী পরিশোধের জন্য বরাদ্দ বাবদ ৫ কোটি টাকা, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আরবান রেজিলেন্স প্রকল্পের আওতায় ইওসি (ঊঙঈ) নির্মাণ প্রকল্প ৫ লক্ষ টাকা, মহানগরীর সুয়ারেজ মাস্টার প্লানের ফিজিবিলিটি স্টাডিকরণ প্রকল্প ৫ কোটি টাকা, ৫০ এমএলডি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্টের জন্য ১৩.১৩ একর জমি অধিগ্রহণ ৫ কোটি টাকা, আরবান প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারি প্রকল্প খাতে ৫০ লক্ষ টাকা, নগরীর বস্তি সমূহের উন্নয়ন প্রকল্প খাতে ২ কোটি টাকা এবং সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব উন্নয়ন প্রকল্প খাতে মার্কেট নির্মাণ বাবদ প্রাপ্ত সালামী ও সিটি কপোরেশন আবাসিক প্রকল্পের নির্মাণ ব্যায় গ্রহণ বাবদ ব্যয় ধরা হয়েছে মোট ৪৭ কোটি টাকা। বাজেটে রাজস্ব খাতে ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে সর্বমোট ৮০ কোটি ৫৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এছাড়া পানি সরবরাহ শাখার সংস্থাপন ব্যয়সহ পানির লাইনের সংযোগ ব্যয়, পাম্প হাউজ, মেশিন, পাইপ লাইন মেরামতে ব্যয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১২ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। বাজেটে রাজস্ব খাতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ব্যয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে বাবদ ২৮ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। বাজেটকালে উপস্থিত ছিলেন সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী, সিসিক কাউন্সিলরবৃন্দ, সিসিকের কর্মকর্তাবৃন্দ, সাংবাদিকগণ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন